340038

আমার পরনের কাপড় খুলে শরী’রের স্পর্শকাতর স্থানে চুন লাগিয়ে দেয় তারা

(এক নারীকে অপ’হরণ করে মুক্তিপন আদায় ও চুল কে’টে মধ্যযু’গীয় কায়দায় নির্যা’তনের অভিযোগে ঝালকাঠি জেলা আওয়ামী লীগ সাংগঠনিক সম্পাদক শারমীন মৌসুমি কেকা, শহর বিএনপি সাধারণ সম্পাদক আনিসুর রহমান তাপুসহ ৬ জনের নামে ঝাল’কাঠি নারী ও শিশু নির্যা’তন দমন ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।

ভিকটিম পারভিন (৩০) নিজেই বাদী হয়ে বৃহস্পতিবার (১৭ সেপ্টেম্বর) দুপুরে এ অভিযোগ দায়ের করলে আদালতের বিচারক বিষয়টি আমলে নিয়ে সদর থানার ওসিকে এফআইআর ও ভিকটিমকে নিরা’পত্তা প্রদানের আদেশ দেন।

মামলার বর্ণনায় উল্লেখ করা হয়েছে, আনিসুর রহমান তাপু, শারমীন মৌসুমি কেকা, সেলিনা আক্তার লাকি, রাখি আক্তার, ফাতেমা শরীফ, আইরিন পারভিন এ্যানিসহ ৮/১০জনে গত ৩০আগস্ট রোববার রাত ৮টার দিকে জেলা পরিষদ ভবনের সামনের ভাড়া বাসায় ঢুকে জিম্মি করে।

গত ১০ জুলাই বোরহানউদ্দিনের সাথে দ্বিতীয় বিবাহে আবদ্ধ হওয়ার কারণে প্রথম স্ত্রী সেলিনা আক্তার লাকি ও তার ভাই আনিচুর রহমান তাপু আওয়ামীলীগ নেত্রী কেকা’র নির্দেশে সহযোগিরা বেধ’রক মার’ধর করতে থাকে।

একফাকে নগদ ২লাখ টাকা এবং প্রায় ২লাখ টাকা মূল্যের স্বর্ণালংকার লুটে নিয়ে সেখান থেকে পূর্বচাঁদকাঠি হোটেল হিলটনের নীচতলার একটি কক্ষে নিয়ে আটকে রাখে। গভীর রাতে আসা’মীরা একত্রিত হয়ে বে-ধরক মার’ধর করে। একটি কাচি আনিয়া মাথার চুলের কিছু অংশ কাটিয়া উল্লাস করে। আসামিরা মার’ধর করিয়া আমার পরনের কাপড় খুলে শরীরের স্পর্শ’কাতর স্থানে চুন লাগিয়ে দেয়।

এরপরে ১নং আসামী ভকিটিমের ভাইকে ফোনে অপ’হরণ করে পূর্বচাঁদকাঠি হিলটন হোটেলের নীচতলায় আ’টকে রাখার কথা বলে ২লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবী করে।

৩১ আগস্ট সোমবার দুপুর ১২টার মধ্যে ২লাখ টাকা নগদ মুক্তিপন দিয়া তাকে ছাড়িয়ে না নিলে খু’ন করে লা’শ নদীতে ভাসাইয়া দেয়ার হুমকি দেয়। তাপু তার যৌ’নকামনা চরিতার্থ করার জন্য আমার শরীরের বিভিন্ন স্পর্শকাতর স্থানে হাত দেয়। গভীর রাতে সকল আসা’মীরা আমাকে অমানুসিক নির্যা’তন করে বিভিন্ন কাগজপত্রে জোর করে সহি স্বাক্ষর নেয় বলেও অভিযোগ পারভিনের।

স্বাক্ষর দিতে না চাইলে গলায় ওড়না পেচিয়ে শ্বাসরোধ করে হ’ত্যার চেষ্টা করায় জীবন বাঁচাতে বিভিন্ন কাগজে স্বাক্ষর করিতে বাধ্য হন। রোববার রাত থেকে সোমবার দুপুর ২টা পর্যন্ত একটি কক্ষে তালাবদ্ধ করে রেখে অমা’নসিক নির্মম নির্যা’তন করতে থাকে।

২টার দিকে ভাই নুরুজ্জামান এসে অবস্থা দেখে হতবিহব্বল হয়ে নগদ দুই লক্ষ টাকা দিয়ে জীবন ভিক্ষা চাইলে তালা খুলে দিয়ে হুমকি দিয়ে ভাইকে বলে ‘আজ তোর বোনের জীবন ভিক্ষা দিলাম। ভবিষ্যতে যদি ও বোরহানের সাথে সম্পর্ক রাখার চেষ্টা করো তাহলে ওকে (বোরহান) এবং তোকে (পারভিন) জীবনের তরে শেষ করিয়া ফেলিব।

এখন এখান থেকে তোর বোনকে নিয়া গ্রামের বাড়ীতে চলিয়া যাবি এবং হাসপাতালে বা কোন ডাক্তারের কাছে যাবিনা ও কাউকে কিছু বলবি না। থানায় যাবি না।

কাউকে কিছু বললে বা মা’মলা মোকদ্দমা করলে তোদের গ্রামে যাইয়া বাড়ীঘরে আ’গুন ধরিয়ে দেব।’ গুরুতর অসুস্থাবস্থায় একটি ফার্মেসী থেকে ওষুধ নিয়ে খাইয়ে কিছুটা সুস্থ হলে গত ৯ সেপ্টেম্বর থানায় গেলে মা’মলা না নিয়ে আদালতে যাবার পরামর্শ দেয়।

বাদী পারভিন জানান, আওয়ামী লীগ নেত্রী কেকা তার সহযোগীদের এবং বিএনপি নেতা তাপু ও তার বোন লাকি আমার উপ যে অমা’নবিক নির্মম নির্যা’তন চালিয়েছে আমি তার সুষ্ঠ বিচার চাই।

বাদীর আইনজীবী মো. শফিকুল ইসলাম জানান, পারভিন নির্যা’তিত হয়ে হয়ে আমার কাছে আইনী পরামর্শের জন্য আসেন। তার কাছ থেকে যাবতীয় ঘটনার বর্ণনা শুনে তাকে আইনের আশ্রয় নেয়ার পরামর্শ ও সহযোগিতার আশ্বাস দেই।

তার দেয়া বর্ণনা অনুযায়ী তাকে নিয়ে আদালতে হাজির করলে আদালত বিষয়টি আ’মলে নিয়ে সদর থানার ওসিকে এফআইআর এবং ভিকটিমকে নিরাপত্তা দেয়ার নির্দেশ দেন।

সদর থানার অফিসার ইন চার্জ (ওসি) খলিলুর রহমান জানান, আমরা এখন পর্যন্ত আদালতের কোন আদেশ পাইনি। আদেশ যথাযথ মাধ্যমে আমাদের কাছে আসলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।

ad

পাঠকের মতামত