339617

ট্রেনে যাওয়া যাবে সুন্দরবন

বিশ্বের বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ বন সুন্দরবন। যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো না থাকায় সুন্দবনের অপরূপ সৌন্দর্য উপভোগ করতে গিয়ে পর্যটকদের পড়তে হয় নানা ভোগান্তিতে। ফলে পর্যটন এরিয়া হিসেবে এর ব্যাপ্তি বাড়ছে না। ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও পরিবার পরিজন নিয়ে সুন্দরবনে যেতে পারেন না অনেকেই। বিদেশি পর্যটকরাও যোগাযোগ ব্যবস্থার কারণে এদিকে খুব একটা যান না। এর ফলে সরকার পর্যটনখাত থেকে পর্যাপ্ত রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে প্রতি বছর।

সুন্দরবনকে পর্যটন এরিয়া হিসেবে গড়ে তুলতে সরকার এবার রেললাইন নির্মাণের প্রকল্প হাতে নিয়েছে। এর ফলে ট্রেনে চড়েই চলে যাওয়া যাবে এ সুন্দরবনের কাছাকাছি। প্রকল্পের অধীনে যশোরের নাভারন থেকে সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার মুন্সীগঞ্জ পর্যন্ত রেলপথ নির্মাণ করা হবে। মুন্সীগঞ্জ হচ্ছে সুন্দরবনেরই একটি পয়েন্ট। মুন্সীগঞ্জের চুনা নদীর ওপারেই গভীর বনাঞ্চল। এর মাধ্যমে রেল নেটওয়ার্কের সঙ্গে যুক্ত হবে বিশ্বের সর্ববৃহৎ ম্যানগ্রোভ বনভূমি।

জানা গেছে, প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য বিশাল অংকের অর্থ প্রয়োজন। সে কারণে চীনের কাছে চাওয়া হয়েছে ঋণ। ‘কন্সট্রাকশন অব নিউ বিজি ট্র্যাক ফর্ম নাভারন টু সাতক্ষীরা’ প্রকল্পের আওতায় ১ হাজার ৩২৯ কোটি ৭৯ লাখ টাকা চীনা ঋণের আশা করা হচ্ছে। প্রকল্পের মোট প্রাক্কলিত ব্যয় ধরা হয়েছে ১ হাজার ৬৬২ কোটি ২৪ লাখ টাকা। এর মধ্যে সরকারি অর্থায়ন ৩৩২ কোটি ৪৪ লাখ টাকা। চলতি সময় থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত মেয়াদে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হবে। নাভারন থেকে মুন্সীগঞ্জ গ্যারেজ পর্যন্ত রেলপথের মোট দৈর্ঘ্য হবে ৯৮ দশমিক ৪২ কিলোমিটার।

রেলপথ মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, প্রকল্পটি বাস্তবায়নের ফলে ট্রেনে চড়ে যাওয়া যাবে সুন্দরবনের খুব কাছাকাছি মুন্সীগঞ্জ পয়েন্টে। সেখান থেকে একটা নদী পাড়ি দিলেই মূল সুন্দরবন। সুন্দরবনের উদ্ভিদ ও প্রাণী বৈচিত্রের কথা চিন্তা করেই ১০ কিলোমিটার দূরত্ব পর্যন্ত ট্রেন যাবে। নতুন রেলপথ নির্মাণের ফলে সাতক্ষীরা জেলায় উন্নয়নের ছোঁয়া লাগবে। নাভারন থেকে মুন্সীগঞ্জ পর্যন্ত থাকবে ৮টি স্টেশন। এগুলো হলো- নাভারন, বাগআচড়া, কলারোয়া, সাতক্ষীরা, পারুলিয়া, কালিগঞ্জ, শ্যামনগর ও মুন্সীগঞ্জ। ব্রডগেজের এ রেললাইনের যাত্রীবাহী ট্রেনের গতিবেগ হবে ঘণ্টায় ১২০ কিলোমিটার। তবে সাধারণত পণ্যবাহী ট্রেন ঘণ্টায় ৮০ কিলোমিটার বেগে চলতে পারবে।

রেলপথ মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম-প্রধান (পরিকল্পনা ) আ.ন.ম. আজিজুল হক গণমাধ্যমকে জানান, প্রকল্পের কাজ একেবারে প্রাথমিক অবস্থায় আছে। যশোরের নাভারণ থেকে সাতক্ষীরা হয়ে মুন্সীগঞ্জ পর্যন্ত রেললাইন নির্মাণ করা গেলে অর্থনৈতিকভাবে এলাকাগুলো শক্তিশালী হবে। পাশাপাশি নতুন রেলপথ দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। রেলপথটি নির্মাণে চীনসহ কয়েকটি উন্নয়ন সহযোগী খোঁজা হচ্ছে। সুবিধা মতো যার সঙ্গে মিলবে তাকেই এই প্রকল্পের উন্নয়ন সহযোগী হিসেবে বেছে নেওয়া হবে।

ad

পাঠকের মতামত