334777

তিন দিনের সন্তানকে গ’লাটি’পে খু’ন করেন মা!

ডেস্ক রিপোর্ট।। চরম দারিদ্র। বড় ছেলেকে পেটভরা খাবারটুকু তুলে দিতে পারেন না। আর সেই হ’তাশা থেকেই তিন দিনের কন্যা সন্তানকে গ’লাটি’পে খু’ন করলেন মা! ঘটনার প্রায় ৬ মাস পরে এই শিশু খু’নের ঘটনায় অ’ভিযু’ক্ত মাকে গ্রে’প্তার করেছে কলকাতা পুলিশ।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম আনন্দবাজারের প্রতিবেদনে বলা হয়, গত ৫ ফেব্রুয়ারি রাতে নিথর হয়ে যাওয়া তিন দিনের শিশুকন্যাকে নিয়ে বাইপাসের ধারের একটি বেসরকারি নার্সিংহোমে হাজির হন ভিআইপি নগর জাগরণী কলোনির বাসিন্দা সোনিয়া সেন। তিনি দাবি করেন, শিশুটিকে দুধ খাওয়ানোর পরেই নিস্তেজ হয়ে পড়ে। তারপরেই তিনি হাসপাতালে নিয়ে আসেন। চিকিৎসকেরা ওই শিশুকন্যাকে মৃ’ত বলে ঘোষণা করেন। কিন্তু গোটা ঘটনায় তাদের সন্দেহ হওয়ায় তাঁরা খবর দেন আনন্দপুর থানায়।

পরের দিন পুলিশ একটি অস্বাভাবিক মৃ’ত্যু’র মা’মলা নথিভুক্ত করে এবং শিশুকন্যার দেহটি পাঠানো হয় ম’য়নাত’দন্তে। তবে তিন দিনের শিশুর দেহের ম’য়নাত’দন্ত করে প্রথমে কোনো সিদ্ধান্তে আসতে পারছিলেন না অটোপসি সার্জেন। ম’য়নাত’দন্তের রিপোর্ট অ’মীমাং’সিত ছিল।

এক ত’দন্তকা’রীর কথায়, ‘শিশুটির দেহে ন’খের দাগও ছিল। অনেক রকম সম্ভাবনা খতিয়ে দেখতে শুরু করি আমরা।’ শেষ পর্যন্ত একাধিকবার ঘটনাস্থল, অর্থাৎ শিশুটির বাড়ি, আ’ঘা’তের ধরন, বিভিন্ন রকম পারিপার্শ্বিক তথ্যপ্রমাণ দেখে গত ২৪ জুলাই চিকিৎসকেরা ম’য়নাত’দন্তের চূড়ান্ত রিপোর্টে বলেন, শিশুটিকে গ’লা’টিপে শ্বাসরোধ করে খু’ন করা হয়েছে।

খু’ন প্রমাণিত হওয়ার পর এবার আততায়ী ধরার পালা। সোনিয়ার কাছ থেকে বারবার ঘটনার বিবরণ শোনেন ত’দন্তকা’রীরা। দেখা যায়, শিশুটি ওই দিন সন্ধ্যায় তার মা আর দেড় বছরের দাদার সঙ্গে ছিল। অন্য কেউ ছিল না বাড়িতে। অন্য কেউ আসারও কোনো সম্ভাবনা দেখেননি ত’দন্ত’কারীরা। সেখান থেকে প্রথমে সন্দেহ করা হয় শিশুটির মা সোনিয়াকে। কিন্তু মা কেন খু’ন করবে সদ্যোজাতকে? সেই প্রশ্নের উত্তর মিলছিল না। এক এক সময়ে ত’দন্তকা’রীদের ধারণা হয়, হয়তো দেড় বছরের দাদাই খেলতে খেলতে কোনও ভাবে বোনের শ্বাসরোধ করেছে।

এক ত’দন্ত’কারী বলেন, ‘মা’মলার ‘ত’দন্ত’কারী আধিকারিক অরিন্দম সরকারকে ত’দন্তে সহযোগিতা করেন গো’য়েন্দাবিভাগের হোমিসাইড শাখার আধিকারিকরা। তারা প্রাক্তন কয়েকজন ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞের পরামর্শও নেন। শিশুর দেহে যে নখের দাগ পাওয়া গিয়েছিল তার সঙ্গে ফরেনসিক পরীক্ষা করে মেলানো হয় শিশুর দাদার নখ। কিন্তু তা মেলেনি।’

অন্যদিকে, সোনিয়ার কথায় একের পর এক অসঙ্গতি খুঁজে পান ত’দন্ত’কারীরা। সোনিয়া দাবি করেছিলেন, শিশুকে দুধ খাওয়ানোর পরেই সে নিস্তেজ হয়ে পড়ে। তখনই তাকে হাসপাতালে নিয়ে যান তিনি। অথচ ম’য়নাত’দন্তে দেখা যায়, শিশুর পেটে খাবারের যে অবশিষ্টাংশ রয়েছে, তা মৃ’ত্যু’র অনেক আগের। এ সমস্ত অ’সঙ্গতির উল্লেখ করে জে’রা করতে করতে শেষে রোববার রাতে ভে’ঙে পড়েন সোনিয়া।

তদ’ন্তে জানা গেছে, সোনিয়ার স্বামী প্রভাস বারুই কলকাতা লেদার কমপ্লেক্সে চামড়ার ব্যাগ তৈরি করেন। প্রথম সন্তানের জন্ম হওয়ার পর থেকেই অন্য এক নারীর সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি হয় প্রভাসের।

পুলিশ জানায়, স্ত্রী ও সন্তানের কোনো খেয়ালই রাখতেন না প্রভাস। প্রচণ্ড অর্থকষ্টে পড়়েন সোনিয়া। জেরায় ত’দন্তকা’রীদের সোনিয়া জানিয়েছেন, অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় একটি বাড়িতে পরিচারিকার কাজ করে কোনোমতে দেড় বছরের ছেলের খাবার জোগাড় করতেন তিনি। কিন্তু সেই কাজও বন্ধ হয়ে যায়। তার মধ্যেই জন্ম হয় কন্যাসন্তানের। ওই শিশুর ভরণপোষণ কী করে হবে, সে ব্যাপারে হতাশা তৈরি হয় তার। সেই হতাশা থেকেই গ’লাটি’পে খু’ন করেন শিশুকন্যাকে। পুলিশ সোনিয়ার এই বয়ান খতিয়ে দেখছে।

ad

পাঠকের মতামত