334783

কোরআনে বর্ণিত সেই হুদহুদ পাখি হজরত সুলাইমান (আ.) ব্যবহার করতেন রাষ্ট্রীয় কাজে

ধর্মবার্তা।। পৃথিবীতে বহু প্রজাতির পাখি রয়েছে। তার মধ্যে একটি পাখি হলো হুদহুদ বা কাঠকুড়ালি। এই পাখির বৈজ্ঞানিক নাম উপুপা এপপস। বাংলাদেশের একটি বিরল প্রজাতির পাখি এটি। তবে এশিয়া ও ইউরোপে এই পাখি প্রচুর দেখা যায়। এর অনেকগুলো উপপ্রজাতি রয়েছে। সেইন্ট হেলেনা প্রজাতিটি সম্পূর্ণরূপে বিলুপ্ত হয়েছে। এর অন্যান্য নাম হুদহুদ, কাঠকুড়ালি ও মোহনচূড়া ইত্যাদি।

এই পাখিটির নাম ‘মোহনচূড়া’ দিয়েছেন কথাসাহিত্যিক বনফুল। হুদহুদ পাখি দেখতে অত্যন্ত সুন্দর। এরা দৈর্ঘ্যে প্রায় ২৫ থেকে ৩২ সে.মি. পর্যন্ত লম্বা হয়। সম্পূর্ণ পাখা মেলা অবস্থায় এদের দৈর্ঘ্য দাঁড়ায় ৪৪ থেকে ৪৮ সে.মি. পর্যন্ত। এদের ওজন ৬৫ গ্রামের চেয়ে কমবেশি হয়ে থাকে। ছেলে ও মেয়ে পাখির চেহারা একই ধরনের। শরীর বাদামি রঙের, পিঠ, ডানা ও লেজে জেব্রার মতো ডোরাকাটা সাদা-কালো দাগ আছে। মুখ, গলা ও বুক কমলা-পীতাভ বা লালচে-কমলা।

এই পাখির মাথায় খুব সুন্দর একটা ঝুঁ’টি আছে। ঝুঁ’টির হলদে বাদামি পালকের মাথাটা কালো। উ’ত্তেজিত হয়ে রে’গে গেলে এবং প্রজনন মৌসুমে পাখিটির ঝুঁ’টি প্রসারিত করে। প্রজনন মৌসুমে পুরুষ পাখি ঝুঁ’টি ফুলের মতো মেলে ধরে সঙ্গীকে আকৃষ্ট করার চেষ্টা করে। তখন দূর থেকে মনে হয় মাথার ওপর ফুল ফুটে আছে। এর ঠোঁট দীঘল, কিছুটা বক্র এবং রং কালচে। অপেক্ষাকৃত লম্বা ও কাস্তের মতো কিছুটা বাঁকা। নরম মাটির মধ্যে ঠোঁট গুঁ’জে খাদ্য খুঁ’জে বেড়ায়। শুঁয়োপোকা, কেঁচো, ফড়িং, উঁইপোকা, ঝিঁঝি পোকাসহ বিভিন্ন ধরনের পোকামাকড় খায়।

হুদহুদ নির্জন নদীর পাড়, আবাদি ও পতিত জমি, খোলা শুকনো মাঠ প্রভৃতি স্থানে একাকী বা জোড়ায় বিচরণ করে। এদের গোসল করার পদ্ধতিও বেশ ভিন্ন। সাধারণত এরা পানিতেই গোসল সেরে নেয়। তবে নির্জন জমাটবদ্ধ পানির উৎস খুঁজে না পেলে জনহীন রাস্তার বালিই হয়ে ওঠে গোসলের জলাশয়। ধুলোবালি গায়ে ছড়িয়ে গোসলের কাজটি দ্রুতই সেরে নেয় তারা। এপ্রিল থেকে জুন মাস পর্যন্ত এদের প্রজনন ঋতু। একেকটি পাখি তখন পাঁচ থেকে সাতটি ডিম দেয়। ডিমগুলোর রং নীল। মেয়ে পাখির চেয়ে পুরুষ পাখি অধিক সময় ডিমে তা দেয়। ১৫ থেকে ১৭ দিন পর ডিম থেকে ছানা বের হয়। ডিম ফুটে বাচ্চা হওয়ার পর পুরুষ এবং স্ত্রী উভয় পাখিই বাচ্চাদেরকে খাওয়ানো এবং লালন পালনে ব্যস্ত থাকে।

ad

পাঠকের মতামত