330630

বাবা বলতেন, ডাক্তার হয়ে মানুষের সেবা করতে হবে: ডা. ফারহানা

নিউজ ডেস্ক।। ‘বাবা ছিলেন সমাজসেবক, সংগঠক, ইউপি চেয়ারম্যান এবং উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি। ছোটবেলা থেকেই বাবার সঙ্গে স্কুলে যেতেন, তখন থেকে বলতেন- আমার মা হবে ডাক্তার। আমার শিকলবাহা এলাকায় হবে একটি হাসপাতাল। সেখানে বিনা মূল্যে সবাই পাবে সেবা। তখন থেকেই ইচ্ছা জাগল যে বড় হয়ে ডাক্তার হব। বাবার স্বপ্ন পূরণ করব, তাই নিজের জীবনের গতিপথ ঠিক করে নিয়েছিলাম- বড় হয়ে আমি ডাক্তার হব আর বাবার মতো মানুষের সেবা করব।’

আজ বুধবার বিকেলে কথাগুলো বলছিলেন চট্টগ্রামের কর্ণফুলী উপজেলার শিকলবাহা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামা লীগের আবুল কালাম চৌধুরী বকুলের একমাত্র কন্যা ডা. ফারহানা মমতাজ রানু।

ডা. ফারহানা মমতাজ রানু মাধ্যমিক দিয়েছেন সেন্ট স্কলাস্টিকা গার্লস হাই স্কুল থেকে উচ্চ মাধ্যমিক ইসলামিয়া বিশ্ববিদ্যালয় কলেজে এবং পড়ছেন ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি চট্টগ্রামে। চেম্বারও করেন সেখানে। তার পিতা কর্ণফুলী উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও শিকলবাহা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ছিলেন। ৫৮ বছর বয়সে স্ত্রী, এক ছেলে, এক মেয়েসহ অসংখ্য আত্মীয়-স্বজন রেখে গত ১৭ জুন বুধবার চট্টগ্রাম নগরীর একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থতায় ভুগছিলেন। উন্নত চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরেও নেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু করোনা পরিস্থিতিতে তা আর হয়ে ওঠেনি। দেশের করোনা পরিস্থিতিতে বকুল বাংলোতে বিনা মূল্যে নিয়মিত রোগী দেখছেন তিনি। এখানে প্রতিদিন এ ইউনিয়ন ছাড়াও আসছে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের মানুষ সেবা নিতে। যেকোনো মুহূর্তে দিচ্ছেন মুঠোফোনে পরামর্শও।

ডা. ফারহানা মমতাজ রানু জানান, আমার বাবা হচ্ছে সেই প্রদীপ, যার আলোতে আমি আলোকিত। বাবার স্বপ্ন পূরণে আমার ডাক্তার হওয়া। তিনি সব সময় বলতেন, আমার এলাকার মানুষ হচ্ছে আমার নিঃশ্বাস, আমার অক্সিজেন। আর আমারও আশা-ভরসা সবই ছিল ওনাকে নিয়ে। আমার কোনো কিছুই তিনি অপূরণ রাখেননি। যখন যা চেয়েছি সেটাই এনে দিয়েছেন। ওনার আত্মবিশ্বাস আর ভালোবাসার সবটুকু জুড়ে ছিলাম শুধু আমি। হারিয়ে ফেলার পর বুঝছি কি হারিয়ে ফেলছি। বাবার স্বপ্ন যেন কোথাও হারিয়ে না যায়, সে জন্য ছুটে এসেছি নিজ গ্রামে। গ্রামের মানুষদের বাবার মতো সেবা করতে, তাদের পাশে দাঁড়াতে।

তিনি আরো জানান, এখানে আসার পর মানুষের ভালোবাসায় আমি মুগ্ধ হয়ে গেছি। যে ভালোবাসাই আমার বাবা মুগ্ধ হয়েছিলেন, তাইতো বাবা শিকলবাহার মানুষকে এত ভালোবাসতেন।

তিনি বলেন, ডাক্তারি পেশাটার প্রতি অন্য রকম ভালোবাসা জন্ম নিয়েছিল বাবার কারণে। তিনি সব সময় বলতেন, আমি চাই আমার মেয়ে বড় ডাক্তার হবে, মানুষের সেবা করবে। আমাকে নিয়ে চিন্তা কোরো না, আমি ঠিক হয়ে যাব। তবে বাবার শেষ কথাগুলো মনে গেঁথে গিয়েছিল। ডাক্তার হতে হবে, মানুষের সেবা করতে হবে। ‘কখনো যদি হতাশা আঁকড়ে ধরে, তখন বাবার কথা স্মরণ করি, ক্লান্তি দূর হয়ে যায়, অদ্ভুত শক্তি এসে জড়ো হয় মনের ভেতর। নিজের কাজটাকে প্রচণ্ড ভালোবাসি, এখানে আসা রোগীদের সঙ্গে নিজের পরিবারের সদস্যদের মতোই ব্যবহার করি। মানুষগুলোই যেন আমার প্রিয়জন।

করোনা দিন দিন আরো ভয়ংকর রূপ ধারণ করছে দেশে। জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব ঠেকাতে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করছেন। আশা করছি, এ আঁধার কেটে যাবে ইনশাআল্লাহ। দেশের এই কঠিন সময়ে মানুষকে সচেতন করতে সরকারের পাশাপাশি এগিয়ে আসতে হবে আপনাকে, আমাকে- সবাইকে। কালের কণ্ঠ।

ad

পাঠকের মতামত