330157

মুসলিমদের ম’রদেহ পোড়াচ্ছে শ্রীলঙ্কা

নিউজ ডেস্ক।। ‘ঘর থেকে আমাদের বের করে দিয়ে সারা বাড়ি স্প্রে করে তারা। আমরা সবাই ভয়ে ছিলাম, আমাদের কিছু জানানো হচ্ছিল না। তিন মাসের বাচ্চাটিকেও পরীক্ষা করা হয় এবং আমাদের কুকুরের মতো টেনে কোয়ারেন্টাইন সেন্টারে নিয়ে যাওয়া হয়।’

কথাগুলো শ্রীলঙ্কার রাজধানী কলম্বোর বাসিন্দা ফাতিমা রিনোজার স্বামী মোহাম্মদ শফিকের। সম্প্রতি করোনায় আ’ক্রান্ত হয়েছে মৃ’ত্যু হয়েছে ফাতিমার। করোনায় আ’ক্রান্ত হয়ে ফাতিমা চিকিৎসা, নিজেদের কোয়ারেন্টাইনে থাকার ও ফাতিমার মৃ’ত্যুর অভিজ্ঞাই তুলে ধরেন শফিক।

গত ৪ মে করোনাভাইরাসে আ’ক্রান্ত সন্দেহে হাসপাতালে ভর্তি করা হয় ৪৪ বছর বয়স্ক ফাতিমাকে।

ফাতিমার স্বামী মোহাম্মদ শফিক জানান, তার স্ত্রীকে যেদিন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়, সেদিনই তাদের বাড়িতে আসে কর্তৃপক্ষ। পুলিশ ও মিলিটারির পাশাপাশি সরকারি কর্মকর্তারা আসেন। সারা রাত রেখে পরদিনই ছেড়ে দেয় এবং আমাদের দুই সপ্তাহ কোয়ারেন্টাইনে থাকতে বলা হয়। সেসময় আমরা জানতে পারি, হাসপাতালে মা’রা গেছে ফাতিমা।

ফাতিমার ম’রদেহ শ’নাক্ত করতে হাসপাতালে যেতে চেয়েছিলেন তার প্রাপ্তবয়স্ক ছেলে। কিন্তু তাকে জানানো হয়, করোনার উপসর্গ নিয়ে মৃ’ত্যু হওয়ায় মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে না। এর বদলে জো’র করে ম’রদেহ পোড়ানোর অনুমতিপত্রে ছেলেটির সই নেয়া হয় বলে জানান শফিক।

ফাতিমার পরিবারসহ শ্রীলঙ্কার মুসলিম সম্প্রদায়ের দাবি, করোনায় মৃ’তদের কবর দেয়া গেলেও কর্তৃপক্ষ জোর করে মুসলিমদের ম’রদেহ পু’ড়িয়ে তাদের অধিকার নষ্ট করছে।

তাদের দাবি, গত বছরের এপ্রিলে কলম্বোর একাধিক চার্চ ও হোটেল ভ’য়াবহ স’ন্ত্রাসী হা’মলার পর থেকেই মুসলিমদের ওপর নি’পীড়ন বেড়ে গেছে। শ্রীলঙ্কায় সংখ্যালঘু মুসলিম নি’পীড়নের এটা নতুন উদাহরণ।

গত ৩১ মার্চ দেশটিতে করোনায় প্রথম মুসলিমের মৃ’ত্যুর পর স্থানীয় কয়েকটি মিডিয়া প্রা’ণঘা’তী এই ভাইরাস ছড়ানোর জন্যে সরাসরি মুসলিম সম্প্রদায়ের ওপরই দোষ চাপাচ্ছে। যদিও শ্রীলঙ্কায় এ পর্যন্ত করোনায় মাত্র ১১ জন মা’রা গেছেন এবং মৃ’ত সবার ম’রদেহই পো’ড়ানো হয়েছে।

করোনায় মৃ’তদের ম’র’দেহ কবর দিলে তা ভূগর্ভস্থ পানিকে দূষিত করতে পারে এমন দাবি করে শ্রীলঙ্কান সরকারের প্রধান মহামারি বিশেষজ্ঞ ডা. সুগাথ সামারাভিরা জানান, করোনাভাইরাসে আ’ক্রা’ন্তসহ যারা সন্দেহজনকভাবে (উপসর্গসহ) মা’রা গেছেন, তাদের সবার ম’রদেহই পোড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।

এদিকে, সরকারের এমন নীতির বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নিয়ে প্রশ্ন তুলে শ্রীলঙ্কা মুসলিম কংগ্রেস পার্টির জ্যেষ্ঠ নেতা ও সাবেক মন্ত্রী আলি জাহির মাওলানা বলেন, করোনায় মৃ’তদের কবর দেয়া জনস্বাস্থ্যের জন্য ক্ষ’তিকর- এর উপযুক্ত প্রমাণ দিলে সরকারের এমন সিদ্ধান্ত মেনে নেবে মুসলিম সম্প্রদায়।

সম্প্রতি, মুসলিমদের ম’রদেহ পোড়ানোর বি’রুদ্ধে শ্রীলঙ্কার সুপ্রিম কোর্টে একটি পিটিশন দাখিল করা হয়েছে। আগামী ১৩ জুলাই এর শুনানি হওয়ার কথা রয়েছে।

ad

পাঠকের মতামত