315801

করোনা টেস্টে যেভাবে এগিয়ে আছে এই দেশগুলো

নিউজ ডেস্ক।। করোনাভাইরাসে আক্রান্ত শনাক্তের জন্য প্রয়োজন পরীক্ষা। এর জন্য কিট সংগ্রহে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে দেশগুলো। কিট সংকটে পড়ে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যসহ অনেক দেশের সরকার সমালোচনার শিকার হয়েছে। এর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে তৈরি কোনো কিট বাইরে যেতে পারবে না বলে ঘোষণা দিয়েছে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এতে জার্মানির অর্ডার করা কিট ছিনিয়ে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে মার্কিন কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে।

চীন : এই শতাব্দীর শুরুতে সার্সধর্মী ভাইরাসের অভিজ্ঞতার কারণে করোনা টেস্টে এগিয়ে ছিল চীন। মার্চের শেষে এসে তারা ৩ লাখ ২০ হাজার টেস্ট করে ফেলে। দেশটির হুবেই প্রদেশের উহান শহর থেকে করোনাভাইরাসের উৎপত্তি। শহরটিতে লকডাউনের পরপরই ২৪ জানুয়ারি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) ওয়েবসাইটে চীনের করোনা টেস্ট নিয়ে বিস্তারিত প্রকাশ করা হয়।

ডিসেম্বরের শেষেই কভিড-১৯ ছড়িয়ে পড়ে। অল্প দিনের মধ্যে চীনজুড়ে আক্রান্তদের শনাক্ত করা শুরু দেশটির রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কেন্দ্র। বিশ্বের অন্যতম কেমিক্যাল পণ্য প্রস্তুতকারক দেশ হিসেবে চীন দ্রুত অনেক কিট তৈরি করে ফেলে। এ ছাড়া দেশটির অধীনে থাকা অঞ্চল হংকং বড় ধরনের ধাক্কা খেয়েছিল সার্স ভাইরাসে। সেখান থেকে শিক্ষা নিয়ে দ্রুত ডায়াগনস্টিক টেস্টে এগিয়ে যায় গোটা চীন

জার্মানি : করোনাভাইরাস বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়ার আগেই সতর্কতা অবলম্বন করে জার্মানি। যেখানে অধিকাংশ দেশ বৈশ্বিক এই বিপর্যয় মোকাবিলায় ধীর গতিতে প্রস্তুতি নিচ্ছিল তখন জার্মানি এগিয়ে যায়। কারণ জানুয়ারির শুরুতে বার্লিনের বিজ্ঞানীরা উপলব্ধি করেন, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ সার্সের মতো হতে পারে। ফলে অনেক টেস্ট কিড প্রয়োজন হতে পারে।

বার্লিনের বিজ্ঞানী ওলফার্ট ল্যান্ডট ও কোম্পানি সার্সসহ আরও অন্যান্য করোনাভাইরাসের টেস্ট কিট ডিজাইন করে থাকে। চীনের টেস্টের আগে ডব্লিউএইচও ১৭ জানুয়ারি এই টেস্টের প্রটোকল প্রকাশ করে। ফেব্রুয়ারির শেষের দিকে এসে ল্যান্ডেট উৎপাদন করেন ৪০ লাখ কিট। আরও ১৫ লাখ কিট তৈরির পথে আছে। ফলে করোনা পরীক্ষায় বেশ এগিয়ে আছে জার্মানি। এমনকি দিনে ১২ হাজার পরীক্ষাও সম্ভব হয়েছে দেশটিতে।

দক্ষিণ কোরিয়া : করোনাভাইরাস রোধে দক্ষিণ কোরিয়ার পদক্ষেপগুলো ইতিমধ্যে প্রশংসিত হয়েছে। সংক্রমণের শুরুতেই পরীক্ষা নিয়ে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়েছিল দেশটি। যেখানে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন করোনা সংক্রমণ খুব বেশি হবে না বলে দায়সারা মন্তব্য করছিলেন, সে সময় উহান থেকে শিক্ষা নিয়ে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করে ফেলে দক্ষিণ কোরিয়া। দেশটি তখন করোনা আক্রান্ত শনাক্ত এবং তাদের আইসোলেশনে রাখা নিয়ে গুরুত্ব দেয়া শুরু করে। একদিনে ১৫ হাজার হাজার পর্যন্ত ডায়াগনস্টিক টেস্ট করে দক্ষিণ কোরিয়া। বিনা খরচে ৩ লাখের বেশি মানুষের টেস্ট করানো হয়েছে। এ ছাড়া টেস্টিং বুথ তৈরি করেছে দেশটি।

আইসল্যান্ড : ছোট দেশ হলেও সম্পদশালী হওয়ায় নাগরিকদের সহজে করোনা পরীক্ষা করতে সক্ষম হচ্ছে আইসল্যান্ড। এমনকি কোনো ধরনের উপসর্গ দেখা না গেলেও মানুষকে পরীক্ষা করছে দেশটির কর্তৃপক্ষ। এর মধ্য দিয়ে দেশটির নাগরিকদের বড় একটি অংশে তারা পরীক্ষা চালাতে সক্ষম হয়েছে। এ ক্ষেত্রে আইসল্যান্ডের স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ শুরু থেকেই গুরুত্ব সহকারে নেয় বিষয়টিকে।

ইতালি : জার্মানির পর সবচেয়ে বেশি পরীক্ষা করিয়েছে ইতালি। করোনাভাইরাসে সবচেয়ে বেশি মৃত্যু দেশটিতে। সেখানে মারা গেছে ১৫ হাজারের বেশি মানুষ। আক্রান্ত হয়েছে এক লাখ ২৪ হাজার। তবে দুই লাখের বেশি পরীক্ষা চালিয়েছে ইতালি। এমনকি ভেনিসের পাশের একটি শহরের প্রত্যক বাসিন্দাকে করোনা পরীক্ষা করে দেখা হয়েছে। পাইলট প্রজেক্ট চালিয়ে শহরে শহরে বড় আকারে পরীক্ষা চালাচ্ছে দেশটি।

ad

পাঠকের মতামত