315709

ক’রো’নার প্রভাব প্রবল হচ্ছে নারায়ণগঞ্জে : শামীম ওসমান চান লকডাউন, আইভী চাইলেন কারফিউ

নিউজ ডেস্ক।। নারায়ণগঞ্জে প্রবল হচ্ছে করোনার প্রভাব। বন্দরে এক নারী এবং ফতুল্লায় এক বৃদ্ধ করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর পর নারায়ণগঞ্জে নতুন করে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন আরও ৫ জন। এদিকে পরিস্থিতি ভয়াবহ হওয়ার আগেই নারায়ণগঞ্জে লকডাউন চেয়েছেন এমপি শামীম ওসমান। অন্যদিকে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন এলাকায় কারফিউ দেয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রীর নিকট লিখিত অনুরোধ জানিয়েছেন সিটি মেয়র সেলিনা হায়াত আইভী।

রবিবার দুপুরে করোনাভাইরাস প্রতিরোধে জেলা কমিটির সদস্যসচিব ও জেলা সিভিল সার্জন মোহাম্মদ ইমতিয়াজ আইইডিসিআরের বরাত দিয়ে জানান, আগের ৬ জন নিয়ে জেলায় করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা মোট ১১ জন। এদের মধ্যে বন্দরে নাসিক ২৩নং ওয়ার্ডে এক নারী এবং সদর উপজেলার ফতুল্লার কাশীপুর বাংলাবাজার এলাকায় এক পুরুষ মারা গেছেন।

তিনি জানান, সর্বশেষ করোনায় এক অর্থোপেডিকস ডাক্তার আক্রান্ত হয়েছেন। তিনি নারায়ণগঞ্জ শহরের বেইলি টাওয়ারের বাসিন্দা। আক্রান্ত ৬ জন বর্তমানে আইইডিসিআরের পর্যবেক্ষণে ঢাকায় চিকিৎসাধীন আছেন। করোনায় আক্রান্ত হয়ে যাওয়া মারা যাওয়া এবং হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকা ব্যক্তিদের সংস্পর্শে আসা ব্যক্তিদের হোম কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে। বেশ কিছু জায়গায় লকডাউন করা হয়েছে।

সংসদ সদস্য শামীম ওসমান দেশ রূপান্তরকে বলেন, পরিস্থিতি দিন দিন খারাপ হচ্ছে। এখনই সময় লকডাউন দেয়ার। নারায়ণগঞ্জকে এখনই লকডাউন না করলে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হয়ে উঠতে পারে।

তিনি আরও বলেন, কারফিউ বুঝি না, লকডাউন বুঝি না, নারায়ণগঞ্জের কেউ যেন ঘরের বাইরে বেরোতে না পারে সে জন্য যা করণীয় আজই তা করতে হবে। জনগণের স্বার্থে মানবজাতির স্বার্থে দেশের স্বার্থে কেউ যেন ঘরের বাইরে বের হতে না পারে। এদিকে রবিবার প্রধানমন্ত্রী বরাবর লিখিত আবেদনে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন এলাকায় কারফিউ চেয়েছেন মেয়র সেলিনা হায়াত আইভী।

প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আবুল আমিন স্বাক্ষরিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, সার্বিক বিবেচনায় সিটি করপোরেশন এলাকায় মেয়র সেলিনা হায়াত আইভী জরুরি ভিত্তিতে কারফিউ/লকডাউন জারি করার জন্য প্রধানমন্ত্রীসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি বিশেষভাবে অনুরোধ করেছেন। অন্যথায় করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে।

জেলা করোনা ফোকাল পারসন এবং নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মুহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম দেশ রূপান্তরকে বলেন, আইইডিসিআর থেকে নতুন করে নারায়ণগঞ্জে পাঁচজনের নমুনা পরীক্ষায় পজিটিভ পাওয়া গেছে বলে জানানো হয়েছে। আমরা সতর্ক আছি। আক্রান্ত ব্যক্তিদের সংস্পর্শে আসার ব্যক্তিদেরও পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। তারা হোম কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন।

তিনি আরও জানান, শনিবার ১৪ জন ও এর আগের দিন ১৩ জন সর্বমোট ২৭ জনের নমুনা আমরা সংগ্রহ করেছিলাম। এর মধ্যে ৬ জনের দেহে করোনা ভাইরাসের উপস্থিতি পাওয়া গেছে। এর আগে জেলাটিতে নমুনা সংগ্রহের পর ৮ মার্চ ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হিসেবে দুজনকে চিহ্নিত করে সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর)। যারা ইতিমধ্যেই সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন। পরে ২৩ মার্চ জেলায় আরও একজন আক্রান্ত পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছিলেন জেলা সিভিল সার্জন। পরে তিনিও ১ এপ্রিল সুস্থ হয়ে বাড়ি ফেরেন। ৩০ মার্চ জেলায় প্রথম করোনা আক্রান্ত হয়ে বন্দরের রসুলবাগ এলাকার মারা যান। পরে ২ এপ্রিল রাতে এলাকাটি লকডাউন করে দেয়া হয়। পরবর্তীতে ৪ এপ্রিল জেলায় দ্বিতীয় আরেক ব্যক্তি করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা যান।

ad

পাঠকের মতামত