315426

২২২ বছর পর প্রথম বাতিল হতে পারে হজ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক।।  বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো সৌদি আরবেও প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। ইতিমধ্যেই দেশটির পবিত্র দুই নগরীতে মক্কা-মদিনাতে দিন-রাত ২৪ ঘণ্টা কারফিউ জারি করা হয়েছে। পুরো দেশে ঘোষণা করা হয়েছে লকডাউন। এ পরিস্থিতিতে চলতি বছর মুসলমানদের সর্বোচ্চ ধর্মীয় জমায়েত পবিত্র হজ অনুষ্ঠিত হবে কি-না সেটা নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। শঙ্কা করা হচ্ছে, এই অবস্থা অব্যাহত থাকলে ১৭৯৮ সালের পর এ প্রথম বাতিল হতে পারে হজ। যা ২২২ বছর আগের ইতিহাসের

সালের স্প্যানিশ ফ্লু মহামারির সময়ও এই দুটি শহর বন্ধ করা হয়নি। সৌদি কর্মকর্তারা বিদেশের জন্য দেশের সীমানা নির্ধারণ করে দিয়েছে এবং আংশিকভাবে হজের আগে এই ভাইরাসটি নির্মূল করার আশায় মক্কা ও মদিনার অভ্যন্তরে চলাচলে ব্যাপক নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে।

সৌদি আরবের হজ ও ওমরাহ বিষয়ক মন্ত্রী মুহাম্মদ সালেহ বিন তাহের বান্তেন রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনকে বলেছেন, ‘সৌদি আরব সমস্ত মুসলিম ও নাগরিকের সুরক্ষার জন্য প্রস্তুত। এ কারণেই আমরা পরিষ্কার ধারণা না পাওয়া পর্যন্ত আনুষ্ঠানিকভাবে হজের বিষয়ে কোনো চুক্তি স্বাক্ষর না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। বিশ্বের সমস্ত মুসলিমদের কাছে এই মুহূর্তে কোনো চুক্তি স্বাক্ষর না করার জন্য অনুরোধ করেছি।’

মন্ত্রী বলেন, ‘হজের প্রস্তুতি নিয়ে এবার তাড়াহুড়ো না করতে মুসলিম দেশগুলোকে অনুরোধ করা হয়েছে। মহামারির গতিপ্রকৃতির ওপর নির্ভর করবে সিদ্ধান্ত। বেশি গুরুত্ব পাবে জনস্বাস্থ্যের বিষয়টি।’

কিংস কলেজ লন্ডনের ওয়ার স্ট্যাডিজ বিভাগের প্রভাষক সিরাজ মাহের বলেন, ‘হজ বাতিল হওয়ার সম্ভাবনা নিয়ে সৌদি কর্তৃপক্ষ মুসলিমদের মনস্তাত্ত্বিকভাবে প্রস্তুত করছে। তারা অতীত থেকে ঐতিহাসিক দৃষ্টান্ত তুলে ধরেতে শুরু করেছে, যেখানে বিপর্যয় ও যুদ্ধসহ বিভিন্ন কারণে হজকে স্থগিত করতে হয়েছিল। আমি মনে করি, এটি মানুষকে আশ্বস্ত করার বিস্তৃত প্রয়াসের একটি অংশ। যদি হজ সত্যিই বাতিল হয় তবে সেটা কোনো নজিরবিহীন ঘটনা হবে না।’

উল্লেখ্য, প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসে সৌদি আরবে এখন পর্যন্ত ১ হাজার ৮৮৫ জন আক্রান্ত হয়েছে। আর প্রাণ গেছে ২১ জনের। এদিকে বিশ্বব্যাপী এ ভাইরাসে এখন পর্যন্ত ১০ লাখ ১৫ হাজারের বেশি মানুষ আক্রান্ত হয়েছে। আর ৫৩ হাজারের বেশি মানুষের প্রাণ হারিয়েছেন এ ভাইরাসে।

ভাইরাসটি ছোঁয়াচে হওয়ায় এর সংক্রমণ থেকে বাঁচতে সব ধরনের জনসমাগম এড়িয়ে চলতে পরামর্শ দিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। এছাড়া জনসমাগম এড়িয়ে চলতে বিশ্বব্যাপী অনেক দেশে লকডাউন ও কারফিউ জারি করা হয়েছে। উৎস : দ্য গার্ডিয়ান।

ad

পাঠকের মতামত