312886

ডিবি পরিচয়ে অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায়, গ্রেফতার ৪

র‌্যাব-১১ এর একটি আভিযানিক দল নরসিংদী জেলার সদর থানার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে সংঘবদ্ধ অপহরণকারী চক্রের ৪ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে। গ্রেফতারকৃতরা হলেন- অভিত মিয়া(২৮), মো. পাপ্পু মিয়া(২৮), মারিয়া আক্তার মন্টি(২৩) ও মো. বাদল মিয়া(৫৮)।

আসামিরা নরসিংদী জেলার সদর থানার স্থায়ী বাসিন্দা। শুক্রবার রাতে ওই অভিযান চালানো হয়। আজ শনিবার দুপুরে আদমজীতে র‌্যাব-১১ সদর দফতরে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আলেপউদ্দিন জানান, গত ২০ ফেব্রুয়ারি মো. রাসেল (২৮) নামে এক ব্যক্তি র‌্যাব-১১ কার্যালয়ে একটি অভিযোগ দায়ের করে।

এতে তিনি উল্লেখ করেন্, গত ২৮ ডিসেম্বর তাকে ডিবির পরিচয়ে অজ্ঞাতনামা কয়েকজন ব্যক্তি নরসিংদী আদালতের সামনে থেকে মাইক্রোবাসযোগে তুলে নিয়ে যায়।

চেতনানাশক ওষুধ প্রয়োগ করে অবচেতন করে সেখান থেকে তাকে একটি ফ্ল্যাট বাসায় নিয়ে হাত-পা ও চোখ বেঁধে মারধর করাসহ বিভিন্নভাবে শারীরিক নির্যাতন করে এবং সেই নির্যাতনের ভিডিও মোবাইলে ধারণ করে।

ভিকটিম রাসেলকে জিম্মি করে হত্যার হুমকি দিয়ে পরিবারের কাছ থেকে মোটা অংকের মুক্তিপণ আদায় করে।

ওই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে র‌্যাব-১১ গোয়েন্দা নজরদারী ও গোপন অনুসন্ধানের মাধ্যমে অভিযোগের সত্যতা পায়।

আসামিরা মো. রাসেলকে অপহরণের বিষয়ে স্বীকারোক্তি প্রদানসহ অন্য আরও অপরাধের লোমহর্ষক বর্ণনা দেয়। গ্রেফতারকৃতরা একটি সংঘবদ্ধ অপহরণকারী চক্রের সক্রিয় সদস্য।

তারা অপহরণের উদ্দেশ্যে নরসিংদী, নারায়ণগঞ্জ ও ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় ছদ্মবেশে মাইক্রোবাস নিয়ে ঘুরে বেড়ায়।

সুযোগ বুঝে বিভিন্ন এলাকার বিত্তশালী লোকদের অপহরণ করে চেতনানাশক ওষুধ প্রয়োগ করে অবচেতন করে গোপন স্থানে নিয়ে জিম্মি করে শারিরিক নির্যাতন করাসহ প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে পরিবারের কাছ থেকে বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে মোটা অংকের টাকা মুক্তিপণ নিয়ে থাকে।

রাসেল অপহরণ বিষয়ে তারা জানায়, আসামিরা গত ২৮ ডিসেম্বর নরসিংদী আদালতের সামনে থেকে একটি মাইক্রোবাসযোগে ছদ্মবেশে ডিবির পরিচয় দিয়ে রাসেলকে তুলে নিয়ে যায়।

একটি গোপন কক্ষে হাত-পা ও চোখ বেঁধে রাসেলকে মারধর করাসহ শারীরিক নির্যাতন করতে থাকে এবং সেই নির্যাতনের ভিডিও তারা মোবাইলে ধারণ করে মুক্তিপণের ১০ লাখ টাকা দাবি করে রাসেলের পরিবারের কাছে পাঠায় এবং এই বিষয়ে কাউকে বললে রাসেল হত্যার হুমকি দেয়া হয়।

অপহরণকারী চক্রের সদস্যরা রাসেলের গোপনাঙ্গ সিগারেট জ্বালানোর লাইটার দিয়ে পুড়িয়ে দেয়। রাসেলের পরিবার কোনো উপায় না পেয়ে তার জীবন বাঁচাতে ওইদিন রাতে বিকাশের মাধ্যমে ৬০ হাজার টাকা তাদের কাছে পাঠায় এবং বাকি টাকা নগদে পরিশোধ করবে বলে জানায়।

২০১৯ সালের ২৯ ডিসেম্বর রাতে অবশিষ্ট টাকা নেয়ার জন্য রাসেলকে নিয়ে একটি মাইক্রোবাসযোগে নরসিংদীর শাপলা চত্ত্বরে আসার পর রাসেল প্রকৃতির ডাকে সাড়া দেয়ার কথা বলে মাইক্রোবাস থেকে নেমে ডাকাত, ডাকাত বলে চিৎকার শুরু করে।

তার চিৎকারে লোকজন আসতে থাকলে অপহরণকারীরা তাকে ফেলে রেখেই দ্রুত পালিয়ে যায়। পরবর্তীতে রাসেল তার পরিবারের লোকজনের মাধ্যমে হাসপাতালে দীর্ঘদিন চিৎসার নেয়ার পর সুস্থ্য হয়ে র‌্যাব-১১ বরাবর একটি অভিযোগ দাখিল করে।

যার পরিপ্রেক্ষিতে র‌্যাব-১১ এর একটি বিশেষ গোয়েন্দা দল নজরধারীর মাধ্যমে ঘটনার সত্যতা পেয়ে গত ২১ ফেব্রুয়ারি রাতে নরসিংদী সদর থেকে সংঘবদ্ধ অপহরণকারী চক্রের ৪ সক্রিয় সদস্যকে গ্রেফতার করা করে।

ad

পাঠকের মতামত