312548

গাজীপুরে একটি গার্মেন্টসে নামাজ বাধ্যতামূলক করা হয়েছে!

গাজীপুরের একটি পোশাক কারখানায় সকল কর্মকর্তা, কর্মচারীদের জন্য অফিস চলাকালীন প্রতিদিন মসজিদে গিয়ে যোহর, আসর ও মাগরিবের নামাজ পড়া বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।

গত ৯ তারিখে জারি করা একটি নোটিশে লেখা রয়েছে, এই তিন ওয়াক্ত নামাজ পড়তে যাওয়ার সময় পাঞ্চ মেশিনে পাঞ্চ করতে হবে। যদি কোন কর্মী মাসে সাত ওয়াক্ত পাঞ্চ করে নামাজ না পড়েন; তবে একদিনের সমপরিমাণ হাজিরা কেটে নেয়া হবে তার বেতন থেকে।

ফ্যাক্টরিটির অপারেশন্স বিষয়ক পরিচালক মেসবাহ ফারুকী জানিয়েছেন, এটি শুধু উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তাদের জন্য। যদিও এই নোটিশে লেখা, সকল স্টাফ।

কেন এই নির্দেশ-এই প্রশ্নে ফারুকী বিবিসিকে বলেন, সবাই আমরা নামাজ পড়ি। আমরা ইসলাম ধর্মের অনুসারী, আমাদের নামাজ পড়া ফরজ। এখানে মুসলমান যারা আছে তারা সবাই নামাজ পড়ে। কিন্তু তারা নামাজ পড়ে বিক্ষিপ্তভাবে।

তিনি আরও বলেন, কর্মীদের মধ্যে মতভেদ-দূরত্ব কমানোর একটি উপায় হিসাবে কারখানায় নামাজ বাধ্যতামূলক করার এই সিদ্ধান্ত তিনি নিয়েছেন। আমাদের এখানে বিভিন্ন মতভেদের লোক আছে।

এখানে একটা টিম হিসেবে কাজ করতে হয়। এখানে ফেব্রিক ডিপার্টমেন্টের সাথে নিটিং সেক্টরের হয়ত একটা সমস্যা থাকে। একেকজন একেকজনের উপর দোষারোপ সারাদিন চলতেই থাকে।

তো আমি এটার সমাধান হিসেবে চিন্তা করলাম তাদের যদি একসাথে বসানো যায়, একসাথে কিছু সময় যদি তারা কাটায়, তাদের মধ্যে দূরত্বটা কমবে।তিনি বলেন, তার কাছে মনে হয়েছে মসজিদ ছাড়া একসাথে বসানোর কোন পন্থা তিনি খুঁজে পাননি।

ফারুকী তাদের সিদ্ধান্তের বিষয়ে স্বাস্থ্যগত একটি ব্যাখ্যাও দিয়েছেন। তিনি বলছেন, সারাদিন বসে বসে কাজ করায় কোলেস্টেরল বাড়ছে, ডায়াবেটিস বাড়ছে। মসজিদ চারতলায় হওয়াতে কিছুটা ব্যায়ামও হচ্ছে।নোটিশে যেভাবে একদিনের বেতন কাটার কথা বলা হয়েছে সেয়ে তিনি বলছেন, এ এপর্যন্ত কারোর বেতন কাটা হয়নি।

এ ধরণের নির্দেশনাকে সংবিধানবিরোধী আখ্যা দিয়ে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে। সংবিধানেই তো বলা আছে ধর্ম কারো ওপর চাপিয়ে দেয়া যাবে না।

তিনি বলেন, কোন আইন দিয়েই এটা বাধ্যবাধকতা দেয়া যায় না। ইসলাম ধর্মও বলে না কারো ওপরে ধর্ম চাপিয়ে দেয়া যাবে। আপনি যেমনটি বলছেন, তেমনটি হলে তো এটা খতিয়ে দেখতে হবে।

ad

পাঠকের মতামত