311975

আর কতটা পথ হাটলে বিক্রি হবে কেমব্রিজের বিজ্ঞানী ড. ফয়জুরের বই?

বিজ্ঞানী ড. ফয়জুর রহমান আল সিদ্দিক। জীবনের ছিয়াশিটি বসন্ত পার করেছেন। তিনি কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে নিউক্লিয়ার কেমিস্ট্রি বিভাগে ১৯৬৫ সালে পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেন। কেমব্রিজে তাঁর রেজাল্ট এবং গবেষণার মান এতোটাই উন্নত ছিল যে, তাকে চাইলে সেখানেই অধ্যাপনা করতে পারতেন। কিন্তু তা না করে ফিরে আসেন দেশে।

দেশ স্বাধীনের পর পরমাণু শক্তি কমিশনে জয়েন করেন এবং পরবর্তীতে সেখানকার ডিরেক্টর হন। তিনি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর স্বামী প্রয়াত ড. ওয়াজেদ সাহেবের সহকর্মী ছিলেন।’

শনিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) দেখা যায় অমর একুশে বই মেলায় নিজের লেখা বই নিয়ে ঘুরছেন বিজ্ঞানী ড. ফয়জুর রহমান। স্টলে স্টলে ঘুরছেন বইটি বিক্রির জন্য। বইয়ের নাম ‘বাঙ্গালীর জয়, বাঙ্গালীর ব্যর্থতা’। তিনি শুধু বই প্রকাশের খরচটাই নেন।

বিষয়টি চোখে পড়ে একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞানের শিক্ষক রাসেল হোসাইনের। এ বিষয়ে নিজের ফেসবুক টাইমলাইনে পোস্ট দেন রাসেল। মুহূর্তেই ওই লেখকের ছবি এবং পোস্টটি সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।

তার ফেসবুক পোস্টটি হুবহু তুলে ধরা হল :

ভদ্রলোকের নাম ডঃ ফয়জুর রহমান আল সিদ্দিকী, উনি একজন স্কলার এবং অবসরপ্রাপ্ত বিজ্ঞানী। কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে নিউক্লিয়ার কেমিস্ট্রি বিভাগে ১৯৬৫ সালে পি.এইচ.ডি ডিগ্রি লাভ করেন। কেমব্রিজে উনার রেজাল্ট এবং গবেষণার মান এতোটাই উন্নত ছিল যে উনি চাইলে সেখানেই প্রফেসর হতে পারতেন। কিন্তু উনি তা করেন নি। স্বাধীনের পর দেশে এসে পরমাণু শক্তি কমিশনে জয়েন করেন এবং পরবর্তীতে সেখানকার ডিরেক্টর হন।

এই পোস্টটা দেয়ার আশায় ছবিটা তোলা হয়নি কিন্তু বেশকিছু অর্থবিত্ত শালী ফেইসবুক /ইউটিউব সেলিব্রেটিদের বই এর পাবলিসিটির পোস্ট দেখে দিতে ইচ্ছা হল। গতকাল বই মেলায় গিয়ে সেখানেই এই লেখককে দেখি। উনি খুবই দ্রুত হাঁটছিলেন, এক দোকান থেকে অন্য দোকানে যাচ্ছিলেন নিজের বই দেখাচ্ছিলেন দোকানে রাখতে হয়তো বিক্রির জন্যে। আমি শুধু ওনার হাতে ব্যাগ ভর্তি বই আর ক্ষয়ে যাওয়া জুতো টাই খেয়াল করেছিলাম। না বলে ছবিটা তোলা। শুনেছি ভদ্রলোক শুধুমাত্র বইয়ের খরচটাই নেন কোন লাভ/ব্যবসা করেন না।

তখন একটা জিনিস ই মাথায় ঘুরছিল, আমাদের এ সমাজে যতোই প্রতিভাবান হন না কেন, আপনার অর্থবিত্ত না থাকলে হয়তো আপনার প্রতিভা চাপা পড়ে যাবে বস্তা পচা সো কল্ড প্রতিভাবান মানুষের ভিড়ে।

আপনারা যারা বইমেলায় যাবেন তারা আগ্রহী হলে ভদ্রলোকের একটি বই সংগ্রহে রাখতে পারেন। আপনার হয়তো অল্প কিছু টাকা খরচ হবে কিন্তু তার মুখে হাসি ফুটবে কোটি টাকার। উনার বই পাওয়া যাবে…

#প্যাভিলিয়ন ২ (পুঠিনিলয়)
#বই – *বাঙ্গালীর জয়, বাঙ্গালীর ব্যর্থতা*

আসুন ফয়জুর সাহেবের বইয়ের প্রচারণা না হয় আমি আর আপনিই করি একটি শেয়ারের মাধ্যমে!! বাঙ্গালীর জয় হোক, বাঙ্গালীর ব্যর্থতার গ্লানি মুছে!!

বিজ্ঞানী ড. ফয়জুর রহমানর আল সিদ্দিক

ড. ফয়জুর রহমানর আল সিদ্দিক ১৯৩৪ সালে ঢাকা জেলার নবাবগঞ্জ থানার চরমধুচারিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রসায়ন শাস্ত্রে অনার্স এবং থিসিস গ্রুপে এম এসসি ডিগ্রি অর্জন ও পোস্ট এম এসসি গবেষণায় অংশগ্রহণ করেন। কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি নিউক্লীয় রসায়নের পিএইচ. ডি. ডিগ্রি অর্জন করেন। তেহরানের নিউক্লীয় বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট এবং সুইজারল্যান্ডের ফেডারেল নিউক্লীয় চুল্লি গবেষণা ইনস্টিটিউট যথাক্রমে পোস্ট এম এসসি এবং পোস্ট ডক্টরাল গবেষণায় অংশগ্রহণ করেন।

সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়ন, পূর্ব জার্মানি, চেকোস্লোভাকিয়া, হাঙ্গেরি, গণচীন ও জাপানে পরমাণু শক্তি ব্যবহারের প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। তিনি কর্মজীবন শুরু করেন ঢাকা মেডিকেল কলেজের অধীনে মেডিকেল একজামিনার হিসেবে। পরবর্তীতে পরমাণু শক্তি কমিশনের নিউক্লীয় শক্তির শান্তিপূর্ণ ব্যবহারের ওপর দীর্ঘকাল গবেষণা করার পর ১৯৯২ সালে উক্ত সংস্থার নিউক্লীয় বিজ্ঞান ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের পরিচালক হিসেবে অবসর গ্রহণ করেন।

বর্তমান তিনি ইন্টারন্যাশাল ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস এগ্রিকালচার এন্ড টেকনলজি-এ রসায়ন শাস্ত্রের শিক্ষক হিসেবে কর্মরত আছেন।

ad

পাঠকের মতামত