310584

ধর্ষণে ব্যর্থ হয়ে শিশু আয়েশাকে হত্যা করে নাহিদ

ধর্ষণের চেষ্টায় ব্যর্থ হয়ে আড়াই বছরের শিশু আয়েশা মনিকে পরিকল্পিতভাবে তিন তলার বারান্দা থেকে ফেলে হত্যা করে নাহিদ। এক বছর আগে রাজধানীর গেন্ডারিয়ায় প্রতিবেশীর মেয়ে আয়েশাকে হত্যার অভিযোগ প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হওয়ায় জান্নাতুল ওয়াইশ ওরফে নাহিদকে একমাত্র আসামি করে অভিযোগপত্র দেয় পিবিআই। অভিযোগপত্রে এসব কথা উল্লেখ্য করেন তদন্তকর্মকর্তা।

সোমবার ঢাকা মহানগর হাকিম মো. ইলিয়াস মিয়া অভিযোগপত্রটি গ্রহণ করেন। মামলার পরবর্তী বিচারের জন্য সিএমএম বরাবর নথি প্রেরণ করেন। আইন অনুযায়ী সিএমএম মামলার নথি নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে বদলির আদেশ দেবেন। সেখানে মামলার বিচারকার্য পরিচালিত হবে।

এর আগে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআই’র উপ-পুলিশ পরিদর্শক সাদেকুর রহমান আসামি নাহিদকে একমাত্র আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। অভিযোগপত্রে বলা হয়, ‘ধর্ষণের চেষ্টায় ব্যর্থ হয়ে দুই বছরের শিশু আয়েশা মনিকে পরিকল্পিতভাবে তিন তলার বারান্দা থেকে ফেলে হত্যা করে নাহিদ।’

গেন্ডারিয়ার দীননাথ সেন রোডের একটি টিনশেড বাড়িতে বাবা-মা ও বোনদের সঙ্গে থাকত শিশু আয়েশা। প্রতিদিন সকালে আয়েশার মা-বাবা কাজে যান। দিনের বিভিন্ন সময় গেন্ডারিয়ার ‘সাধনা ঔষধালয়’র সামনের গলিতে খেলা করত শিশুটি।

২০১৯ সালের ৫ জানুয়ারি বিকেলে খেলছিল আয়েশা। সন্ধ্যার দিকে টিনশেড বস্তির পাশের চারতলা বাড়ির সামনে আয়েশার রক্তাক্ত মরদেহ পড়ে থাকতে দেখেন স্থানীয়রা। পরে ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায় পুলিশ।

এলাকায় জানাজানি হয় শিশুটি বারান্দা থেকে লাফ দিয়ে পড়ে মারা গেছে। তবে এলাকাবাসী ও প্রত্যক্ষদর্শীদের সঙ্গে কথা বলে আয়েশার বাবা ইদ্রিস আলী বাদী হয়ে প্রতিবেশী নাহিদের বিরুদ্ধে ‘হত্যা’ মামলা করেন। মামলায় ‘ধর্ষণের পর হত্যার’ অভিযোগ আনা হয়।

তদন্তের প্রাথমিক পর্যায়ে নাহিদকে (৪৫) গ্রেফতার করে পুলিশ। তবে তাকে গ্রেফতারের সময়ও ছিল নাটকীয়তা। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে নাহিদ বাসার তৃতীয় তলার খোলা জানালা দিয়ে লাফ দেন। এতে তার দুই পা ভেঙে যায়। এ সময় আহত অবস্থায় তাকে গ্রেফতার করা হয়। নেয়া হয় আদালতে।

এরপরই উন্মোচিত হয় নাহিদের কুকর্ম। পরদিন স্বেচ্ছায় আদালতে আসে সপ্তম শ্রেণিতে পড়ুয়া নাহিদের মেয়ে। নিজের বাবার কুকর্মের কথা তুলে ধরে আদালতে জবানবন্দি দেয় মেয়ে।

আদালতে নাহিদের মেয়ে জানায়, ঘটনার দিন সন্ধ্যার দিকে বাসার বারান্দায় বসে ছিল আমি। এমন সময় বাবার রুম থেকে ছোট শিশুর কান্নার আওয়াজ শুনতে পায়। কান্না শুনে বাবার বেডরুমে যায়। দরজা খুলে দেখি, বাবা বিছানায় আর শিশু আয়েশা তার কোলে কাঁদছে।

তখন বাবা আমাকে ধমক দিয়ে বলে, ‘এই তুই এখানে এসেছিস কেন? তখন আমি অন্য রুমে চলে যায়। এরপর বাবা আয়েশাকে তিন তলার খোলা জানালা দিয়ে ফেলে দেয়।’

৫ বছর আগে নাহিদের স্ত্রী মারা যান। এরপর তিনি আর বিয়ে করেননি। ১২ বছর বয়সী মেয়েকে নিয়ে নাহিদ ওই বাসায় থাকতেন।

ad

পাঠকের মতামত