309294

সোলেইমানির দাফনে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৫০

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
ইরাকে মার্কিন বিমান হামলায় নিহত ইরানি কমান্ডার লে. জেনারেল কাসেম সোলাইমানির জানাজায় পদদলিত হয়ে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৫০ জনে দাঁড়িয়েছে। এছাড়া আহত হয়েছেন আরো অন্তত দুই শতাধিক মানুষ।
বিবিসি, রয়টার্সসহ আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমগুলোতে এ খবর জানানো হয়েছে। খবরে বলা হয়েছে, স্থানীয় সময় মঙ্গলবার সকালে সোলেমানির জন্মস্থান দেশটির কেরমান প্রদেশের রাজধানী কেরমানে তার মরদেহ নেয়া হয়। সেখানেই তার জানাজা অনুষ্ঠানে যোগ দিতে লাখো মানুষের ঢল নামে। একপর্যায়ে পদদলিত হওয়ার ঘটনা ঘটে।
এদিকে পদদলিত হয়ে হতাহতের ঘটনায় এদিন সোলেমানির জানাজার অন্যান্য আনুষ্ঠানিকতা স্থগিত করেছে কর্তৃপক্ষ।

ইরানের জরুরি মেডিক্যাল সার্ভিসের প্রধান পির হোসেইন কৌলিভান্দ বলেন, সোলেমানির জন্মস্থান কেরমান শহরের আজাদি স্কয়ারে লোকজন পদদলিত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। শহরটিতে ৫০ লাখ মানুষ বসবাস করেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, জানাজায় অংশ নিতে যাওয়ার জন্য যে সড়কটি ব্যবহার করা হয় সেটি ছিলো খুবই সরু। রাস্তা সরু না হলে ঘটনা এরকম নাও হতে পারতো।
এর আগে গত সোমবার তেহরান বিশ্ববিদ্যালয়ের মসজিদ প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত তার প্রথম জানাজাতেও প্রচুর লোক হয়েছিলো। কারো কারো মতে, ওই জানাজায় ৭০ লাখের বেশি মানুষ অংশ নিয়েছিলো।

জানাজা শেষে বিকেলে জেনারেল সোলাইমানিসহ মার্কিন বিমান হামলায় নিহত পাঁচ কমান্ডারদের লাশ তেহরানের দক্ষিণে অবস্থিত কোম নগরীতে নেয়া হয়। সেখানকার জানাজাতেও লাখ লাখ মুসল্লি অংশগ্রহণ করেন।

মঙ্গলবার সকালেই ইরানের দক্ষিণাঞ্চলীয় কেরমান শহরে পৌঁছেছে সোলেইমানির কফিন। জেনারেল সোলাইমানির ইচ্ছানুযায়ী তার জন্মস্থানেই তাকে সমাহিত করা হয়। এখানে তার শেষ জানাযা অনুষ্ঠিত হওয়ার পর তার লাশ দাফন করা হবে বলে জানা গেছে।

জানাজার মতো তার দাফনেও প্রচুর লোক সমাগম হয়। প্রিয় নেতাকে শ্রদ্ধা জানাতে মঙ্গলবার সকাল থেকেই প্রচুর লোক জমা হতে শুরু করে কিরমানের সড়কগুলোতে। তাদের অনেকের হাতেই শোভা পাচ্ছিলো সোলেইমানির ছবি সম্বলিত পোস্টার। তারা ‘আমেরিকা নিপাত যাক’, ‘ইসরাইল নিপাত যাক’, ‘আমার ভাইকে যারা মেরেছে তাদেরকে হত্যা করব’ ইত্যাদি স্লোগানে প্রকম্পিত করে গোটা শহর।

ইরানের অন্যান্য শহর থেকেও লোকজন তার দাফন কাজে শরিক হতে ছুটে আসছেন। কেননা গোটা ইরান জুড়ে ছড়িছে রয়েছে তার অগণিত ভক্ত ও সমর্থক। শুধু ইরানই নয়; ইরাক, সিরিয়া ও ফিলিস্তিনের লোকজনের কাছেও সমান জনপ্রিয় ছিলেন কাসেম সোলেইমানি। তাই তার মৃত্যুতে শোকে ভাসছে গোটা মধ্যপ্রাচ্য।

প্রসঙ্গত, গত শুক্রবার ইরাকের রাজধানী বাগদাদ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে মার্কিন হামলায় নিহত হন সোলেইমানিসহ মোট আটজন সারিক কর্মকর্তা। নিহতদের মধ্যে ইরানেরই পাঁচজন। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে ভয়াবহ উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে। ইতিমধ্যে সোলেমানি হত্যাকাণ্ডের ‘কঠোর প্রতিশোধ’ নেয়া হবে বলে ঘোষণা দিয়েছেন খামেনি। প্রতিশোধ নেয়ার পণ করেছেন ইরান সমর্থিত লেবাননের সশস্ত্র রাজনৈতিক দল হিজবুল্লাহর প্রধান সাইয়্যেদ হাসান নাসরুল্লাহও। অন্যদিকে প্রতিশোধ নেয়ার চেষ্টা করা হলে ইরানের ওপর আরো হামলা চালানো হবে বলে হুমকি দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।

ad

পাঠকের মতামত