309312

চলতি মাসেই প্রাথমিকে ২৬ হাজার শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি!

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে নতুন শিক্ষক নিয়োগের সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। এ ধাপে সারাদেশে প্রাক-প্রাথমিক পর্যায়ে ২৬ হাজার ৩০০ জন শিক্ষক নিয়োগ দেয়া হবে।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা সচিব আকরাম আল হোসেন এ বিষয়ে বলেন, নতুন করে আরো ২৬৩০০ জন প্রাক-প্রাথমিক পর্যায়ের শিক্ষক নিয়োগ দেয়া হবে। এ কার্যক্রম ইতিমধ্যে শুরু করা হয়েছে। তবে আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে নতুন নিয়োগ কার্যক্রম পরিচালনা না করতে নিয়ম করা হয়েছে। তবে জানুয়ারি মাসের শেষের দিকেই এ নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি আসতে পারে বলে সূত্রে জানা গেছে।

১২০০ শিক্ষক নিয়োগে গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ
প্রাথমিকে নতুন চুড়ান্তভাবে উত্তীর্ণদের নিয়ে তিনি বলেন, শিক্ষক নিয়োগের পরীক্ষায় চূড়ান্ত ফলাফলে উত্তীর্ণদের চলতি মাসেই পদায়ন দেয়া হবে। যোগদান পাওয়া এসব শিক্ষকদের ফেব্রুয়ারি মাস থেকে ক্লাস করানোর দায়িত্ব দেয়া হবে।

প্রসঙ্গত, গত ডিসেম্বরে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগ-২০১৮ পরীক্ষার চূড়ান্ত ফলাফল প্রকাশ করা হয়। সারাদেশে শূন্য আসনের ভিত্তিতে মোট ১৮১৪৭ জনকে চূড়ান্ত ফলাফলে নির্বাচন করা হয়। জানুয়ারির মাঝামাঝি থেকে নিজ নিজ উপজেলায় এসব শিক্ষকদের পদায়ন কার্যক্রম শুরু করা হবে।

প্রাথমিকের নতুনরা পাচ্ছে ১৩তম গ্রেড
জানা যায়, জানুয়ারি মাসের মধ্যে পদায়ন কার্যক্রম শেষ করা হবে। ফেব্রুয়ারি থেকে তাদের ক্লাস কার্যক্রম শুরু হবে।
প্রাথমিক শিক্ষকদের নতুন সিদ্ধান্ত অনূযায়ী এসব সহকারী শিক্ষকরা সরাসরি ১৩ গ্রেডে বেতন-ভাতা সুবিধা পাবে। তবে যোগদানের পর তাদের প্রশিক্ষণ দেয়া হবে। আগে সহকারী শিক্ষকদের ১৫ গ্রেডে যোগদান করতে হত। প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত হলে তারা ১৪ গ্রেডে বেতন-ভাতা সুবিধা দেয়া হত। বর্তমানে যোগদানের পরেই প্রশিক্ষণ ছাড়াই সহকারী শিক্ষকদের ১৩ গ্রেডে বেতন-ভাতা দেয়া হবে।

অবশেষে প্রাথমিকের সময়সূচিতে পরিবর্তন
এদিকে, সরকার প্রাথমিকের শিক্ষকদের যৌক্তিক দাবিগুলো বাস্তবায়ন দাবি করে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন বলেছেন, ইতোমধ্যে প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষকদের দুটি ধাপে বেতন বাড়ানো হয়েছে। শিগগিরই প্রধান শিক্ষকদের আরো এক ধাপ গ্রেড উন্নীত করা হবে। ভবিষ্যতে প্রধান শিক্ষকদের ১০ গ্রেড দেয়া হবে।
মঙ্গলবার গোপালগঞ্জে মিড-ডে-মিল উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রতিমন্ত্রী একথা জানান।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শতভাগ শিক্ষার্থী ভর্তি নিশ্চিত করতে ও ঝরে পড়ার হার নির্মূলে মিড-ডে-মিল কার্যক্রম চালু করা হচ্ছে। বর্তমানে দেশের ১৬টি উপজেলার ২ হাজার ১৬৬ বিদ্যালয়ের ৪ লাখ ১০ হাজার ২৩৮ শিক্ষার্থীকে এ কার্যক্রমের আওতায় আনা হয়েছে।

১৮১৪৭ প্রাথমিক শিক্ষকের নিয়োগের সময় প্রকাশ!
মুজিববর্ষ উপলক্ষে দেশের ১৬টি জেলায় একযোগে মিড-ডে-মিল উদ্বোধন করা হয়। এর অংশ হিসেবে গোপালগঞ্জ জেলার টুঙ্গিপাড়া উপজেলার ৩৩টি বিদ্যালয়ে কার্যক্রমের আওতায় আনা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে দেশের সব প্রাথমিক বিদ্যালয়ে মিড- ডে-মিল কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা হবে।

জাকির হোসেন বলেন, শিক্ষকদের মধ্যে নানা ধরনের অসন্তোষ রয়েছে। বিভিন্ন দাবি-দাওয়া নিয়ে বিভিন্ন সময়ে তারা আন্দোলনে যুক্ত হয়েছেন। আমরা তাদের যৌক্তিক দাবিগুলো বাস্তবায়ন করছি। ইতোমধ্যে প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষকদের গ্রেড বাড়ানো হয়েছে। বর্তমানে প্রধান শিক্ষকদের ১১ গ্রেড ও সহকারী শিক্ষকদের ১৩ গ্রেডে উন্নীত করা হয়েছে। ভবিষ্যতে প্রধান শিক্ষকদের ১০ গ্রেড দেয়া হবে।

প্রাথমিকের প্রধান শিক্ষকরা পাচ্ছেন ১০ম গ্রেড: প্রতিমন্ত্রী
জাকির হোসেন বলেন, শিক্ষকদের যৌক্তিক সব দাবি-দাওয়া মেনে নেয়া হবে, তবে আমরা চাই, শিক্ষকরা আমাদের সন্তানদের সঠিক মানুষ হিসেবে গড়ে তুলবেন। পরবর্তী প্রজন্মকে যদি সঠিক মানুষ হিসেবে গড়ে তোলা সম্ভব না হয়, তবে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ রক্ষা করা সম্ভব হবে না।

বর্তমানে শতভাগ ছেলেমেয়েরা স্কুলে ভর্তি হচ্ছে উল্লেখ করে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব আকরাম আল হোসেন বলেন, প্রাথমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করতে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। বছরের প্রথম দিনে বিনামূল্যের বই বিতরণ, শিক্ষা উপকরণ ও প্রতিটি শিক্ষার্থীর মায়েদের হাতে উপবৃত্তি বাবদ অর্থ তুলে দেয়া হচ্ছে।

এর আগে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেন এমপি গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া উপজেলার নিলফা বয়রা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কমলমতি শিশুদের মুখে রান্না করা খাবার তুলে দিয়ে স্কুল ফিডিং কর্মসূচির উদ্বোধন করেন।

প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের জরুরি বিজ্ঞপ্তি
গোপালগঞ্জের জেলা প্রশাসক শাহিদা সুলতানার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব মো: আকরাম-আল-হোসেন, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (অতি: দায়িত্ব) সোহেল আহমেদ, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (উন্নয়ন) রতন চন্দ্র পন্ডিত, প্রকল্প পরিচালক রুহুল আমিন খান, বিশ্ব খাদ্য সংস্থার প্রতিনিধি মাহফুজ আলম, গোপালগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মাহাবুব আলী খান, টুঙ্গিপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো: ইলিয়াস হোসেন, উপজেলা চেয়ারম্যান সোলায়মান বিশ্বাস, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাকিব হোসেন তরফদার, পৌর মেয়র শেখ আহম্মেদ হোসেন মির্জা, কুশলী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান খালিদ হোসেন প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

ad

পাঠকের মতামত