307231

১৫০টা মেয়ের সাথে প্রেম করেছে সৈকত, ওই আমার মেয়ের শত্রু: রুম্পার মা

রাজধানীর স্ট্যামফোর্ড ইউনিভার্সিটির ছাত্রী রুবাইয়াত শারমিন রুম্পার প্রেমিক সৈকতকে চারদিন রিমান্ডের পর আদালতে পেশ করা হয়েছে। পুলিশ বলছে, রুম্পা ছাদ থেকে লাফিয়ে আত্মহত্যা করেছে। রুম্পার স্বজনদের দাবি, রুম্পা যদি আত্মহত্যাই করবে তাহলে মৃত্যুর দিন বিকাল চারটার পর রুম্পা কোথায় ছিল, কি কারণেই রুম্পা আত্মহত্যা করল? শুক্রবার (১৩ ডিসেম্বর) বিকালে ময়মনসিংহের সদরে গ্রামের বাড়ি বিজয নগরে গেলে রুম্পার মা নাহিদা আক্তার পারুল বলেন, আমার মেয়ে আত্মহত্যা করতেই পারে না। যদিও সে আত্নহত্যা করে থাকে, তাহলে সৈকতের মিথ্যা প্রেমের আশ্বাসের জন্যই আত্বহত্যা করেছে। আমার মেয়ের কোন শত্রু ছিল না। সৈকতই আমার মেয়ের শত্রু। আমি তার দৃষ্টান্ত মুলক শাস্তি চাই।

রুম্পার মা নাহিদা আক্তার পারুল অভিযোগ করে বলেন, বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় মাধ্যমে জানতে পারছি, সে ১৫০টা মেয়ের সাথে প্রেম করছে। প্রেমের নামে ছলনা করে সে মেয়েদের কাছ থেকে টাকা নিত। টাকা না দিলেই, সে সম্পর্ক ছিন্ন করত। তিনি বলেন, আমার মেয়ে দুই হাজার টাকা বেতনে এক বছর একটা টিউশনি করছে। গত তিন মাস যাবত আরও একটি টিউশনি করে মাসে পাঁচ হাজার টাকা পেত। কোন দিন সে আমাকে একটি টাকাও দেয়নি। বরং বিভিন্ন সময় বই খাতা কেনার জন্য অতিরিক্ত টাকা নিত। রুম্পার কাছ থেকে হয়ত সৈকত বিভিন্ন সময় টাকা নিত। কিন্তু, আমার মেয়ে সহজ-সরল তাই আমার কাছে কোন দিন কিছু বলেনি।

পুলিশ কর্মকর্তা রুম্পার বাবা রুকন উদ্দিন বলেন, বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে জানতে পারছি যে, আমার মেয়ে ছাদ থেকে লাফিয়ে আত্মহত্যা করছেন। সৈকতের চার দিনের রিমান্ডে হত্যার কোন আলামত নাকি পায়নি পুলিশ। রূম্পা আয়েশা কমপ্লেক্স ভবনের ছাদ থেকে লাফ দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। তাছাড়া আয়েশা কমপ্লেক্স ভবনের ছাদে পাওয়া পায়ের ছাপ রুম্পারই ছিল। ছাদে আর কারোর পায়ের ছাপ ছিল না। রুম্পার বাবা অভিযোগ করে বলেন, ঘটনার দিন বুধবার (৪ ডিসেম্বর) বিকাল ৪টায় রুম্পার সঙ্গে স্ট্যামফোর্ড ইউনিভার্সিটির সিদ্ধেশ্বরী ক্যাম্পাসের বাইরে সৈকতের সঙ্গে তার দেখা হয়। তখন প্রেম সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে কথা উঠলে যৌক্তিক কারণ ছাড়াই সম্পর্ক ছিন্ন করার অনুরোধ করেন সৈকত। এ নিয়ে তাদের মধ্যে বিরোধ চরম আকার ধারণ করে।

পুলিশের তদন্তের প্রেক্ষিতে রুম্পার বাবা বলেন, সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে দোষীদের খোজে বের করে দোষীদের আইনের আওতায় আনার দাবি করেন। আর যদি আমার আত্মহত্যা করে থাকে, তাহলে কেন আত্মহত্যা করল তা খোজে বের করার দাবিও জানান তিনি। জানা যায়, বিকেল ৪টায় সৈকতের সঙ্গে দেখা হওয়ার পর আয়েশা শপিং কমপ্লেক্সের ৫ম তলায় বান্ধবীর বাসায় গিয়েছিলেন রুম্পা। সেখানে তিনি অনেক কান্না করেন। এক পর্যায়ে ওই বাসা থেকে চলে আসেন।

৪ ডিসেম্বর টিউশনি শেষে বাসায় ফেরেন। এরপর বাইরে কাজ আছে বলে আবার বাসা থেকে বের হন। কিন্তু এরপর রাতে আর বাসায় ফেরেননি। স্বজনরা বিভিন্ন স্থানে খোঁজ করেও তার সন্ধান পাননি। ওই দিনই রাত পৌনে ১১টার দিকে রুম্পার লাশ ৬৪/৪ সিদ্ধেশ্বরী সার্কুলার রোডের বাসার সামনে থেকে অজ্ঞাত হিসেবে উদ্ধার করা হয়। পরে রুম্পার স্বজনরা গিয়ে লাশ শনাক্ত করে। এরপর ময়নাতদন্ত শেষে শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) ভোর ৫টায় রুম্পার লাশ গ্রামের বাড়ি ময়মনসিংহের চরনিলক্ষীয়া ইউনিয়নের বিজয়নগরে নিয়ে আসা হয়। সেখানে বেলা ১০টায় জানাজা শেষে পরিবারিক গোরস্থানে দাদী রুবিলা খাতুনের কবরের পাশে তাকে সমাহিত করা হয়।

ad

পাঠকের মতামত