সিঙ্গাপুরে প্রবাসীদের বিজয় দিবসের প্রস্তুতি
প্রবাস ডেস্ক:: দীর্ঘ নয় মাস রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের পর আমরা পেয়েছি জাতির শ্রেষ্ঠ অর্জন বিজয়। ফলে বাংলাদেশে প্রতিটি স্কুল, কলেজ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পড়া মহল্লায় সরকারি-বেসরকারিভাবে উদযাপিত হচ্ছে আমাদের এই মহান বিজয় দিবস।
প্রবাসে আসার পর কোনো জাতীয় দিবসই উদযাপন করতে পারলাম না। কিংবা উন্মুক্ত ময়দানে অভিবাসী কর্মীদের অংশগ্রহণে বিজয় দিবস উদযাপনের দৃশ্যও চোখে পড়েনি। ভিনদেশে এই দিনটি আমাদের জন্য অন্যসব সাধারণ দিনের মতোই। অথচ দেশে থাকতে দেখেছি বিজয় দিবস মানেই আনন্দ উৎসব। চারপাশ নতুন রূপের সাজ। পাড়া-মহল্লায় বেজে উঠে বিজয়ের গান। প্রবাসে এসে এসব মিস করছি। তবুও আমাদের হৃদয়ে সবসময় বাংলাদেশ অবস্থান করে। মা মাটির গন্ধ পাওয়ার নেশায় ভেতরটা নিংড়ে যায়। আমাদেরও ইচ্ছে করে প্রবাসে বিজয় দিবস উদযাপন করি। মেতে উঠি বিজয়ের আনন্দে।
যখন খবরে শুনি বিভিন্ন দেশে দূতাবাসের উদ্যোগে আমাদের জাতীয় দিবসসমূহ উদযাপিত হচ্ছে, তখন খুব আফসোস হয় কেন যে দূতাবাস থেকে বড় পরিসরে সর্ব সাধারণ শ্রমিকদের নিয়ে এই ধরনের আয়োজন করা হয় না। তাহলে হয়তো আমরাও সেখানে স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করতে পারতাম। যতটুকু আয়োজন হয় তাও হয়তো নির্দিষ্ট লোকদের নিয়ে অতি নগণ্য।
তবে বিজয় দিবস কিংবা আমাদের অন্যান্য জাতীয় দিবসগুলোয় প্রবাসে সরকারি ছুটি থাকে না। প্রতিদিনের মতো অফিসে যেতে হয়। অফিস শেষ করে বাসায় ফিরে দৈনন্দিন কাজে ব্যস্ত থাকতে হয়। ফলে এ ধরনের অনুষ্ঠান ইচ্ছে করলেও আয়োজন করা খুব কষ্টদায়ক হয়ে পড়ে। ফলে প্রবাসীরা বঞ্চিত হয় নিজ দেশের স্বাধীনতা, বিজয় দিবসের উদযাপন থেকে। বুকের এক কোণে চাঁপা পড়ে থাকে হৃদয় নিংড়ানো অনুভূতিগুলো।
তবে এ বছর নতুন সূর্যদয়ের মতো সিঙ্গাপুর প্রবাসীদের সেই আক্ষেপ দূর করার জন্য ‘মাইগ্রেন্ট ওয়াকার্স সিঙ্গাপুর’ এর উদ্যোগে ১৫ ডিসেম্বর সিঙ্গাপুরে বিজয় দিবস উদযাপনের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। বিজয় দিবস উদযাপন হবে পেঞ্জুরু রিক্রিয়েশন সেন্টারে যেখানে সর্বসাধারণের জন্য প্রবেশ উন্মুক্ত। এ ছাড়া কাছাকাছি প্রায় ৫ হাজার বাংলাদেশি অভিবাসী বসবাস করায় অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করা তাদের জন্য সহজ হবে।
বিজয় দিবসের এই আনন্দমুখর সন্ধ্যায় কথাসাহিত্যিক ওমর ফারুকী শিপনের প্রবাসীদের অনুভূতি নিয়ে লেখা ‘মাইগ্র্যান্ট লাইফ; স্টোরি অব রিভারিস্ট’ বইটির মোড়ক উন্মোচন হবে। যেই বইয়ে লেখক অত্যন্ত যত্নসহকারে তুলে এনেছেন প্রবাসীর বাস্তব জীবনের ঘটনা। ইংরেজিতে প্রকাশিত এই বইটি স্থানীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে সমাদৃত হবে বলে আশা করা যায়।
আন্তর্জাতিক অভিবাসী দিবস ও বাংলাদেশের বিজয় দিবস উদযাপনে আরও থাকছে বিভিন্ন দেশের ভিন্ন ভাষাভাষীর অভিবাসীদের অংশগ্রহণ। স্থানীয় ও বিভিন্ন দেশের অভিবাসীদের উপস্থিতিতে আমরা গাইব বিজয়ের গান। আমাদের এই বিজয় দিবস উদযাপনে গানের পাশাপাশি থাকবে মঞ্চ নাটক, নৃত্য, কবিতা আবৃত্তি ও ড্রিম এরাইবড ব্যান্ড দলের মন মাতানো সঙ্গীত পরিবেশন। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করবেন যমুনা টেলিভিশনের উপস্থাপক জুলহাজ জুবায়ের।