306155

স্বাদহীন মিসরের পেঁয়াজই এখন নিম্ন মধ্যবিত্তের ভরসা!

দুপুর আড়াইটা (সোমবার)। আজিমপুর পুরাতন কবরস্থানের উত্তর গেটের অদূরে টিসিবির (ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ) ট্রাকে বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৪৫ টাকা দরের পেঁয়াজ। লাইনে দাঁড়ানোদের মধ্যে অনেকের বেশভুষা ও কথাবার্তায় টিসিবির সস্তা দামের পেঁয়াজ কেনার মতো নয়, তা সহজেই বোঝা যায়। তাদের কারও পরনে ইস্ত্রি করা শার্ট-প্যান্ট ইনকরা, গলায় টাই ঝুলানো ও হাতে দামি মোবাইল ফোন।

লাইনে অপেক্ষমানদের কেউ কেউ দেখে ফেলার আশঙ্কায় মুখ ঢেকে রাখছেন। দীর্ঘ লাইন সামলাতে তরুণদের কেউ কেউ ব্যারিকেড দিয়ে সবাইকে লাইনে আসার অনুরোধ জানান। কেউ কেউ লাইন ভেঙে সরাসরি ট্রাকের এপাশ ওপাশ থেকে উঁকি দিয়ে পেঁয়াজ কেনার চেষ্টা করতেই অন্যরা চেঁচিয়ে উঠছিলেন।

ট্রাকে পেঁয়াজ বিক্রেতা আবু হানিফ জানান, তারা মিসর থেকে আমদানি করা দৈনিক ১ হাজার ৬ কেজি (১ টন) পেঁয়াজ রাজধানীর বিভিন্ন স্পটে বিক্রি করেন। ৪৫ টাকা কেজি হলেও খুচরা টাকার ঝামেলা এড়াতে ১ কেজি ১০০ গ্রাম ৫০ টাকায় এবং ২ কেজি ২০০ গ্রাম পেঁয়াজ ১০০ টাকায় বিক্রি করছেন।

সরেজমিনে টিসিবি ট্রাক পরিদর্শন ও ক্রেতাদের সঙ্গে আলাপকালে জানা গেছে, আকারে বেশ বড় সাইজের পেঁয়াজগুলো খেতে দেশি পেঁয়াজের মতো স্বাদ নেই। তবে দাম কম হওয়ায় (দেশি পেঁয়াজ ২০০-২৩০ টাকা কেজি) মিসরের পেঁয়াজ খেতে তারা বাধ্য হচ্ছেন।

পেঁয়াজ কেনার জন্য লাইনে অপেক্ষমাণ মনির নামে এক যুবক জানান, আজিমপুর নতুন পল্টন লাইনে তাদের নিজস্ব বাড়ি রয়েছে। মাস দুয়েক ধরে পেঁয়াজের মূল্যবৃদ্ধি পাওয়ায় সংসারের খরচ বেড়ে গেছে। মিসরের পেঁয়াজ খেতে সুস্বাদু না হলেও অপেক্ষাকৃত কম দামে বিক্রি হতে দেখে ট্রাক থেকে পেঁয়াজ কিনতে লাইনে দাঁড়িয়েছেন তিনি।

বাবু নামের মধ্য বয়সী এক ব্যক্তি টিসিবির পেঁয়াজ বিক্রেতাকে বলছিলেন, ‘গতকাল (রোববার) দুই কেজি পেঁয়াজ নিয়েছিলাম। চারভাগের এক ভাগ পচা পড়েছে।’ উত্তরে দোকানি জানান, তাদের কিছুই করার নেই।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের এক ছাত্রী জানান, দামে সস্তা হওয়ায় এক কেজি পেঁয়াজ কিনতে লাইনে দাঁড়িয়েছেন। সহপাঠীকে জিজ্ঞাসা করছিলেন, দীর্ঘ লাইনে কখন তার সিরিয়াল আসবে।

ad

পাঠকের মতামত