306224

ভারতীয়দের অনুপ্রবেশ ঠেকাতে রাত জেগে পাহারায় বিজিবি-গ্রামবাসী

ভারত থেকে অনুপ্রবেশ ঠেকাতে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সঙ্গে রাজশাহীর চরখানপুর সীমান্ত পাহারা দিচ্ছেন গ্রামবাসী। সীমান্তে নজরদারি জোরদার করার জন্য চরখানপুর গ্রামের প্রায় আড়াই শ বাসিন্দা রাত জেগে পালাক্রমে এই কাজ করছেন গত ২৮ নভেম্বর থেকে।

এখনও ভারতীয়দের এই অনুপ্রবেশ থামছে না। বরং আরও বাড়ছে। প্রায় প্রতিদিনই কোন না কোন সীমান্ত দিয়ে ‘কথিত বাংলাদেশি অ্যাখ্যা’ দিয়ে মানুষকে ঢুকাচ্ছে প্রতিবেশি এই দেশটির সীমান্তরক্ষীরা।

এদিকে এই অনুপ্রবেশ ঠেকাতে বেশ তৎপর রয়েছেন বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ-বিজিবির সদস্যরা। বিজিবির পাশাপাশি সীমান্তবর্তী গ্রামগুলোতে গ্রাম পুলিশও টহল দিচ্ছে।

বিজিবির সাথে রাত জেগে পাহারা দিচ্ছে সীমান্তবর্তী গ্রামবাসীও। রাজশাহী সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করতে পারে, এমন শঙ্কা থেকে রাত জেগে বিজিবির সঙ্গে সীমান্ত পাহারা দিতে দেখা গেছে জেলার চরখানপুর গ্রামের আড়াইশ বাসিন্দাদের। সন্ধ্যা ছয়টা থেকে সকাল ছয়টা পর্যন্ত সীমান্ত পাহারায় থাকছেন গ্রামবাসী।

সীমান্ত এলাকায় বসবাসরত মানুষদের নিয়ে নিয়মিত মতবিনিময় করে জনসচেতনতা বাড়ানোর কাজ করছে বিজিবি। গত ২৮ নভেম্বর চরখিদিরপুরে গ্রামবাসীর সঙ্গে বৈঠকে বসেন রাজশাহী ১ বিজিবি ব্যাটালিয়নের চরখানপুর সীমান্ত ফাঁড়ির সদস্যরা।

গ্রামবাসীরা জানান, বৈঠকে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য এরশাদুল হক ও কোহিনুর বেগমসহ সীমান্তের তিন গ্রামবাসী অংশগ্রহণ করেন। বৈঠকে ফাঁড়ির নায়েক সুবেদার নজরুল ইসলাম সীমান্তে ভারতীয়দের অনুপ্রবেশ ঠেকাতে গ্রামবাষীর সহায়তা চান। বিজিবির আহবানে সাড়া দিয়ে গ্রামবাসীরা ওইদিন রাত থেকে সীমান্তে পাহারা শুরু করেন। প্রতিদিন সন্ধ্যা ছয়টা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত একদল গ্রামবাসী সীমান্ত পাহারা দিচ্ছেন। আরেক দল পাহারায় নামছেন রাত ১২টা থেকে পরদিন ভোর ছয়টা পর্যন্ত। গ্রামবাসীকে উৎসাহ দিতে খাবারের ব্যবস্থা করেছে বিজিবি।

জানা গেছে, মূলত এনআরসি ও নিপীড়ন আতঙ্কের কারণেই তারা চোরাই পথে বাংলাদেশে ঢুকে পড়ছে। যারা অবৈধভাবে সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করছে এদের মধ্যে বেশির ভাগই মুসলমান। এরা এনআরসি আতঙ্ক ও স্থানীয় নির্যাতনে দেশ ছেড়ে চলে আসছেন। তারা আর ভারতে যাবেন না বলে বিজিবির কাছে জানিয়েছেন। সহায়-সম্বল নিয়ে তারা এদেশে চলে এসেছেন।

আটক হওয়া ব্যক্তিদের বেশিরভাগই ভারতের কর্ণাটক রাজ্যের রাজধানী বেঙ্গালুরুর বাসিন্দা। পশ্চিমবঙ্গের মানবাধিকারকর্মী রঞ্জিত সুরের অভিযোগ, ‘ভয়াবহ ঘটনা। কর্নাটক সরকার দেশের আইন-সংবিধান সব লঙ্ঘন করেছে। কাউকে এ ভাবে পুশব্যাক করা যায় নাকি! কোনও মামলা নেই ওদের বিরুদ্ধে। পুলিশ কী করে নিশ্চিন্ত হল ওরা বাংলাদেশি? ওরা পশ্চিমবাংলার বাঙালিও হতে পারে। পুলিশকে বাংলাদেশি নির্ধারণের ক্ষমতা কে দিল? কোন আইনে? পুশব্যাকের অর্ডার কে দিল? কোর্টের আদেশ ছাড়া পুশব্যাক কখনওই করা যায় না।’

ad

পাঠকের মতামত