306021

চলন্ত ট্রেনে শিশুর জন্ম, নাম রাখা হলো ‘লালমনি’

ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা আন্তঃনগর ‘লালমনি এক্সপ্রেস’ ট্রেনে এক শিশুর জন্ম হয়েছে। শিশুটির নাম রাখা হয়েছে ‘লালমনি’।গতকাল শনিবার সকালে প্রসূতি মা ও ফুটফুটে শিশুটি বাড়িতে এলে গ্রামের মানুষ তাদের ফুল দিয়ে বরণ করে নেয়।

অভাবের তাড়নায় লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলার চলবলা ইউনিয়নের তেঁতুলিয়া গ্রামের ছকমাল মিয়া স্ত্রী নবিয়া বেগমকে নিয়ে প্রায় দুই বছর আগে ঢাকায় পাড়ি জমান। স্ত্রী নবিয়া নির্মাণ শ্রমিক আর স্বামী দিনমজুরের কাজ করে একই সঙ্গে ভাড়া বাড়িতে থাকেন। ঢাকার ক্লিনিকে সন্তানসম্ভবা স্ত্রীর অপারেশন করার মতো সামর্থ্য না থাকায় স্বামী সিদ্ধান্ত নেন গ্রামে গিয়ে স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করবেন ‍স্ত্রীকে।

রোববার স্বামী-স্ত্রী দুজনই টিকিট কেটে লালমনিরহাটগামী আন্তঃনগর ‘লালমনি এক্সপ্রেস’ ট্রেনে ওঠেন। ট্রেনেই নবিয়ার প্রসব ব্যথা উঠলে কান্নাকাটি করতে থাকেন। তখন ট্রেন পাবনার ঈশ্বরদী এলাকায়। গভীর রাতে আশপাশে ট্রেন থামার মতো কোনো রেলস্টেশন ছিল না। এক পর্যায়ে ভোর ৪টার দিকে ট্রেনের মধ্যেই একটি ফুটফুটে শিশুর জন্ম হয়।

গত সোমবার সকালে বগুড়া স্টেশনে আন্তঃনগর ‘লালমনি এক্সপ্রেস’ ট্রেনটি পৌঁছালে স্থানীয়দের সহযোগিতায় সন্তানসহ প্রসূতিকে বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। টানা পাঁচ দিন চিকিৎসার পর গতকাল শনিবার সকালে গ্রামের বাড়িতে এলে বাড়ির লোকজন প্রসূতি মা ও সন্তানকে বরণ করে নেয়। সেখানে শিশুটির নাম রাখা হয় ইব্রাহীম হোসেন লালমনি।

শিশুটির বাবা ছকমল মিয়া বলেন, ‘আমার সন্তানকে শিক্ষিত হয়ে রেলওয়েতে চাকরি করতে বলব। স্টেশনের মানুষ না এগিয়ে এলে আমার সন্তানকে বাঁচাতে পারতাম না।’

চলবলা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান মিজু বলেন, ‘বিষয়টি জানার পর দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে প্রসূতি ও তার সন্তানকে দেখেছি। তারা এখন অনেক ভালো আছেন। ৯৯৯ নম্বরে ফোন এবং রেল কর্মকর্তাদের জন্য মা ও শিশুর জীবন বেঁচে গেল।’

ad

পাঠকের মতামত