305242

‘কমছে’ পেঁয়াজের দাম

দফায় দফায় দাম বেড়ে রাজধানীর কাঁচাবাজারে এখন সব থেকে বেশি দামের পণ্যের তালিকায় সবার ওপরে স্থান করে নিয়েছে পেঁয়াজ। পেঁয়াজ যেন অপ্রতিরোধ্য। সপ্তাহের ব্যবধানে তিন দফায় কেজিতে ১২০ টাকা বেড়ে গতকাল শনিবার দেশি পেঁয়াজের দাম দাঁড়ায় ২৬০ টাকায়। গলির দোকানে গতকাল ২৭০ টাকা কেজিতেও পেঁয়াজ বিক্রি হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।

তবে আজ রোববার ১৫ থেকে ২০ টাকা কমে দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ২৪০ টাকা কেজি। দেশি হাইব্রিড পেঁয়াজ ২০০ টাকা এবং মিশরের পেঁয়াজ ১৮০ টাকা কেজি বিক্রি হতে দেখা গেছে। রোববার (১৭ নভেম্বর) রাজধানীর জিগাতলা, কারওয়ান বাজার এবং রায়েরবাজার ঘুরে পেঁয়াজের দামে এমন চিত্র দেখা গেছে।

জিগাতলা কাঁচাবাজারে পেঁয়াজ বিক্রেতা আইনাল হক আজ দেশি ভালো মানের পেঁয়াজ প্রতিকেজি ২৪০ টাকা দরে বিক্রি করছেন। গতকাল যার দাম ছিল ২৬০ টাকা। মিশরের বড় বড় সাইজের পেঁয়াজ বিক্রি করছেন ১৮০ টাকায়, যা গতকাল বিক্রি করেছেন প্রতিকেজি ২০০ টাকায়।

তিনি বলেন, ‘আজ ভোরে শ্যামবাজার থেকে প্রতিকেজি ১৮ টাকা কমে পেঁয়াজ কিনতে পেরেছি, তাই ২০ কমে বিক্রি করতে পারছি।’ তবে এতেও তিনিসহ ক্রেতারা কেউ সন্তুষ্ট নয়। কারণ ৩০-৪০ টাকার পেঁয়াজ এখনও বিক্রি করতে হচ্ছে ২৪০ টাকায় ।

কারওয়ান বাজারের খুচরা পেঁয়াজ বিক্রেতা সামিউল হক বলেন, গতকালকের তুলনায় আজকে সব ধরনের পেঁয়াজের দাম ১৫ থেকে ২০ টাকা কমেছে। আজকে তিনি দেশি ভালো মানের পেঁয়াজ বিক্রি করছেন প্রতিকেজি ২৩০ টাকায়। গতকাল যা বিক্রি করেছিলেন ২৫০ টাকায়। দেশি হাইব্রিড পেঁয়াজ বিক্রি করছেন ২০০ টাকায়, গতকাল যা ছিল ২২০ টাকা; পাকিস্তানি প্রতিকেজি পেঁয়াজ বিক্রি করছেন ১৮০ টাকায়, গতকাল ছিল ২০০ টাকা।

কারওয়ান বাজারের আড়তদার মেসার্স মাতৃভান্ডারের মালিক কালাম শেখ জাগো নিউজকে বলেন, গতকালকের তুলনা আজ পাইকারি বাজারে সব ধরনের পেঁয়াজের দাম ১০ থেকে ১৫ টাকা কম। তাই এর প্রভাব খুচরা বাজারেও পড়েছে।

কারওয়ান বাজারের আড়তদার মমতাজ এন্টারপ্রাইজের মালিক কাজী মো. মোস্তফা জাগো নিউজকে বলেন, ‘আমি পাবনা, ফরিদপুর আর রাজবাড়ীর পেঁয়াজ বিক্রি করে থাকি। এসব দেশি পেঁয়াজের দাম একটু বেশি থাকে। গতকাল ও আজ পাবনার বাজারে পেঁয়াজের দাম কিছুটা কম।’

তিনি বলেন, ‘ইতোমধ্যে পাতা পেঁয়াজ ওঠা শুরু করেছে। আর এ মাসের শেষের দিকেই পেঁয়াজ ওঠা শুরু করবে। তখন প্রতিদিন কেজিতে ১০ থেকে ২০ টাকা কমতে শুরু করবে।’

তবে পেঁয়াজের এমন লাগামহীন দামে ক্ষোভ ক্রেতাদের মাঝে। পেঁয়াজের বাজার কারা নিয়ন্ত্রণ করছে সে প্রশ্ন সাধারণ মানুষের। মিয়ানমার থেকে কম পেঁয়াজ কেনার পরেও দেশে কোন অজুহাতে এত দাম সে প্রশ্নও ক্রেতাদের। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্টদের এ ব্যাপারে পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান তাদের।

উল্লেখ্য, দাম কম ও সহজ পরিবহনের কারণে প্রতিবেশী দেশ ভারত থেকে প্রয়োজনীয় পেঁয়াজ আমদানি করা হয়। তবে এ বছর ভারতের মহারাষ্ট্র ও অন্য এলাকায় বন্যার কারণে পেঁয়াজের ফলন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ফলে কিছুদিন আগে রফতানির ক্ষেত্রে ভারত প্রতি মেট্রিক টন পেঁয়াজের মিনিমাম এক্সপোর্ট প্রাইস (এমইপি) নির্ধারণ করে দেয়।

গত ২৯ সেপ্টেম্বর থেকে ভারত কর্তৃপক্ষ পেঁয়াজ রফতানি বন্ধ ঘোষণা করে। বিকল্প হিসেবে বাংলাদেশ মিয়ানমার থেকে এলসি এবং বর্ডার ট্রেডের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় পেঁয়াজ আমদানি শুরু করেছে। পাশাপাশি মিশর ও তুরস্ক থেকেও এলসির মাধ্যমে পেঁয়াজ আমদানি শুরু করা হয়। সম্প্রতি মিয়ানমারও পেঁয়াজের মূল্য বৃদ্ধি করেছে। ফলে বাংলাদেশের বাজারেও মারাত্মকভাবে এর প্রভাব পড়েছে।

ad

পাঠকের মতামত