304958

৭ বছর পর শ্রমিকলীগের সম্মেলন: বির্তকিতদের স্থান না দেয়ার দাবী নেতা কর্মীদের

স্টাফ রিপোর্টারঃ দুনীতিবাজ ও অনুপ্রবেশকারীরা যেন কেন্দ্রীয় কমিটিতে জায়গা না পায়, সে দিকে খয়াল রেখে পরিশ্রন্ন ও ক্লিন ইমেজের লোকদের দিয়ে কেন্দ্রীয় কমিটি গঠনের আহবান জানিয়েছেন সাধারণ নেতা কর্মিরা। সাধারণ নেতা কর্মিদের অভিযোগ সর্বশেষ ২০১২ সালের জাতীয় শ্রমিক লীগের কমিটি গঠনে মোটা অংকের টাকা নিয়ে বিতর্কিতদের স্থান দেয়া হয়েছিল।

সভাপতি শুক্কুর মাহামুদ বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে, অর্থের বিনিময়ে বিভিন্ন শাখা কমিটির অনুমোদন। সাধারণ সম্পাদককে না জানিয়ে কমিটি অনুমোদন, জামায়াত ও বিএনপি’র লোকদের কমিটিতে স্থান করে দেয়া। তিনি কেন্দ্রীয় কমিটিতে সভাপতি হওয়ার পরও নারায়ণগঞ্জ জেলা কমিটিতে সভাপতি রয়েছেন। বয়স ৭০ এর কৌটায়। সম্পদের পাহাড় গড়েছেন।

সাধারণ সম্পাদক মোঃ সিরাজুল ইসলাম, ৮/১০ বছর আগে জনতা ব্যাংকের চাকরি থেকে অবসরে গেলেও জনতা ব্যাংক সিবিএ উপদেষ্টা পদে রয়েছেন। ব্যাংকের ২২ তলায় সুসজ্জিত অফিস সাজিয়ে পুরো ব্যাংক নিয়ন্ত্রণ করছেন। নিয়োগ, বদলী ও বড় লোন পাইয়ে দেয়া থেকে শুরু করে সকল অনৈতিক তার প্রভাব রয়েছে। টাকার বিনিময়ে কমিটি অনুমোদন দেয়ার অভিযোগ রয়েছে।

শাজাহান খান এমপি, বর্তমান কমিটিতে সহসভাপতি । ছিলেন নৌপরিবহন মন্ত্রী। মন্ত্রী থাকা অবস্থায় বিভিন্ন দূর্নীতি, পরিবহন সেক্টরে নৈরাজ্য, কোটি কোটি টাকার চাঁদাবাজির অভিযোগ রয়েছে।

সরদার মোতাহার উদ্দিন বর্তমান ও পাট কলের নেতা, শারীরিকভাবে খুবই অসুস্থ। থাকেন খুলনায় সংগঠনের কর্মকান্ডে সময় দিতে পারেন না।
এস এম কামরুজ্জমান চুন্নু বর্তমান কমিটির সহসভাপতি পাটকলের নেতা। থাকেন যশোরে জেলা শহরে। গত পৌরসভা নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে ভোট করার কারণে জাতীয় শ্রমিক লীগের কেন্দ্রীয় কমিটি থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।

মোল্যা আবুল কালাম, বর্তমান কমিটির সহসভাপতি ও পানি উন্নয়ন বোর্ড শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের উপদেষ্টা। করতেন বিএনপির শ্রমিক সংগঠন পরে যোগ দেন জাতীয় পার্টির শ্রমিক সংগঠনে। দুই সংগঠনে সুবিধা করতে না পেরে আসেন আওয়ামী লীগের শ্রমিক সংগঠনে। শত শত কোটি টাকার মালিক। দুদকে অভিযোগ তদন্ত চলছে। বয়স ৭০ এর কাছাকাছি।

প্রকৌশলী এজাজুল হক, বর্তমান কমিটির সহসভাপতি। বিটিসিএল এর প্রথম শ্রণির কর্মকর্তা। শ্রমিক না হয়েও শ্রমিক লীগ নেতা। নেই শ্রমিকদের সাথে সম্পর্ক।

মোঃ জহিরুল ইসলাম চৌধুরী, বর্তমান কমিটির সহসভাপতি। বিদুৎ উন্নয়ন বোর্ড সিবিএ সভাপতি। কর্মচারী হিসাবে অবসরে গেলেও তিনি এখনও সিবিএ নেতা। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে দূর্নীতির মাধ্যমে পাহাড় সমান সম্পদশালী হয়েছেন। দুদকে অভিযোগ তদন্তাধীন।

এ্যাডভোকেট হুমায়ুন কবির বর্তমান কমিটির যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক তিনি বাংলাদেশ রেলওয়ে সিবিএ নেতা অবসরে গেছেন অনেক আগে। শারীরিক ভাবে পঙ্গু অন্যের সাহায্যে ছাড়া চলতে পারে না। তবুও তিনি রেলওয়ের মতো গুরুত্বপূর্ণ জায়গার সিবিএ সভাপতি। তার বিরুদ্ধে দুদক এ অভিযোগ চলমান। তিনি এবার সাধারণ সম্পাদকের পদে প্রার্থী।

খান সিরাজুল ইসলাম বর্তমান কমিটির যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক এছাড়া তিনি শিল্প মন্ত্রণালয়ের অধীন বাংলাদেশ ইস্পাত ও প্রকৌশল করপোরেশন (বিএসইসি) সিবিএ’র সভাপতি। তার বিরুদ্ধে নিয়োগ, পদোন্নতি ও বদলী বাণিজ্য করে কোটি কোটি টাকা ও বহু নামে বেনামে সম্পদের মালিক হওয়ার অভিযোগের বিষয়ে দুদকে তদন্ত চলমান। তিনিও এবার সাধারণ সম্পাদক পদে প্রার্থী।

মু শফর আলী, যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক। তার কোন বেসিক শ্রমিক ইউনিয়ন নাই। থাকেন চট্টগ্রামে। অভিযোগ রয়েছে চট্টগ্রামে শ্রমিক রাজনীতিকে তিনি বিভাজন করে রেখেছেন। তিনি চট্টগ্রামের মেয়রের সানিধ্যে থেকে ব্যাক্তি সুবিধা নিয়ে সম্পদশালী হয়েছেন।

কে এম আযম খসরু, বর্তমান কমিটির প্রচার সম্পাদক। অনুপ্রবেশকারী হিসেবে চিন্হিত। তিনি ছিলেন জাতীয় পার্টির শ্রমিক সংগঠন সোনালী ব্যাংক কর্মচারী এসোসিয়েশন রেজিঃ ২০৯০ এর সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। আট বছর আগে অবসরে, কেন্দ্রীয় এক আওয়ামী লীগ নেতার আত্মীয়তার সুবাদে হয়েছেন শ্রমিক লীগের কেন্দ্রীয় নেতা।

মোঃ আমিনুল ইসলাম, বর্তমান কমিটির দফতর সম্পাদক ও ডিপিডিসির সিবিএ সভাপতি। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ তিনি অনুপ্রবেশকারী। তিনি ছিলেন বিএনপির শ্রমিক সংগঠন ঢাকা বিদুৎ বিতরণ কর্তৃপক্ষ শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়ন রেজিঃ নং ১৭৯৫, এর সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন। বিএনপি রাজনীতি থেকে রাতারাতি খোলস পাল্টেনো আমিনুল সামান্য মিটার হয়ে ২ জন গানম্যানসহ নিউ মডেলের প্রাডো গাড়ী ( ঢাকা মেট্রো- ঘ ১১-৪৫০৪৭) নিয়ে চলাফেরা করেন। অভিযোগ রয়েছে মিটার রিডার পদে থেকে হাজার কোটি টাকার মালিক হয়েছেন। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ দুদকে তদন্তাধীন।

সুলতান আহমেদ বর্তমান কমিটির অর্থ বিষয়ক সম্পাদক। এছাড়া তিনি পানি উন্নয়ন বোর্ড সিবিএ সাধারণ সম্পাদক। তার বিরুদ্ধে পানি উন্নয়ন বোর্ডের টেন্ডার নিয়ন্ত্রণ ও পাউবোর অবৈধ জমি দখলদারদের শেল্টার দিয়ে কোটি কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুদকে অভিযোগ তদন্ততাধীন।

এ টি এম ফজলুল হক, ক্র্যাফট ফেডারেশন বিষয়ক সম্পাদক। বন শিল্পের সিবিএ নেতা। শুরুটা বিএনপি পরে জাতীয় পার্টির শ্রমিক সংগঠন , সরকার বদলের পর পর দল পাল্টিয়ে এখন আওয়ামী লীগের শ্রমিক সংগঠনে। ২০১০ সালে আওয়ামী লীগে এসেই ২০১২ সালে এক লাফে কেন্দ্রীয় কমিটির সম্পাদকীয় পদে। বনে রাজাদের
একাকার হয়ে গড়েছেন সম্পদের পাহাড়।

কাউসার আহমেদ পলাশ , শ্রমিক উন্নয়ন ও কল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক। কেন্দ্রীয় কমিটির সম্পাদকীয় পদে থেকেও নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা এলাকার শ্রমিক লীগ আঞ্চলিক কমিটির সভাপতি। পরিবহন সেক্টরে চাঁদাবাজি থেকে শুরু করে বাড়ি দখল এমন কোন অবৈধ কাজ নেই যা সে করেনা।
তার কর্মকান্ডে এলাকা বাসী অতিষ্ঠ।

এভাবে জাতীয় শ্রমিক লীগের ৩৫ সদস্যের কেন্দ্রীয় কমিটির প্রত্যেক সদস্যের সম্পদের খোঁজ নিলে একজন ক্লিন ইমেজের খুজে না পাওয়া যাবে না। এর মধো অন্তত অর্ধেক রয়েছেন অনুপ্রবেশকারী।
সাধারণ নেতা কর্মীদের দাবী আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ঘোষিত অনুপ্রবেশকারী, দূর্নীতি মুক্ত কমিটি এবং শিক্ষিত ক্লিন ইমেজের নেতা দিয়ে কমিটি গঠন করা হোক।

ad

পাঠকের মতামত