304918

নিউইয়র্কে খোকার জানাজায় মানুষের ঢল, মসজিদের ভেতরেই বিক্ষোভ

অবিভক্ত ঢাকা সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র ও বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান সাদেক হোসেন খোকার জানাজা যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে অনুষ্ঠিত হয়েছে। স্থানীয় সময় সোমবার রাতে এশার নামাজের পর কুইন্সের জ্যামাইকা মুসলিম সেন্টারে তার জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।

নিউইয়র্কে খোকার জানাজায় সর্বস্তরের মানুষের ঢল নামে। জানাজার ইমামতি করেন জ্যামাইকা মুসলিম সেন্টারের খতিব মাওলানা মির্জা আবু জাফর বেগম। জানাজায় যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির নেতাকর্মী ছাড়াও দলমত নির্বিশেষে অসংখ্য প্রবাসী বাংলাদেশি সাদেক হোসেন খোকার জানাজায় অংশ নেন।

মসজিদের প্রতিটি তলা কানায় কানায় ভরে ওঠে। মসজিদে জায়গা না হওয়ায় আশেপাশের সড়কেও তার জানাজায় অংশ নেন শত শত মানুষ। এসময় বিশিষ্টজনদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন অ্যাটর্নি মঈন চৌধুরী, কাজী নয়ন, ডা. ওয়াদুদ ভূইয়া, ডা, ওয়াজেদ এ খান, বেদারুল ইসলাম বাবলা, এমাদ চৌধুরী প্রমুখ।

নিউইয়র্কের আশপাশের রাজ্য থেকেও খোকার জানাজায় অংশ নিতে এসেছিলেন প্রবাসীরা। স্বল্প সময়ের নোটিশে অনুষ্ঠিত জানাজায় প্রবাসীদের ঢল নামে। এসসময় বিএনপি নেতা এম এ সালাম বলেন, ‘খোকা ছিলেন সর্বস্তরের মানুষের প্রিয় একজন নেতা, এটা তারই প্রমাণ।’

নিউইয়র্কে খোকার জানাজায় অংশ নেন বাংলাদেশ কনস্যুলেটের ফার্স্ট সেক্রেটারি শামীম হোসেন। তিনি বক্তব্য শুরুর করতেই মসজিদে উপস্থিত যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির হইচই-চেঁচামেচি শুরু করেন। একই সঙ্গে বিএনপি নেতা খোকার পাসপোর্ট নবায়ন না করার প্রতিবাদ জানান তারা। বেশ কয়েক মিনিট মসজিদের ভেতরে কনস্যুলেটের বিরুদ্ধে তুমুল প্রতিবাদ চলতে থাকলে পরে ফার্স্ট সেক্রেটারি তার বক্তব্য শেষ করে দেন।

বিএনপি নেতা মো. আব্দুস সালাম, জ্যামাইকা মুসলিম সেন্টারের সাধারণ সম্পাদক মনজুর আহমদ চৌধুরী এবং সাদেক হোসেন খোকার ছেলে প্রকৌশলী ইশরাক হোসেন সবাইকে শান্ত থাকার অহ্বান জানান।

খোকার ছেলে ইশরাক হোসেন বলেন, ‘নিউইয়র্ক কনস্যুলেট পাসপোর্ট নবায়ন না করলেও বাবা মা’রা যাওয়ার সংবাদ জানার সঙ্গে সঙ্গে কনস্যুলেট দ্রুত বাবার মরদেহ দেশে নিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে প্রয়োজনীয় সহায়তা দিয়েছে। এজন্যে আমি কনস্যুলেটের কর্মকর্তাদের ধন্যবাদ জানাচ্ছি।’

ইশরাক হোসেন বলেন, ‘আপনারা আমার বাবার জন্য যা করেছেন আমার পরিবার তা মনে রাখবে।’ এসময় সাদেক হোসেন খোকার ছোট ছেলে ইশফাক হোসেনও তার পাশে ছিলেন।

জ্যামাইকা মুসলিম সেন্টারে জানাজার আগে মুক্তিযোদ্ধা সাদেক হোসেন খোকার কফিনে শেষ শ্রদ্ধা নিবেদন করে শ্রদ্ধা জানান সেক্টর কমান্ডারস ফোরাম, যুক্তরাষ্ট্র শাখার নেতৃবৃন্দ। তারা জাতীয় পতাকা দিয়ে ঢাকার এ মুক্তিযোদ্ধার কফিন আচ্ছাদিত করে দেন।

সন্মান প্রদর্শনে অংশগ্রহণকারী মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে ছিলেন, সংগঠনের সভাপতি রাশেদ আহমেদ, সাধারণ সম্পাদক রেজাউল বারী বকুল, সহসভাপতি আবুল বাশার চুন্নু ও কার্যকরী সদস্য লাবলু আনসার, মুক্তিযোদ্ধা বাবরউদ্দিন, সুরুজ্জামান, আব্দুল মুকিত চৌধুরী প্রমুখ।

এর আগে, স্থানীয় সময় রোববার দিবাগত রাত ২টা ৫০ মিনিটে (বাংলাদেশ সময় সোমবার দুপুর ১টা ৫০ মিনিট) নিউইয়র্কের ম্যানহাটনের ‘মেমোরিয়াল স্লোয়ান ক্যাটারিং ক্যান্সার সেন্টারে’ মা’রা যান সাদেক হোসেন খোকা। মৃত্যকালে তার বয়স হয়েছিল ৬৭ বছর। চিকিৎসার জন্য ২০১৪ সালের ১৪ মে মাসে সাদেক হোসেন খোকা সপরিবারে যুক্তরাষ্ট্রে এসেছিলেন।

এদিকে স্থানীয় সময় মঙ্গলবার রাতে সাদেক হোসেন খোকার লাশ বাংলাদেশে পাঠানোর সব প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকালে তার লাশ ঢাকায় পৌঁছনোর কথা রয়েছে। অন্তিম ইচ্ছা অনুযায়ী ঢাকার জুরাইন কবরস্থানে মায়ের কবরের পাশে সমাহিত করা হবে তাকে।

ad

পাঠকের মতামত