304637

বেশি করে করলা খান, রক্তরোগ-হৃদরোগসহ ১০টি দূরারোগ্য ব্যাধি থেকে বাঁচুন

লাইফস্টাইল ডেস্ক : পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে করলাকে ডায়াবেটিস, অ্যাজমা, অ্যালার্জি, পেটের সমস্যা, কৃমির সমস্যায় মেডিসিনের পরিবর্তে ব্যবহার করা হয়।

করলার পুষ্টিগুণ

ইউএসডিএর তথ্য অনুযায়ী, প্রতি ১০০ গ্রাম করলায় ক্যালরি রয়েছে ৩৪, সোডিয়াম রয়েছে ১৩ মিলিগ্রাম, পটাশিয়াম রয়েছে ৬০২ মিলিগ্রাম, মোট শর্করা রয়েছে ৭ গ্রাম এবং প্রোটিন রয়েছে ৩.৬ গ্রাম। এছাড়া, ফাইবার, ভিটামিন-এ, সি, ফোলিক এসিড, জিঙ্ক বায়োটিন, বিটা-ক্যারোটিন এবং অন্যান্য পুষ্টি উপাদান তো রয়েছেই।

করলার উপকারিতা

১ ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে

করলায় এক ধরনের কেমিক্যাল রয়েছে যা ইনসুলিনের মতো কাজ করে। ফলে রক্তের শর্করা নিয়ন্ত্রণে রাখতে ডায়াবেটিস রোগীরা নিয়মিত করলার সবজি বা জুস খেতে পারেন। এতে, অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিসও নিয়ন্ত্রণে থাকবে।

২ হজমে সাহায্য করে

পেট ঠিক তো দুনিয়া ঠিক। সুতরাং, যাদের প্রায়শ পেটের গণ্ডগোল লেগেই থাকে তারা প্রতিদিন করলা খাবেন। কেননা, করলা অন্ত্র এবং পাকস্থলীর নানা সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে। নিয়মিত, তিতা জাতীয় খাবার খেলে পরিপাক ক্রিয়া ভালো থাকে।

৩ অ্যাজমা দূর করতে সাহায্য করে

করলা এমন একটি সবজি যাতে, অ্যান্টি-ভাইরাল, অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি এবং অ্যান্টি-হিস্টামিনিক প্রোপার্টিস রয়েছে। যা, রেসপাইরেটরি হেলথকে ভালো রাখতে সাহায্য করে। ফলে অ্যাজমা বা শ্বাসকষ্টের সমস্যা থেকে মুক্ত রাখে।

৪ রক্ত পরিশোধন করে

করলায় অ্যান্টি-ব্যাক্টেরিয়াল এবং অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট প্রোপার্টিস রয়েছে যা দেহ থেকে টক্সিন পদার্থসমূহ বের করে দিতে সাহায্য করে। এছাড়া, রক্তে যে দূষিত পদার্থসমূহ থাকে তা পরিশোধনের মাধ্যমে ত্বকের নানা রোগ প্রতিরোধ করে। ফলে, ব্রন, একনে বা একজিমার মতো সমস্যা দূর হয়।

৫ চোখের সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে

করলায় উচ্চ পরিমানে বিটা-ক্যারোটিন রয়েছে যা চোখের বিভিন্ন সমস্যা দূর করার জন্য ভীষণ কার্যকর। নিয়মিত, করলা খেলে দৃষ্টিশক্তি বাড়ে। পাশাপাশি, চোখের অন্যান্য সমস্যার জন্য করলা খুব উপকারী।

৬ চুলের যত্নে কার্যকর

# যারা, চুলের বিভিন্ন সমস্যায় ভুগছেন তারা করলা রান্না করে খাওয়ার পাশাপাশি, করলার রস পুরো মাথার তালু এবং চুলে লাগালে উপকার পাবেন। বিশেষ করে ড্রাই এবং রাফ চুলের ক্ষেত্রে। করলায় থাকা ভিটামিন-এ, সি, বায়োটিন এবং জিংক চুলের জন্য গুরুত্বপূর্ণ পুষ্টি উপাদান।

# যাদের চুল তৈলাক্ত তারা করলার রসের সঙ্গে সাদা ভিনেগার মিশিয়ে সপ্তাহে ২ দিন চুলে লাগালে তৈলাক্ত ভাব চলে যাবে।

# যাদের খুব অল্প বয়সে চুল পেকে যাচ্ছে তারা সপ্তাহে এক দিন ফ্রেশ করলার রস লাগালে চুল পাকার হার কমে যাবে।

৭ ওজন কমাতে সাহায্য করে

নিয়মিত করলা খেলে বাইল এসিড নিঃসরণে লিভার উদ্দীপ্ত হয়। আর, এই বাইল এসিড ফ্যাট মেটাবলিজমের জন্য অপরিহার্য। পাশাপাশি, করলায় থাকা অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট বডির টক্সিন সমূহকে বের করে দেয়। ফলে ডাইজেস্টিভ সিস্টেম ভালো থাকে এবং ওজন কমে।

সুতরাং, লো-জিআই সবজি করলা ওজন কমাতে সাহায্য করে। বিশেষ করে করলা ভর্তা করে খেলে দ্রুত ওজন কমে।

৮ ঠাণ্ড-কাশি ডায়রিয়া এবং কৃমি দূর করে

যারা প্রায়শ, ঠাণ্ডা, কফ, ডায়ারিয়া বা কৃমির সমস্যায় ভুগছেন তারা ২-৩ টি করলার পাতার রস করে খেতে পারেন। এছাড়া, পাতা পানিতে ফুটিয়ে ছেঁকে নিয়ে চায়ের মতো খেলেও উপকার পাবেন।

৯ হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়

করলা ট্রাইগ্লিসারাইড কমাতে সাহায্য করে। এছাড়া, করলায় থাকা ফোলিক এসিড হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে।

১০ পাইলসের সমস্যা দূর করে

যারা,পাইলসের সমস্যায় ভুগছেন তারা ফ্রেশ করলার জুসের সঙ্গে বাটার মিল্ক মিশিয়ে ১ মাস ধরে খেলে উপকার পাবেন।

সতর্কতা :

# করলা নিঃসন্দেহে অত্যধিক পুষ্টিগুণ সম্পন্ন। তবে, অতিরিক্ত পরিমাণে করলা খেলে যাদের ডায়াবেটিস আছে তাদের গ্লুকোজ লেভেল একেবারে কমে যেতে পারে। এছাড়া, ডায়রিয়া বা মাথাব্যথা হতে পারে।

# গর্ভবতী আছেন তারা অতিরিক্ত পরিমাণে খেলে ভ্যাজাইনাল ব্লিডিং এবং গর্ভপাত হতে পারে।

তাই, করলা খাবার সময় অবশ্যই মাত্রারিক্ত খাওয়া যাবে না।

লেখক : পুষ্টিবিদ, বেক্সিমকো ফার্মা লিমিটেড

ad

পাঠকের মতামত