303510

বৃদ্ধা মাকে মাজারে রেখে পালালো সন্তানরা, ঠাঁই মিলল বৃদ্ধাশ্রমে

সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার হাবিবুল্লানগর ইউনিয়নের বাদলবাড়ী মাজার এলাকায় সন্তানদের ফেলে রেখে যাওয়া সেই বৃদ্ধার শেষ ঠিকানা হয়েছে বৃদ্ধাশ্রমে। সোমবার বেলা ১২টার দিকে ঢাকাস্থ ‘চাইল্ড অ্যান্ড ওল্ড কেয়ার হাউজ’ নামে একটি বৃদ্ধাশ্রমের প্রতিনিধিদের কাছে তাকে হস্তান্তর করা হয়।

সিরাজগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব জেনারেল হাসপাতাল থেকে তাকে অ্যাম্বুলেন্সে নিয়ে যান ওই বৃদ্ধাশ্রমের স্বত্বাধিকারী মিল্টন সমাদ্দার।

উল্লেখ্য, গত শনিবার দিনের কোনো এক সময় অসুস্থ ওই বৃদ্ধাকে (৭৫) গাড়িতে করে এনে হযরত শাহ হাবিবুল্লাহ (রহ:) মাজারের ভেতরে রেখে যায় তার সন্তানেরা। রাত হওয়ার পরও ওই বৃদ্ধাকে কেউ নিতে না আসায় এলাকাবাসী তাকে বাইরের একটি ঘরের বারান্দায় রেখে দেয়।

তখন স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘দি বার্ড সেফটি হাউজ’র চেয়ারম্যান মামুন বিশ্বাসের নজরে এলে তিনি তাকে শুক্রবার সিরাজগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করেন।
‘দি বার্ড সেফটি হাউস’র চেয়ারম্যান মামুন বিশ্বাস জানান, উপজেলা নির্বাহী অফিসার নাজমুল হুসেইন খাঁনের সঙ্গে কথা বলে মাজারের মোতওয়াল্লীর হেফাজতে ওই বৃদ্ধাকে রাখা হয়। সন্তানরা গাড়িতে করে এনে মাজারে রেখে গেছে এটুকু বলতে পারলেও নাম-পরিচয় বলতে পারছেন না ওই বৃদ্ধা। পরে তাকে শাহজাদপুর থেকে অ্যাম্বুলেন্স যোগে সিরাজগঞ্জ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বর্তমানে ওই বৃদ্ধা সুস্থ আছেন।

‘চাইল্ড অ্যান্ড ওল্ড কেয়ার হাউজ’র প্রতিষ্ঠাতা মিল্টন সমাদ্দার জানান, মিডিয়ার মাধ্যমে অসহায় ওই বৃদ্ধার বিষয়টি জানতে পারি। পরে মামুন বিশ্বাসের সঙ্গে যোগাযোগ করে তাকে ঢাকায় নিয়ে যাচ্ছি। সেখানে আরও ৬১ জন বৃদ্ধ/বৃদ্ধা রয়েছেন। তাদের সঙ্গে এই বৃদ্ধাকে খাদ্য, আবাসন ও চিকিৎসা দেওয়া হবে। তবে যদি কখনও তার স্বজনদের সন্ধান পাওয়া যায় তাহলে তাদের হাতে তুলে দেওয়া হবে।

এদিকে, বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থাসহ শাহজাদপুর প্রেস ক্লাবের সিনিয়র সহ-সভাপতি আবুল কাশেম জানান, ‘বাবা-মাকে ভরণ-পোষণ না করলে ওই সন্তানদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়ার জন্য আইন করে সুযোগ সৃষ্টি করেছেন মাননীয় হাইকোর্ট ও মহামান্য সুপ্রিম কোর্ট ডিভিশন।

অতএব, বৃদ্ধার ছবি দেখে যদি কেউ তাকে চিনতে পারেন তাহলে ফেসবুকের মাধ্যমে তার ছেলে-মেয়েদেরসহ পূর্ণ ঠিকানা প্রকাশ করবেন। যাতে করে, প্রশাসন ওইসব কুলাঙ্গার ও নির্দয় সন্তান-সন্তোতিদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে পারে।’

ad

পাঠকের মতামত