303129

এবর ফরিদপুর মেডিকেলে সেই পর্দা-সরঞ্জাম দেখল তদন্ত দল

ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ (ফমেক) হাসপাতালের সেই আলোচিত পর্দাসহ চিকিৎসা সরঞ্জাম কেনাকাটায় অনিয়ম তদন্তে হাইকোর্টের নির্দেশনায় পাঁচ সদস্যের একটি দল তাদের কাজ সম্পন্ন করেছেন। বুধ ও বৃহস্পতিবার তদন্ত কাজ পরিচালনা করে দলটি।

তদন্ত দলে ছিলেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) উপ-সহকারী পরিচালক মো. শহিদুর রহমান ও ফেরদৌস রহমান, স্বাস্থ্য অধিদফতরের উপ-পরিচালক ডা. মো. জাকির হোসেন ও সহকারী পরিচালক ডা. শফিকুর রহমান এবং সরকারি হাসপাতালের যন্ত্রপাতি মেরামতকারী একমাত্র প্রতিষ্ঠান ন্যাশনাল ইলেকট্রো ইকুইপমেন্ট মেইনটেইন্যান্স ওয়ার্কশপ অ্যান্ড ট্রেনিং সেন্টারের (নিমিউ এন্ড টিসি) সহকারী প্রকৌশলী নাশিদ রহমান।

তদন্ত দল ক্রয় করা পর্দা, অক্সিজেন প্লান্টসহ বিভিন্ন যন্ত্রপাতিগুলো পর্যবেক্ষণ করেন। অতিরিক্ত দাম দেখিয়ে কেনা পর্দা ও যন্ত্রপাতি ব্যবহার না হওয়ায় নষ্ট হয়ে যাচ্ছে বলে তারা জানান।

ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. কামদা প্রসাদ সাহা সাংবাদিকদের বলেন, পাচঁ সদস্যের একটি তদন্ত দল ফরিদপুরে এসেছে। দুই দিনে তারা ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও মেডিকেল কলেজে তদন্ত করেন। আমি তাদেরকে তদন্তের ব্যাপারে সব রকমের সহযোগিতা করেছি। তিনি বলেন, যেহেতু আমার সময়ের ঘটনা এটি নয়, তারপরেও তারা যা যা আমাদের কাছে চেয়েছে আমি সেইসব তথ্য দিয়ে তাদেরকে সহায়তা করেছি।

দুদকের উপ-সহকারী পরিচালক মো. শহিদুর রহমান বলেন, আমরা মহামান্য হাইকোর্টের নির্দেশে দুদকের পক্ষ থেকে এই তদন্তে এসেছি। এখানকার বেশিরভাগ মেশিন ব্যবহার না করার কারণে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এছাড়া বহুল আলোচিত পর্দা ব্যবহার না হওয়া ও সঠিক রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। আমরা দুই জায়গায় ঘুরে দেখেছি। ঢাকা গিয়ে এ ব্যাপারে রিপোর্ট জমা দেয়া হবে।

উল্লেখ্য, ২০১২ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বিভিন্ন যন্ত্রপাতি কেনা এবং আর্থিক অনিয়মের ঘটনায় গত ২০ আগস্ট হাইকোর্ট দুদককে এ বিষয়ে তদন্ত করে ছয় মাসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলেন। ২০১২ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত মেসার্স অনিক ট্রেডার্স ৫১ কোটি ১৩ লাখ ৭০ হাজার টাকার ১৬৬টি যন্ত্রপাতি সরবরাহ করে।

অনিক ট্রেডার্স ৪১ কোটি ১৩ লাখ ৭০ হাজার টাকার বিল পেলেও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ১০ কোটি টাকা যন্ত্রপাতির দাম বেশি দেখানোসহ বিভিন্ন অসঙ্গতির কারণে বিল আটকে দেয়। এ কারণে ২০১৭ সালের ১ জুন বকেয়া আদায়ে হাইকোর্টে একটি রিট করে অনিক ট্রেডার্স।

রিটের পর স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালকের কাছে অনিক ট্রেডার্সের সরবরাহ করা ১০ কোটি টাকার যন্ত্রপাতির একটি তালিকা চেয়ে পাঠান। ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক কামদা প্রসাদ সাহা ২০১৮ সালের ১০ অক্টোবর ওই ১০ কোটি টাকার বিপরীতে দামসহ ১০ আইটেমের যন্ত্রপাতির একটি তালিকা দেন।

এদিকে ২০১২ থেকে ২০১৬ পর্যন্ত মোট পাঁচজন চিকিৎসক প্রকল্প পরিচালক হিসেবে কাজ করেছেন ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। তারা হলেন- আস ম জাহাঙ্গীর চৌধুরী, এবিএম শামসুল আলম, মো. ওমর ফারুক খান, গণপতি বিশ্বাস ও আবুল কালাম আজাদ। এর মধ্যে ওমর ফারুক খান মারা গেছেন।

ad

পাঠকের মতামত