302364

কাশ্মীরের ক্যান্সার রোগীকেও কারাগারে আটকে রেখেছে ভারত

আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ মোহাম্মদ আইয়ুব আলী পালা নামের ৬০ বছর বয়সী কাশ্মীরি জানেন না, গত আগস্টে আটক তার ক্যান্সারে আক্রান্ত সন্তান বেঁচে আছেন কিনা মরে গেছেন। এই বৃদ্ধ বাবার নিজের শরীরও ভালো নেই। মধ্যরাতে ৩৩ বছর বয়সী পারভেজ আহমদ পালাকে কাশ্মীরের মাটিবাগের গ্রামের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে তুলে নিয়ে যায় ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনী।

অধিকৃত রাজ্যটির স্বায়ত্তশাসনের অধিকার কেড়ে নেয়ার কয়েকদিন পরেই তিনি আটক হন। কাশ্মীরে তখন থেকেই যোগাযোগ অচলাবস্থা চলছে। ইন্টারনেট ও মোবাইল সংযোগ বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। শনিবার সেই অচলাবস্থা তিন মাসে পড়েছে। আইয়ুব আলী পালা বলেন, সেদিন রাতে নিরাপত্তা বাহিনী আমাদের বাড়িতে ঢোকে এবং তাকে তুলে নিয়ে যায়। আমি পিছু পিছু ছুটতে চাইলে তারা আমাকে লাথি মেরে মাটিতে ফেলে দেয়। এরপর তাকে একটি গাড়িতে তুলে নিয়ে চলে যায়।

পারভেজের আট ও ১০ বছর বয়সী দুই ছেলে রয়েছে। তিনি ক্যান্সারের রোগী হওয়ায় তাকে প্রাণরক্ষাকারী ওষুধের ওপর নির্ভর করতে হচ্ছে। ২০১৪ সালে তার শরীরে প্যাপিলারি থাইরয়েড ক্যান্সার ধরা পড়ে। এরমধ্যে তাকে অস্ত্রোপচারের মধ্য দিয়েও যেতে হয়েছে। এছাড়াও তার ত্বকের রোগ রয়েছে। একটি হাত পক্ষাঘাতগ্রস্ত। শের-ই-কাশ্মীর ইনস্টিটিউট অব মেডিকেল সায়েন্সেস এর নিউক্লিয়ার মেডিসিন বিভাগ পারভেজের চিকিৎসা সনদ দিয়েছে।

২০১৫ সালের জুলাই থেকে তাকে উচ্চডোজের চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। নিয়মিতভিত্তিতে তার হাসপাতালে যাওয়ার কথা থাকলেও গত দুই মাস ধরে তিনি চিকিৎসা বঞ্চিত। কাজেই তার শরীরের অবস্থা সম্পর্কে কোনো ধারনা নেই পরিবারের। জননিরাপত্তা আইনের অধীনে মামলা হয়েছে পারভেজের বিরুদ্ধে। কাজেই এই মামলায় কোনো ধরনের জামিন ছাড়াই দুই বছর পর্যন্ত কারাগারে আটকে রাখা সম্ভব। উত্তর প্রদেশের বেরেলিতে একটি কারাগারে আটকে রাখা হয়েছে তাকে। অসুস্থ সন্তানের সঙ্গে পরিবারকেও দেখা করতে দেয়া হচ্ছে না।

তার বাবা বলেন, গত ১৭ আগস্ট ছেলের সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলাম আমি। কিন্তু কারা কর্তৃপক্ষ আমাকে অনুমোদন দেননি। তাকে ওষুধ ও পোশাক দিতে আবেদন করলেও কেউ সহায়তা করেনি। তিন দিন চেষ্টার পর ভাঙা মন নিয়ে আমাকে ফিরে আসতে হয়েছে।

ছেলে জীবিত নাকি মৃত তা জানা নেই জানিয়ে তিনি বলেন, উত্তরপ্রদেশ ভ্রমণ করা কোনো সহজ কাজ না। আমি কখনোয়ই ওই এলাকায় এর আগে যাইনি। নিজে অশিক্ষিত হওয়ায় গ্রামের আরেকজনকে সঙ্গে নিতে হয়েছে। তার খরচও আমাকে বহন করতে হয়েছে। কাজেই সেখানে ফের যাওয়ার মতো অর্থ আমার হাতে নেই।

তিনি আরও বলেন, ঘুমানের আগে যদি তার ত্বকে মলম মাখা না হয়, তবে তা তার জন্য মারাত্মক যন্ত্রণাদায়ক হয়। তার চামড়া উঠে যেতে থাকে। কাজেই তাকে নিয়ে আমরা ব্যাপক দুশ্চিন্তায়। আল-জাজিরা

ad

পাঠকের মতামত