302236

শেখ হাসিনার খোঁচায় দিল্লির ভোলবদল

ভারতের ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম আয়োজিত ইন্ডিয়া ইকনমিক সামিটে যোগ দিতে এসে পেঁয়াজ নিয়ে ভারতের কেন্দ্রীয় মোদী সরকারকে হালকা খোঁচা দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শেখ হাসিনা হিন্দিতে ভারতের বাণিজ্যমন্ত্রী।

পীযূষ গোয়েলের উদ্দেশে বলেন, পেঁয়াজ মে থোড়া দিক্কত হো গিয়া হামারে লিয়ে। মুঝে মালুম নেহি, কিউ আপনে পেঁয়াজ বন্ধ কর দিয়া! ম্যায়নে কুক কো বোল দিয়া, আব সে খানা মে পেঁয়াজ বন্ধ কারদো (পেঁয়াজ নিয়ে একটু সমস্যায় পড়ে গেছি আমরা। আমি জানি না, কেন আপনারা পেঁয়াজ বন্ধ করে দিলেন। আমি রাঁধুনীকে বলে দিয়েছি, এখন থেকে রান্নায় পেঁয়াজ বন্ধ করে দাও)। হাসিনার এই কথা শুনে উপস্থিত সকলেই প্রায় হেসে ওঠেন।

তিনি ভারত সরকারকে প্রশ্ন ছুঁড়ে দেন, আমার জানা নেই কেন আপনারা পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ করে দিয়েছেন? আমি জানি না, আপনারা কি চান আমরা পেঁয়াজ খাওয়া বন্ধ করে দিই?

তার এমন বক্তব্যের পরই ভোল বদলেছে নয়া দিল্লি। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রবীশ কুমার বলেন, পেঁয়াজ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী হাসিনা কী বলেছেন, সেটা আমাদের চোখে পড়েছে। তার এই উদ্বেগ কীভাবে প্রশমিত করা যায়, কীভাবে এই কনসার্নটা অ্যাকোমোডেট করা যায়, তা আমরা দেখছি।

তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশে পেঁয়াজ রফতানির জন্য রবিবারের আগে যেসব এলসি খোলা হয়েছিল সেগুলোও কিন্তু আমরা এখন অনার করছি। সেই পেঁয়াজ বাংলাদেশে যেতেও শুরু করেছে।

বৃষ্টি আর বন্যায় এবার পেঁয়াজের ফলন মার খাওয়ায় ভারত সরকার গত ২৯ সেপ্টেম্বর হঠাৎ করেই পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধের ঘোষণা দিলে কয়েক ঘণ্টার মধ্যে ঢাকার বাজারে প্রতি কেজি পেঁয়াজের দাম দ্বিগুণ বেড়ে ১২০ টাকায় পৌঁছায়। প্রতিদিনের রান্নায় বহুল ব্যবহৃত এই সামগ্রীর এমন দামে ক্রেতাদের মনে তৈরি হয় উদ্বেগ, বাজারে তৈরি হয় অস্থিরতা।

এই পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ সরকার মিশর, তুরস্ক ও মিয়ানমার থেকে পেঁয়াজ আমদানির পাশাপাশি অতিরিক্ত দামে পেঁয়াজ বিক্রি বন্ধ করতে পাইকারি বাজারগুলোতে অভিযান শুরু করে। টিসিবির মাধ্যমে সারা দেশে ট্রাকে করে ‘ন্যায্য মূল্যে’ পেঁয়াজ বিক্রি হয়।

নিজেদের বাজার সামলাতে ভারত সরকার পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ করে দেওয়ায় হতাশা প্রকাশ করে কৃষিমন্ত্রী আবদুর রাজ্জাক গত বুধবার এক অনুষ্ঠানে বলেন, “আমাদের প্রতিবেশী দেশ ভারত, তাদের প্রব্লেম। তাদের কোনো প্রব্লেম হলে দে ডোন্ট কেয়ার অ্যাবাউট দেয়ার নেইবার। তারা দাম বাড়িয়ে দেয় অথবা ট্যাক্স বসায় অথবা এক্সপোর্ট ব্যান করে।”

আর শুক্রবার বাংলাদেশ-ভারত বিজনেস ফোরামের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন,ভারত আগে থেকে নোটিস দিলে বাংলাদেশ অন্য দেশ থেকে কেনার ব্যবস্থা করতে পারত। ভবিষ্যতে এমন কিছু করলে আগে জানালে ভালো হয়।

ভারতের শিল্প ও রেলপথ মন্ত্রী পিযূস গয়াল, বাংলাদেশের বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি, এফবিসিসিআই সভাপতি শেখ ফজলে ফাহিম, অ্যসোসিয়েটেড চেম্বারস অব কমার্স অব ইনডিয়ার (অ্যাসোচাম) সভাপতি বালকৃষাণ গোয়েঙ্কাসহ দুই দেশের ব্যবসায়ী প্রতিনিধিরা এ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

ad

পাঠকের মতামত