300291

কোচিং না করায় স্কুলছাত্রীকে মা’রধ’র, প্রতিবাদ করায় মাকে আটকে রেখে নি’র্যাতন

মোঃমনির মন্ডল, নিজস্ব প্রতিবেদক, সাভার- আশুলিয়ায় কোচিং না করায় দশম শ্রেনীর এক ছাত্রীকে মা’রধ’র করে আহত করার অভিযোগ উঠেছে স্কুলের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে।এখানেই শেষ নয়, স্কুল কর্তৃপক্ষের এমন আচরণের প্রতিবাদ করায় পুনরায় ওই ছাত্রী ও তার মাকে মা’রধ’র করাসহ প্রকাশ্যে শা’রীরিকভাবে লাঞ্ছিত করে আটকে রাখা হয়। পরে পুলিশ গিয়ে তাদেরকে উদ্ধার করেন।

বুধবার (০৪ সেপ্টেম্বর) দুপুরে আশুলিয়া থানাধীন পলাশবাড়ি বটতলা এলাকার ক্রিয়েটিভ স্কুলে এ ঘটনা ঘটেছে।থানা সূত্রে জানা যায়, বটতলা এলাকার ক্রিয়েটিভ স্কুলে দশম শ্রেনীর ছাত্রী মুক্তা আক্তার। স্কুলটির ৪র্থ তলায় সে পরিবারের সাথে বসবাস করে। স্কুলে কোচিং না করে অন্যত্র কোচিং করায় গতকাল মঙ্গলবার ওই ছাত্রীকে ক্লাসে বেদম মা’রধ’র করেন শবু নামের এক শিক্ষক।

আজ বুধবার সকালে এমন ঘটনার প্রতিবাদ করতে গেলে স্কুলটির প্রধান শিক্ষক আব্দুল কাদের ও তার ছেলে ইমরান হোসেনসহ আরও কয়েকজন, পুনরায় মুক্তা ও তার মা কুলসুম আক্তারকে প্র’কাশ্যে মা’রধ’র করে একটি কক্ষে আটকে রাখেন।

খবর পেয়ে স্কুলে ছুটে যান মুক্তার চাচাতো ভাই আরিফ। স্কুল কর্তৃপক্ষ তাকেও মা’রধ’র করে স্কুল ও বাড়ি ভাড়াসহ যাবতীয় পাওনা সন্ধ্যার মধ্যে পরিশোধ করার জন্য আরিফকে ছেড়ে দেয়। পরে স্থানীয়দের মাধ্যমে খবর পেয়ে আশুলিয়া থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আব্দুস সালাম ঘটনাস্থলে গিয়ে তাদেরকে উদ্ধার করেন।

মুক্তার পিতা সাগর শেখ বলেন, প্রধান শিক্ষক আব্দুল কাদের একজন অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্য। স্কুলের অন্য ছাত্র-ছাত্রীকে কোচিং করতে বাধ্য করেছেন। আমার মেয়ে স্কুলে কোচিং না করায় তিনি তাকে মারপিট করে সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত একটি কক্ষে আটকে রাখেন।মুক্তার মা কুলসুম আক্তার অভিযোগ করেন, মেয়েকে মারার কারন জানতে চাইলে প্রধান শিক্ষক আব্দুল কাদের ক্ষেপে যান এবং খারাপ ভাষায় গালাগালি করেন।

তিনি বলেন, তোরা আমার বিচার করতে এসেছিস, তোদের ব্যবস্থা করছি। এরপর তিনি তার ছেলে ইমরানকে ফোন করে ডেকে আনেন। পরে বাবা ও ছেলে তাকে প্রকাশে মা’রধ’র করে আটকে রাখেন এবং আমাকে লাঞ্ছিত করেন।

এ বিষয়ে জানতে যোগাযোগ করা হলে আশুলিয়া থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আব্দুস সালাম বলেন, ওই ছাত্রী ও তার মাকে উদ্ধার করা হয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে, তার পরিবারের উপর আগে থেকেই ক্ষিপ্ত ছিলো। সম্প্রতি ওই স্কুলছাত্রী কোচিং না করায় স্কুল কর্তৃপক্ষ এ ঘটনা ঘটায়।

ছাত্রী ও তার মাকে মা’রধ’র করার কারন জানতে চাইলে ক্রিয়েটিভ স্কুলের প্রধান শিক্ষক আব্দুল কাদের বলেন, এ ধরনের ঘটনা ঘটে নাই। এখানে আশুলিয়া থানার পুলিশ এসেছে। তাদের সাথে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করা হচ্ছে। পরে ফোন দিয়েন, বিস্তারিত কথা বলবো।

কোচিং না করায় ছাত্রী ও ছাত্রীর মাকে মা’রধ’রের বিষয়টি সাভার উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোছা: কামরুন্নাহারকে অবগত করা তিনি বলেন, উপজেলায় এতো অসংখ্য স্কুলের মধ্যে কে ছাত্র-ছাত্রীদেরকে কোচিং করতে বাধ্য করছে, তা আমরা জানি না।

“আমরা লিখিত অভিযোগ পেলে স্কুলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারি। আর এই বিষয়টি যেহেতু থানায় অভিযোগ হয়েছে, তাই আমাদের কিছু করার নাই।”

ad

পাঠকের মতামত