292080

যেভাবে চাঁদ দেখা হয় আরব দেশগুলোতে

ইসলাম ডেস্ক।। ঐতিহাসিক কাল থেকে আরবরা চান্দ্রমাসের হিসাব অনুসরণ করে আসছে। তাই সাধারণভাবে আরব সমাজে চান্দ্রমাসের শুরুতে চাঁদ দেখার রীতি রয়েছে। চাঁদ দেখা গ্রামীণ আরবের একটি ঐতিহ্যও। ইসলামের আগমনের পর আরব সমাজে চান্দ্রমাসের চর্চা আরো দৃঢ় হয়েছে। রোজা, ঈদ ও হজের মতো আমলগুলো চান্দ্রমাসকেন্দ্রিক হওয়ায় আরব মুসলিমরা উৎসবমুখর পরিবেশে আকাশে নতুন চাঁদের অনুসন্ধান করে থাকে।

রমজান মাস ও ঈদের চাঁদ অনুসন্ধানে সৌদি আরবসহ আরব দেশগুলোর মিডিয়ায় সাধারণ মানুষকে উৎসাহিত করা হয়। চাঁদের দৃশ্যমান হওয়ার সম্ভাব্য সময়ও প্রচার করে তারা। ফলে গ্রামীণ আরব জনপদগুলোতে মানুষ পাহাড়ের চূড়ায় সমবেত হয়ে এবং শহর এলাকায় বাড়ির ছাদে একত্র হয়ে আকাশে নতুন চাঁদের খোঁজ করে আরব মুসলিমরা। সামর্থ্যবান আরবদের বাড়ির ছাদে ক্ষুদ্র টেলিস্কোপের মাধ্যমে পারিবারের নারী ও শিশুদের নিয়ে চাঁদ দেখার আয়োজন হয় এই সময়।

তবে আরব দেশগুলোতে চাঁদ দেখার বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয় কয়েকটি স্তরে। যেমন—সৌদি আরবে চাঁদবিষয়ক ঘোষণা দেয় দেশটির আইন ও বিচার বিষয়ক মন্ত্রণালয়। প্রতি হিজরি মাসের শেষ সপ্তাহে রাষ্ট্রীয় প্রচারমাধ্যমে চাঁদ দৃশ্যমান হওয়ার সম্ভাব্য সময় প্রচার করা হয়। রাষ্ট্রীয় মহাকাশ গবেষণা কেন্দ্রকেও এই সময় চাঁদ অনুসন্ধানের নির্দেশনা দেয় মন্ত্রণালয়। একাধিক কেন্দ্র থেকে নতুন চাঁদের অনুসন্ধান করা হয়। মাসের শেষ দিন মন্ত্রণালয়ে চাঁদবিষয়ক ঘোষণার জন্য বৈঠক আহ্বান করা হয়। বৈঠকে উপস্থিত থাকেন রাষ্ট্রীয় সর্বোচ্চ ধর্মীয় পরিষদের মুফতি, মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা, মহাকাশ গবেষণা কেন্দ্রের দায়িত্বশীল, যিনি চাঁদ দেখেছেন এবং খালি চোখে চাঁদ দেখেছেন—এমন একাধিক সাধারণ সাক্ষী।

বৈঠকে সবার উপস্থিতিতে সাক্ষী ও চাঁদ অনুসন্ধানকারীদের কয়েকটি বিষয়ে প্রশ্ন করা হয়। যেমন—তাঁরা কোথায় ও কিভাবে চাঁদ দেখেছেন? কখন দেখেছেন এবং তা কত সময় দেখেছেন? সময়টা সূর্যাস্তের কত সময় পরে ছিল? ইত্যাদি। তাঁদের উত্তরের ভিত্তিতে মুফতিগণ চাঁদ বিষয়ে সিদ্ধান্ত প্রদান করেন এবং তা রাষ্ট্রীয় প্রচারমাধ্যমে ঘোষণা করা হয়।

প্রায় প্রতিটি আরব রাষ্ট্রে একই পদ্ধতি অবলম্বন করা হয়। তবে আরববিশ্বে চাঁদের সংবাদের ক্ষেত্রে দুবাইভিত্তিক ইন্টারন্যাশনাল অ্যাস্ট্রোনমিক সেন্টারের (আইএসি) ঘোষণাকে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়। ১৯৯৮ সালে আইএসি ইসলামিক ক্রিসেন্ট অবজারভেশন প্রজেক্ট নামে একটি বিশেষ কর্মসূচি হাতে নেয়, যার অধীনে হিজরি মাসের চাঁদ অনুসন্ধানের বিষয়টিও রয়েছে। কারণ আইএসি নতুন চাঁদ অনুসন্ধানে সর্বাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে থাকে। একদল উচ্চতর দক্ষতাসম্পন্ন গবেষক ও ইসলামিক স্কলার এই প্রজেক্টে কর্মরত। উৎস: কালের কণ্ঠ।

ad

পাঠকের মতামত