290641

হরিপুর সীমান্তে লাখো মানুষের মিলন মেলা

ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধিঃ বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে ঠাকুরগাঁওয়ের হরিপুর উপজেলার বিভিন্ন সীঁমান্ত দুই বাংলার স্বজনদের পদচারণায় মিলন মেলায় পরিণত হয়েছে। সোমবার ঠাকুরগাঁওয়ের হরিপুর উপজেলার হরিপুর কাড়িগাঁও, কান্ধাল, মলানী, ডাবরী, বেতনা, বুজরুক এবং ভারতের মালদখন্ড, বসতপুর, শ্রীপুর, নারগঁও, কাতারগঞ্জ ও বোররা সীমান্তে ৩৫৫, ৩৫৬, নং পিলার থেকে শুরু করে ৩৭২ নং পিলার এলাকায় সীমান্তের ১০টি পয়ন্টে তাঁরকাটার এপার-ওপারে দুই দেশের হাজারো মানুষের উপস্থিতি ঘটে।

বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে প্রতি বছরে দু-দেশের স্বজনরা ভিড় জমায় ঠাকুরগাঁওয়ের হরিপুর উপজেলার এসব সীমান্ত এলাকায়। দেখা ও কথা না হওয়া পর্যন্ত সকাল থেকেই কাঁটাতারের দু-পাড়ে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করতে থাকেন দু’দেশের স্বজনরা। সকাল ১০টার পর স্বজনদের ভিড় জমতে শুরু করে সীমান্তের কাটাতারের পাশে। তাঁরকাটার গেট না খুললেও অনানুষ্ঠানিকভাবেই তাঁরকাটার এপারে-ওপারে দাঁড়িয়ে স্বজনদের দেখা ও কথা হয়। আদান-প্রদান হয় নানা রকমের খাদ্য সামগ্রী।

স্বজনদের সাথে দেখা করতে আসা রানীশংকৈল উপজেলার বাসিন্দা কুলসুম বেগম (৪৫) বলেন, আর্থিক সঙ্কটের কারণে পাসপোর্ট ও ভিসা করতে পারি না। তাই প্রতিবছর আমার বোন আন্জুমারাকে দেখতে এই দিনে সীমান্তে আসি। এবারও আমার বোনের দেখা পেয়েছি। ঠাকুরগাঁও জেলা সদর এলাকার বাসিন্দা শ্রী পুলন চন্দ্র রায় (৬৫) বলেন, ১০ বছর আগে আমার মেয়ে গিতা রানীর বিয়ে হয় ভারতের মাল্দা জেলার রতুয়া থানার হরিপুর গ্রামে। বিয়ের পর এই প্রথম মেয়ের দেখা পেয়ে প্রথমে কান্নায় ভেঙে পড়ি। পরে মেয়ে ও জামাইকে কাপড় ও মিষ্টি দিয়ে আনন্দ পেয়েছি।

ভারতের স্বজনদের সঙ্গে দেখা করতে আসা জয়পুর হাটের তসলিমা নাসরিন জানান, ১২ বছর আগে আমার ছোট বোন বিউটির বিয়ে হয় ভারতের গোয়ালপুকুর থানার পাঁচঘরিয়া গ্রামে। বিয়ের পর আর কথা হয়নি তার সাথে। কিন্তু আজ বোনের সাথে তাঁরকাটার এপার-ওপারে দাড়িয়ে কথা বলেছি। কাটাতাঁরের ফাঁক দিয়ে মিষ্টি ও শাড়ি দিতে পেরে মনে বড়ো আনন্দ পেয়েছি। মিলন মেলায় ঘুরতে আসা অনেকেই তাদের আত্মীয়-স্বজনের সাথে দেখা করেন, কথা বলেন। বিভিন্ন জিনিসপত্র আদান-প্রদান করেন। তবে দুই দেশের সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর উর্ধতন কর্তৃপক্ষের মৌখিক অনুমতির পরিপ্রেক্ষিতে বিজিবি ও বিএসএফ’র কঠোর নিরাপত্তা ও উপজেলা প্রশাসনের বিশেষ নজরদারির মধ্য দিয়ে এই মিলন মেলা শান্তিপূর্ণভাবেই হয়ে থাকে।

ad

পাঠকের মতামত