290509

পরকিয়া প্রেমের জেরে তিন সন্তানের জনক ও প্রেমিকা দুই সন্তানের জননীর আত্মহত্যার চেষ্টা

নিউজ ডেস্ক।। যশোরের চৌগাছায় পরকিয়া প্রেমের জেরে তিন সন্তানের জনক আব্দুর রশিদ (৪০), তার স্ত্রী আছমা খাতুন (২৮) ও রশিদের পরকীয়া প্রেমিকা দুই সন্তানের জননী ডলি খাতুন (৩০) কীটনাশক পানে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন। ডলির স্বামী আব্দুর রশিদের চাচাতো ভাই ও আপন শ্যালক। তিনি মালয়েশিয়া প্রবাসী। রোববার সন্ধ্যায় দক্ষিণ কয়ারপাড়া গ্রামের বাড়িতেই তারা কীটনাশক পান করেন। তিনজনই বর্তমানে চৌগাছা ৫০ শয্যা হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। তারা সকলেই চৌগাছা সদর ইউনিয়নের দক্ষিণ কয়ারপাড়া গ্রামের বাসিন্দা।

চৌগাছা হাসপাতালে তাদের স্বজনরা জানান, আব্দুর রশিদ প্রেম করে তার আপন চাচাতো বোন আছমা খাতুনকে বিয়ে করেন। তিনি কিছুদিন প্রবাসে ছিলেন। এই দম্পতির তিনটি সন্তান রয়েছে। এরপরও তিনি মালয়েশিয়া প্রবাসী আপন শ্যালক ও চাচাতো ভাইয়ের স্ত্রী দুই সন্তানের জননী ডলির সাথে দীর্ঘদিন ধরে পরকিয়া করে আসছেন। বিষয়টি জানাজানি হলে রশিদের স্ত্রী একবার হাইপ্রেসারের ওষুধ খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। পরে যশোর ২৫০ শয্যা হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হন। তখন আব্দুর রশিদ প্রতিজ্ঞা করেন আর এমন করবেন না। কিছুদিন পর আবারো ডলির সাথে পরকীয়ায় লিপ্ত হন তিনি। সে যাত্রায়ও প্রতিজ্ঞা করে রেহাই পায় রশিদ-ডলি।

লাগোয়া বাড়ি ও নিকটাত্মীয় বলেই বারবার এভাবে রেহাই পান তারা। তারপরও গোপনে সম্পর্ক রেখে আসছিলেন উভয়েই। রোববার পহেলা বৈশাখের দিন আবারো তাদের পরকীয়া সম্পর্ক ধরা পড়ে গেলে এ নিয়ে বাড়িতে ঝগড়াঝাটির এক পর্যায়ে সন্ধ্যায় রশিদের স্ত্রী কীটনাশকপানে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। আত্মীয়দের অভিযোগ, বিষয়টি বুঝতে পেরে গ্রামের মানুষের সহানুভূতি পেতে রশিদও কীটনাশক পান করেন। স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে চৌগাছা ৫০ শয্যা হাপাতালে নেয়। এ ঘটনায় গ্রামবাসী তিরস্কার শুরু করলে ডলিও কীটনাশক পানে আত্মহত্যার চেষ্টা করলে তাকেও উদ্ধার করে চৌগাছা হাসপাতালে নেয়া হয়।

বর্তমানে তিনজনই হাপাতালে ভর্তি রয়েছেন। রোববার রাত সাড়ে ৯টায় এ প্রতিবেদকের সামনেই ডলির মা ও রশিদের স্ত্রীর স্বজনরা বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন। ডলি কেন কীটনাশক পান করেছে জানতে চাইলে তার মা বলেন, রশিদের স্ত্রী-কন্যা মারপিট করেছে বলে সে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছে। পরকীয়ার অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি আর উত্তর দেননি। আব্দুর রশিদের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, পারিবারিক কলহের কারণে তিনি এ কাজ করেছেন। পরকীয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি কোনো জবাব না দিয়ে বলেন, সুস্থ হয়ে এর একটা বিহিত করবেন।

আছমা খাতুন বলেন, আমার মেয়েরা বড় হয়েছে। তাদের বিয়ে দিতে হবে। বারবার বলার পরও আমার স্বামী পরকীয়ার পথ থেকে সরে না আসায় হতাশা থেকে আত্মহত্যার চেষ্টা করি।  এদিকে একইদিন সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে উপজেলার জগদিশপুর গ্রামের মৃত বকুল হোসেনের কন্যা শারমিন খাতুন (১৪) গলায় রশি দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করে। তাকেও গ্রামবাসী উদ্ধার করে চৌগাছা উপজেলা হাসপাতালে নেয়। সে জগদিশপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্রী। ঠিক কি কারণে মেয়েটি আত্মহত্যার চেষ্টা করেছে তা জানা না গেলেও স্থানীয়রা অনুমান করা হচ্ছে প্রেমের কারণেই আত্মহত্যার চেষ্টা করে থাকতে পারে। হাসপাতালের জরুরি বিভাগে কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. মুঞ্জুরুল হাসান জানান, চারজনই বর্তমানে শংকামুক্ত আছেন।

ad

পাঠকের মতামত