288287

বিয়ের বাজার করতে গিয়ে লাশ হলেন তরুণী

প্রায় ১০ বছরের সম্পর্ক তাদের। আর কয়েক মাসের মধ্যেই বিয়ে হওয়ার কথা ছিল দু’জনের। কিন্তু বিয়ের বাজার করতে যাবার পথে সড়ক দুর্ঘটনায় মারা গেলেন ওই তরুণী। লরির চাকায় পিষ্ট হলো তার সকল স্বপ্ন। আর দীর্ঘদিনের প্রেমিকাকে হারিয়ে বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছেন তার হবু বর অুরিৎ দাস।রোববার রাতে এই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যে।ওই তরুণীর নাম শ্রাবণী পাল (২৩)। হঘটনার দিন তিনি হবু স্বামী অরিৎ দাসের সঙ্গে বিয়ের কেনাকাটা করতে যাচ্ছিলেন। কিন্তু মাঝপথে লরির ধাক্কায় প্রাণ হারান তিনি। কিন্তু ওই দুর্ঘটনা থেকে বেঁচে গেছেন অরিৎ। এমনকি, যে মোটরবাইকে চেপে তারা কেনাকাটা করতে যাচ্ছিলেন, অক্ষত রয়েছে সেটিও।

এই ঘটনায় বারাসত থানায় অভিযোগ জানিয়েছে শ্রাবণীর পরিবার। পুলিশ জানিয়েছে, লরিচালককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আকস্মিক এমন দুর্ঘটনায় মেয়েকে হারিয়ে হতবাক শ্রাবণীর পরিবার।স্নাতক পাশ শ্রাবণী এলাকায় টিউশন করতেন। পড়শিরা জানিয়েছেন, পাড়ায় খুবই জনপ্রিয় ছিলেন তিনি। অমায়িক ব্যবহারের কারণে সবাই তাকে ‘মিষ্টি’বলে ডাকতেন।শ্রাবণীর প্রেমিক অরিৎ সম্প্রতি একটি বেসরকারি ব্যাঙ্কে চাকরি পেয়েছেন। এরপরই শুরু হয়েছিল বিয়ের তোড়জোর। ইতিমধ্যে বাগদানও সেরে ফেলেছিলেন দু’জন। ফেসবুকে এ কথা ঘটা করে প্রচারও করেছিলেন তারা।

ঘনিষ্ঠদের বরাত দিয়ে স্থানীয় সংবাদ মাধ্যম জানায়, রোববার সকালে বাড়ির লোকেদের সঙ্গে ব্যারাকপুরে মামার বাড়ি গিয়েছিলেন শ্রাবণ। সেখান থেকে রাতে বারাসতে ফেরেন। হেলাবটলতায় বাস থেকে নেমে শ্রাবণীর আত্মীয়েরা বাড়ি চলে যান। সেখানে আগে থেকেই মোটরবাইক নিয়ে অপেক্ষা করছিলেন অরিৎ। সেখানে নেমে অরিতের সঙ্গে বিয়ের বাজার করতে চলে যান ওই তরুণী। হেলাবটতলা এলাকা থেকে থেকে একটি শপিংমলে যাচ্ছিলেন শ্রাবণী ও অরিত। কিন্তু শপিংমলে পৌঁছানোর আগেই লরির চাকায় পিষ্ট হন শ্রাবণী।

পুলিশ জানায়, কলোনি মোড়ে উড়ালসেতুতে ওঠার মুখে একটি বালি বোঝাই লরি অরিতের মোটরবাইকে ধাক্কা মারে। রাস্তার দিকে ছিটকে পড়েন শ্রাবণী। ফুটপাতের দিকে পড়েন অরিৎ। লরির চাকা শ্রাবণীর মাথার উপর দিয়ে চলে যায়। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পর চিকিৎসকেরা তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।খবর পেয়ে হাসপাতালে ছুটে যান দুই বাড়ির লোকজন। মেয়েকে হারিয়ে বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছেন শ্রাবণীর মা সন্দীপা পাল। বাড়ির লোকেরা বলছেন, ‘রোববার রাতে ওকে যেতে বারণ করেছিলাম। বলেছিলাম, এক দিন পরে গিয়ে কেনাকাটা করিস। ও যদি তা মেনে নিয়ে আমাদের সঙ্গে ফিরে আসত, তা হলে আজ এই দিন দেখতে হত না।’শ্রাবণীকে ঘটনার পর থেকে কার্যত গৃহবন্দি হয়ে রয়েছেন অরিৎ। কারও সঙ্গে কথা বলছেন না তিনি। বন্ধ রেখেছেন নিজের মুঠোফোনটিও।সূত্র: আনন্দবাজার

ad

পাঠকের মতামত