251476

ভর্তির টাকা কম, পড়ালেখা বন্ধ করে মেয়েদের বিয়ে দেওয়ার পরামর্শ প্রধানশিক্ষকের

নিউজ ডেস্ক।। আন্নি আকতার (১৬) ও পান্না আকতার (১৪) দুই বোন। পড়ালেখার ব্যাপারে প্রবল আগ্রহ তাদের। কিন্তু অভাবের সংসারে পড়ালেখার জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ সংগ্রহ করতে পারেন না তাদের বাবা। পেশায় রং মিস্ত্রি আনোয়ার হোসেনের স্ত্রীসহ ৬ জনের সংসার। বসতভিটা ছাড়া নেই কোনো সম্পত্তিও। মেয়েদের পড়াশোনার আগ্রহ দেখে বাবাও চান তাদের পড়াতে। আন্নি ও পান্না দুজনেই নীলফামারীর ডোমার বালিকা বিদ্যা নিকেতনের শিক্ষার্থী। একজন নবম ও অন্যজন অষ্টম শ্রেনীর ছাত্রী। বার্ষিক পরীক্ষাও শেষ তাদের। অপেক্ষা করছে নতুন শ্রেণিতে ওঠার। কিন্তু টাকার মাসিক বেতন জমা দিতে না পারায় তাদের পরীক্ষায় উর্ত্তীনের ফলাফল দিচ্ছেন না স্কুলের প্রধান শিক্ষক রতন কুমার রায়।

এদিকে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার হস্তক্ষেপে আন্নি আকতারের এক বছরের বেতন মওকুফ করে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। বিষয়টি উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে জানানোর অপরাধে রতন কুমার বেতনের টাকা কম থাকার কারণ দেখিয়ে ঠেকিয়ে রেখেছেন তাদের ভর্তি। নতুন শিক্ষা বর্ষের ২০দিন পেরিয়ে গেলেও তাদের দেওয়া হয়নি নতুন বই। এ নিয়ে তাকে অনুরোধ করা হলে মেয়েদের পড়ালেখা বন্ধ করে বিয়ে দেওয়ার পরামর্শ দেন তিনি।

আন্নি ও পান্নার মা পারুল বেগম  জানান, ১২শ টাকা নিয়ে দুই মেয়েকে স্কুলে ভর্তি করাতে যান তিনি। কিন্তু প্রধান শিক্ষক রতন কুমার তাদের ভর্তিতে বাধা দেন। তিনি বলেছেন এই টাকায় মেয়েদের ভর্তি হবে না। তাদের পড়ালেখা বন্ধ করে দিয়ে বিয়ে দেওয়ার পরামর্শ দেন তিনি। পারুল জানান, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সাকেরিনা বেগমের কাছে নিজেদের অভাব অনটনের কথা জানালে তিনি আন্নির এ বছরের শিক্ষা ফি মওকুফ করেন। কিন্তু বিষয়টি ভালোভাবে নেননি স্কুলের প্রধান শিক্ষক। শিক্ষা কর্মকর্তাকে জানানোয় তিনি রাগ করে মেয়েদের ভর্তি বন্ধ রেখেছেন।

এ ব্যাপারে ডোমার বালিকা বিদ্যা নিকেতনের প্রধান শিক্ষক রতন কুমার আমাদের সময়কে জানান, স্কুলের প্রতি শিক্ষার্থীর ভর্তি ফি ১২শ টাকা। গরীব শিক্ষার্থীদের ফান্ডের বিষয়টি আমাদের দেখতে হয়। তাই আপাতত তাদের ভর্তি বন্ধ আছে। এ ব্যাপারে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সাকেরিনা বেগম জানান, গরীব ছাত্র-ছাত্রীদের পড়ালেখার জন্য বিদ্যালয়ে একটি ফান্ড রয়েছে। কিন্তু প্রধান শিক্ষক রতন কুমার রায় আমার কথা শোনেন না। তাকে আন্নি এবং পান্নার ভর্তির ব্যাপার আমি কয়েকবার ফোন দিয়েছি। কিন্তু তিনি আমার কথার কোনো পাত্তাই দিচ্ছেন না। উৎস: দৈনিক আমাদের সময়।

ad

পাঠকের মতামত