247021

ছেলের বেতন এক কোটি, শুনে কাঁদলেন ঝালাইমিস্ত্রি বাবা

নিউজ ডেস্ক।। ছেলের বেতন এক কোটি- এক কোটি টাকা! ছেলের মুখে তার নতুন চাকরির বেতনের কথা শুনে প্রথমে বিশ্বাসই করতে পারেননি বাবা। কিছুক্ষণ কোনো কথা বলতে পারেননি তিনি। ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে ছিলেন, ছেলের মুখের দিকে। ভেজা চোখে ফের জিজ্ঞেস করেন, ‘কতো?’ ছেলে বাবাকে জানায়, ‘এক কোটি দু’লাখ।’ এবার ছেলে বাৎসল্যকে বুকে জড়িয়ে ধরেন বাবা চন্দ্রকান্ত সিংহ চৌহান। ভারতের বিহারের খাগারিয়ার চন্দ্রকান্ত সিংহ পেশায় ঝালাই মিস্ত্রি। আর ছেলে বাৎসল্য সম্প্রতি মাইক্রোসফটে চাকরি পেয়েছেন। গত ডিসেম্বরে ভারতের খড়গপুরেই ক্যাম্পাসিং হয়। তার পরে পাঁচ দফার পরীক্ষা শেষে তাকে মনোনীত করে বিশ্বের অন্যতম তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থা মাইক্রোসফট।

আইআইটি খড়গপুরের ফাইনাল ইয়ারের ছাত্র ২১ বছরের বাৎসল্য জানিয়েছেন, মাইক্রোসফটের পরীক্ষা মোটেও সহজ ছিলো না। পাঁচ ধাপ পেরোনোর পর তাকে যখন নিশ্চিত করেন মাইক্রোসফট কর্তৃপক্ষ, প্রথমে তিনি বিশ্বাস করতে পারেননি। ঠিক যেমনটা অবাক হয়েছেন তার বাবাও। বাৎসল্যের কথায়, ‘ব্যাংক থেকে লোন নিয়ে বাবা আমাকে পড়ানোটা সার্থক হলো।’ ছোটবেলা থেকেই বাৎসল্য পড়াশোনায় বেশ ভালো। বিহার বোর্ডে অধীনে স্থানীয় একটি স্কুল থেকে মাধ্যমিক পরীক্ষা দেন তিনি। মাধ্যমিকে ভালো রেজাল্ট করার কারণে সরকারি বৃত্তিও পেয়েছিলেন। মূলত বৃত্তি-নির্ভরই ছিলো তার পড়াশোনা। তবে, এ সবের বাইরেও পড়াশোনার ক্ষেত্রে যখন যে রকম টাকা-পয়সা প্রয়োজন পড়েছে, চন্দ্রকান্ত তা বিভিন্ন ভাবে জোগাড় করেছেন।

ছেলেকে বুঝতেও দেননি। তার কথায়, ‘বাবা সব সময় বলে, জীবনে উন্নতি করতে হবে। তবে, মাধ্যমিকের সময়ে আমি জানতামও না আইআইটি-টা ঠিক কী!’ ২০০৯ সালে আইআইটি এন্ট্রান্স দিয়েছিলেন বাৎসল্য। কিন্তু, ফল ভীষণ খারাপ হয়। এরপর লোন করে ছেলেকে রাজস্থানের কোটায় একটি কোচিং সেন্টারে ভর্তি করেন চন্দ্রকান্ত। তারপর খড়গপুর আইআইটিতে পড়াশোনা। চন্দ্রকান্তের কথায়, ‘জানেন, কোটা থেকে ছেলের বাড়িতে আসার ট্রেনের টিকিটের টাকাটা শুধু জোগাতে পারতাম। ওখানে ওর থাকা খাওয়ার ব্যবস্থা কোচিং সেন্টারের তিন শিক্ষক করে দিয়েছিলেন। আমরা কোটায় গেলে যে সমস্ত খাবার ওরা আমাদের খাওয়াতেন, তা কোনো দিন বাড়িতে খাইনি। আসলে ওরা প্রথমেই বাৎসল্যের প্রতিভাটা বুঝতে পেরেছিলেন।’ বাৎসল্য ছাড়াও আরও পাঁচ সন্তান রয়েছে চন্দ্রকান্তের। তাদের কেউই এখনও প্রতিষ্ঠিত নয়। সকলেই পড়াশোনা করছে। ঝালাই মিস্ত্রি বাবা তাদেরকেও বাৎসল্যের জায়গায় পৌঁছে দিতে বদ্ধ পরিকর। সূত্র-ঢাকা লাইভ ২৪ ডটকম

ad

পাঠকের মতামত