191603

বিএনপিকে ছাড় দেবে না জামায়াত

বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের অন্যতম শরিক জামায়াতে ইসলামী আসন্ন ছয় সিটি করপোরেশন নির্বাচনেই একক প্রার্থী দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। গত সোমবার জোটের বৈঠকে সিদ্ধান্তের পরও জামায়াতের প্রার্থীরা ঢাকাসহ ছয়টি সিটি করপোরেশনে নির্বাচনী তৎপরতা চালাচ্ছে। দলটির কয়েকজন নেতার সঙ্গে কথা বলে জানাগেছে, আসন্ন সিটি নির্বাচনে বিএনপিকে ছাড় না দেয়ার মনোভাব নিয়েই তারা একক প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেছেন।

জামায়াতের একাধিক নেতা জানিয়েছেন, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) রাজশাহী, বরিশাল, খুলনা, গাজীপুরে সম্ভাব্য প্রার্থী দেওয়ার সিদ্ধান্ত চুড়ান্ত করেছে। ইতোমধ্যেই ঢাকা ও সিলিটে একক প্রার্থী ঘোষণা করেছে দলটি। ঢাকা উত্তরে মেয়র নির্বাচনে জামায়াতে ইসলামীর মুহাম্মদ সেলিমউদ্দিন ও সিলেটে এহসানুল মাহবুব জুবায়ের তৎপরতা চালাচ্ছেন।

এছাড়া রাজশাহী সিটি করপোরেশন নির্বাচনে প্রার্থিতার জন্য মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে নগরীর সেক্রেটারি অধ্যক্ষ সিদ্দিক হোসাইনকে। বরিশাল, গাজীপুর ও খুলনায় এখনও প্রার্থী চূড়ান্ত হয়নি।

নাম প্রকাশে অনেচ্ছুক জামায়াতের কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য জানান, সবগুলো সিটিতেই প্রার্থী ঠিক করতে শাখাগুলোকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে সিলেটে এহসানুল মাহবুব জুবায়ের, ঢাকায় মো. সেলিম উদ্দিন, রাজশাহীতে অধ্যক্ষ সিদ্দিক হোসাইনকে চূড়ান্ত করা হয়েছে। বাকি তিন সিটির প্রার্থী চূড়ান্তকরণের কাজ চলছে।

তিনি বলেন, দলের নীতিনির্ধারণীদের সভায় সিটি করপোরেশনগুলোতে একক প্রার্থী দেওয়ার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। তবে কোথাও জোটের সঙ্গে সমঝোতা হলে প্রার্থিতা উহ্য করা হবে।
তিনি বলেন, শুধু দর কষাকষির জন্য মেয়র হিসেবে প্রার্থিতা দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এক্ষেত্রে মেয়র প্রার্থী হিসেবে জোটের মনোনয়ন না পেলেও কাউন্সিলর প্রার্থী নিয়ে এগোনো যাবে।

জামায়াতের প্রার্থী দেওয়ার বিষয়টি নিয়ে ২০ দলীয় জোটের প্রায় অনেক নেতাই বিষয়টিকে রাজনৈতিক কৌশল হিসেবে দেখছেন। যদিও কোনও নেতাই স্বপরিচয়ে উদ্ধৃত হতে রাজি হননি।

অনেকে বলছেন, ‘দরকষাকষি করতেই প্রার্থিতা দেওয়া হচ্ছে এককভাবে। এক্ষেত্রে জোটের ওপর প্রভাব খুব বেশি না পড়লেও সম্পর্কে প্রভাব পড়বে। বিএনপির মধ্যেও বিষয়টি নিয়ে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে।’

যদিও জামায়াত মনে করছে, যেহেতু ইতোমধ্যে কিছু জায়গায় প্রার্থী নির্ধারণ নিয়ে তাদের সঙ্গে কোনও আলোচনা করা হয়নি, এ কারণে আগামীতে যে কোনও সিটিতেই আলোচনা না করলে জামায়াত প্রার্থিতা প্রত্যাহার করবে না। নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধন স্থগিত থাকলেও দলটির সিদ্ধান্ত স্বতন্ত্র হিসেবে প্রার্থিতা করবেন মনোনীতরা।

এ প্রসঙ্গে জামায়াতের কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র প্রার্থী এহসানুল মাহবুব জুবায়ের বলেন, ‘আশা করি, কোনও প্রভাব পড়বে না। ২০ দলীয় জোট হচ্ছে জাতীয় নির্বাচনের জন্য। আমাদের সর্বাধিক বিবেচনা থাকবে, জাতীয় নির্বাচনে প্রার্থী যিনিই হোন, তার জন্য চেষ্টা ও কাজ করবো।’

তিনি জানান, ‘স্থানীয় সরকারের নির্বাচনগুলোতে আমরা প্রার্থী দেওয়ার চেষ্টা করছি। এক্ষেত্রে দলের কাজের ক্ষেত্র ও আমাদের কাজ করার সুযোগ সৃষ্টি হবে। স্থানীয় বিষয়গুলো কেন্দ্র থেকে নজরদারি আছে। আমরা সম্ভাব্য জায়গাগুলোতে প্রার্থী, আগ্রহ ও শারীরিক অবস্থা থাকলে দেওয়ার চেষ্টা করছি। এরপরও আলোচনার পর এসব বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’

এদিকে হঠাৎ করে সিটি করপোরেশনগুলোতে জামায়াতের প্রার্থী দাঁড় করিয়ে দেওয়ায় নানা সন্দেহ ঘুরপাক খাচ্ছে বিএনপিকর্মীদের মধ্যে। গত সোমবার খালেদা জিয়ার কার্যালয়ে ২০ দলীয় জোটের বৈঠকে অংশ নেওয়া জামায়াতের কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদের সদস্য আব্দুল হালিম জোটের সিদ্ধান্ত মেনে নেওয়ার কথা জানিয়েছিলেন।

ওই সভায় সিদ্ধান্তের পর বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, খালেদা জিয়া নাম চূড়ান্ত করার পর আগামী শনিবার তাদের প্রার্থীর নাম ঘোষণা হতে পারে। আমাদের সময়.কম

ad

পাঠকের মতামত