191441

ভুঁড়ি বাড়লেই কেন হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বাড়ে?

 

ভুঁড়ির সঙ্গে হার্টে অ্যাটাকের সরাসরি যোগ রয়েছে। সম্প্রতি প্রকাশিত এক গবেষণা পত্রে গবেষকরা দাবি করেছেন যে মধ্যপ্রদেশ যত বাড়বে, তত খারাপ হতে থাকবে হার্ট। ফলে বাড়বে হার্ট অ্যাটাক এবং করনারি আর্টারি ডিজিজে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা। তাই তো সময় থাকতে থাকতে ভুঁড়ি কমিয়ে ফেলাটা জরুরি, না হলে কিন্তু বেজায় বিপদ! প্রসঙ্গত, এই বিষয়ে আলোচনা করতে গিয়ে বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছে, শরীরে, বিশেষত পেটে মেদ জমতে শুরু করলে রক্তে খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়তে শুরু করে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই হার্টে রক্ত সরবরাহকারি ধমনীতে ব্লকেজ সৃষ্টি হওয়ার আশঙ্কা বৃদ্ধি পায়। সেই সঙ্গে বাড়ে হার্ট অ্যাটাকের সম্ভাবনাও।

এখন প্রশ্ন হল যাদের ইতিমধ্যেই পেটে পরিধি বেড়ে গেছে, তারা মেদ ঝরাবেন কিভাবে? এক্ষেত্রে নিয়মিত অল্প বিস্তর শরীরচর্চা করার পাশাপাশি বিশেষ কিছু খাবার খাওয়া শুরু করতে হবে। তাহলেই ওজন কমতে থাকবে চোখে পরার মতো। সেই সঙ্গে হার্টের কোনও ধরনের ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কাও হ্রাস পাবে। কিন্তু ওজন হ্রাসের সঙ্গে বিশেষ কিছু খাবার খাওয়ার কি সম্পর্ক?

একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে নীচের খাবারগুলি নিয়মিত খাওয়া শুরু করলে শরীরের অন্দরে এমন কিছু পরিবর্তন হতে শুরু করে যে ওজন হ্রাসের প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত হয়। ফলে ওজন কমতে একেবারেই সময় লাগে না। শুধু তাই নয়, হার্টের কর্মক্ষমতা এতটা বেড়ে যায় যে হার্টের কোনও ধরনের ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা একেবারে কমে যায়।

এক্ষেত্রে যে যে খাবারগুলো আপনি প্রতিদিন কমবেশি খেতে পারেন সেগুলো হলো :

বাদাম: এতে উপস্থিত মনো এবং পলিআনস্যাচুরেটেড ফ্যাট, রক্তে উপস্থিত খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে শুরু করে। ফলে হার্টের কোনও ধরনের ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা একেবারে কমে যায়। সেই সঙ্গে শরীরে ফাইবারের মাত্রা বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে ক্ষিদে কমে যেতে শুরু করে। ফলে শরীরে ক্যালরির প্রবেশ কমতে থাকার কারণে ওজন বৃদ্ধির সম্ভাবনাও হ্রাস পায়।

আপেল: সুস্বাদু এই ফলটির অন্দরে রয়েছে পেকটিন নামক একটি উপাদান, যা এত মাত্রায় পেট ভরিয়ে দেয় যে বহুক্ষণ ক্ষিদে পায় না। ফলে বারে বারে খাওয়ার প্রবণতা কমে। আর খাওয়ার পরিমাণ কমলে ওজন বৃদ্ধির আশঙ্কাও যে কমে, তা নিশ্চয় আর বলে দিতে হবে না। প্রসঙ্গত, আপেলে পেকটিনের পাশাপাশি প্রচুর মাত্রায় মজুত রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ভিটামিন সি এবং ফাইবার। এই উপাদানগুলি হার্টের কর্মক্ষমতা বাড়াতেও বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। সেই সঙ্গে শরীরকে ভিতর থেকে এতটা শক্তিশালী করে তোলে যে ছোট-বড় কোনও রোগই ধারে কাছে ঘেঁষতে পারে না।

কলা: পটাশিয়ামে পরিপূর্ণ এই ফলটি খাওয়া শুরু করলে রক্তচাপ স্বাভাবিক হতে শুরু করে। ফলে হঠাৎ করে স্ট্রোক এবং হার্ট অ্যাটাক হওয়ার আশঙ্কা হ্রাস পায়। শুধু তাই নয়, নিয়মিত ১-২ টো করে কলা খাওয়া শুরু করলে শরীরে রেজিস্টেন্স স্টার্চের পরিমাণ বাড়তে শুরু করে, যা ওজন হ্রাসে সাহায্য করে। আসলে রেজিস্টেন্স স্টার্চ হজম হতে সময় লাগে। ফলে অনেকক্ষণ পর্যন্ত পেট ভরা থাকার কারণে খাওয়ার পরিমাণ কমতে শুরু করে। আর এমনটা হলে স্বাভাবিকভাবেই ওজন বৃদ্ধির আশঙ্কাও হ্রাস পায়। প্রসঙ্গত, আরেকভাবেও কলা, ওজন হ্রাসে সাহায্য করে থাকে। কিভাবে? কলার অন্দরে উপস্থিত একাধিক উপকারি উপাদান লিভারের ফ্যাট বার্নিং মোডকে অ্যাকটিভ করে দেয়। ফলে অতিরিক্ত ওজন কমে যেতে একেবারেই সময় লাগে না।

জাম: এই ফলটিতে উপস্থিত অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, শরীরে উপস্থিত ক্ষতিকর টক্সিক উপাদানদের বের করে দেওয়ার মধ্যে দিয়ে হার্টের কর্মক্ষমতা বাড়াতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। সেই সঙ্গে শরীরে ফাইবার এবং ম্যাগনেসিয়ামের মাত্রাকেও বাড়িয়ে তোলে। প্রসঙ্গত, ফাইবার অনেকক্ষণ পর্যন্ত পেট ভিরিয়ে রাখার মাধ্যমে ওজন কমায়, আর ম্যাগনেসিয়াম হজম ক্ষমতা বাড়িয়ে তুলে অতিরিক্তি ওজনকে ঝরিয়ে দেয়। তাই তো হার্টের পাশাপাশি সার্বিকভাবে শরীরের সচলতা যদি বাড়াতে চান, তাহলে নিয়মিত জাম খেতে ভুলবেন না যেন!

ব্রকলি: ক্রসিফেরাস পরিবারের এই সদস্যটির শরীরে মজুত রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার, ভিটামিন সি এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। এই উপাদানগুলি একদিকে যেমন হার্টের কর্মক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে, তেমনি ভুঁড়ি কমানোর পাশাপাশি ক্যান্সারের মতো মারণ রোগকে দূরে রাখতেও বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। এই কারণেই তো চিকিৎসকেরা প্রতিদিন ব্রকলি খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। প্রসঙ্গত, ব্রকলি খেতে যদি ইচ্ছা না করে, তাহলে ফুলকপি বা বাঁধাকপিও খেতে পারেন। এই সবজি দুটি খেলেও সমান উপকার পাওয়া যায়।

ad

পাঠকের মতামত