191460

‘বাস থামিয়ে আমার দিকে তাকিয়ে ছিল ড্রাইভার’

বিনোদন ডেস্ক : কথায় আছে- ‘রেগে গেলেন তো হেরে গেলেন’। এ কথা অনেকেই জানেন। তবুও জেনে বা না জেনে হেরে যান অনেকে। বারবারই ভাবেন রাগ কমাবেন, নিজের নিয়ন্ত্রণের মধ্যে রাখবেন। কিন্তু তা কি হয় শেষাবধি! বছরে ৩৬৫টি দিন মেপে মেপে চলা হয়তো অনেকের পক্ষেই সম্ভব না, ভুল-ত্রুটি হয়েই যায়। আর তাই বছর ঘুরতেই পেছনের ভুলগুলো কিংবা নিজের নেতিবাচক কোনো স্বভাব-অভ্যাস বদল করার পণ করেন অনেকেই। সাধারণ মানুষতো বটেই, তারকারাও বদলাতে চান নিজেকে।

এ বছর অভিনেত্রী পরীমণি চান- নিজের রাগ কমাতে, নিয়ন্ত্রণের মধ্যে রাখতে। তবে পরীমণি জানিয়েছেন, রাগারাগির শুরুটা তার দিক থেকে হয় না। এটি তার কাছে নিজেকে ক্ষমা করার একটি টোটকা হিসেবেই কাজ করে। যেহেতু নিজের দিক থেকে রাগারাগির সূত্রপাত হয় না, সেহেতু পরীমণি তার রাগ পড়ে গেলে ভাবেন- ‘দোষটি তো আমার ছিল না’। রাগ সম্পর্কে ফোনালাপকালে অভিনেত্রী পরী বলেন, ‘রাগ পড়ে গেলে মনে হয় যে, বিষয়টি সামান্য ছিল। যখন রাগী তখন তো আর সামান্য মনে হয় না। যদি মনে হতো, তাহলে রাগই করতাম না।’

তবে দু’টি বিষয়ে ভীষণ আপত্তি তার। মুখে মুখে তর্ক এবং মিথ্যা দোষারোপ সহজে মেনে নিতে পারেন না পরী। নিজের ‘রাগ’ বিষয়ক একটি মজার ঘটনা তিনি শেয়ার করেছেন। ঘটনাটি ঘটেছে ‘স্বপ্নজাল’ সিনেমার শুটিং চলাকালে। গিয়াস উদ্দিন সেলিমের চলচ্চিত্র ‘স্বপ্নজাল’এ অভিনয় করেছেন পরী। সে কথা ইতোমধ্যে অনেকেই জানেন। তবে অজানা বিষয়টি হচ্ছে- সিনেমাটির শুটিংয়ে পরীমণির রাগের ঘটনা।

 

পরীমণির মুখ থেকে শোনা সেই ঘটনাটি পরীভক্তদের জন্য তুলে ধরা হলো:

চাঁদপুরে আমাদের স্বপ্নজাল চলচ্চিত্রের শুটিং হয়েছিল। মাঝামাঝি একটি সময়ে পাঁচ-ছয় দিন বন্ধ ছিল শুটিং। তখন আমি ঢাকায় ফিরে আসি। তারপর চার-পাঁচ দিন থেকে আবার ফিরে যাই চাঁদপুরে। প্রথমবার তো লঞ্চে চড়ে গিয়েছিলাম সেখানে। লঞ্চে শুটিং ছিল, তাই। কিন্তু দ্বিতীয়বার গিয়েছি নিজের গাড়ি চড়ে।

গাড়ির একটি ঘটনা বলি। দ্বিতীয়বার যখন রওনা করি, তখন অনেক রাত। রাত সাড়ে ১২টা কি ১টার দিকের ঘটনা। পুরো ইউনিট জানত যে, আমি রাত দশটার মধ্যে রওনা করেছি, শুধু সেলিম ভাই জানত সত্যি কথাটা। তাকে আমি টেনশন দিতে চাইনি মিথ্যা বলে। আমি আসলে ১২টার পর রওনা করেছিলাম। রাস্তা-ঘাট একদম খালি। হঠাৎ করে পুরান ঢাকার ওদিকে, জায়গাটির নাম আমার সঠিকভাবে খেয়াল নেই। একটি রাস্তার বাঁকে ঘটেছিল ঘটনাটি। খুব ডেঞ্জারাস। আমার গাড়ির ড্রাইভার খুব সাবধানেই গাড়ি চালাচ্ছিলেন, কিন্তু একটি বাস এসে পুরো চাপিয়ে দিলো আমার গাড়িটা। আমি তখন রাগ কন্ট্রোল করতে পারিনি। কারণ কোনো জ্যাম নেই, গাড়ি নেই, কিছু নেই, পুরো রাস্তা ফাঁকা। তবুও বাসের ড্রাইভার আমার গাড়িটি দেখতে পেল না! গাড়িটিকে এভাবে কেন চাপা দিলো! আমি কোনো কিছু না ভেবেই গাড়ি থেকে নেমে চিৎকার চেঁচামেচি শুরু করে দিয়েছিলাম বাসের ড্রাইভারের সঙ্গে। বলেছিলাম, হ্যাঁ আপনি কি পাগল নাকি? অন্ধ নাকি? এই-সেই।

বাসের ড্রাইভার কোনো কথাই বলেনি। আমি এত বেশি চিৎকার চেঁচামেচি করেছি রাস্তায় নেমে যে, বাস থামিয়ে আমার দিকে তাকিয়ে ছিল ড্রাইভার। বলে- আপনি নায়িকা আপা না? আমি ওকে বললাম, তুমি কি রাতের অন্ধকারে সবাইকে নায়িকা দেখো! নায়িকা দেখো তুমি!

বাস ড্রাইভার বলেছিল যে- আপনি তো পরী আপা। আমি আবারও বললাম, তুমি কি পরী দেখো, জ্বীন দেখো! তোমাকে জ্বীনে ধরছে! এরপর আমি তাড়াতাড়ি করে নিজের গাড়িতে উঠে ড্রাইভারকে বললাম, তাড়াতাড়ি গাড়ি টান দিন।

কিছুক্ষণ পর আমি নিজেই ভীত হয়ে গিয়েছিলাম। ওহ মাই গড! আমি কী করেছিলাম! আমি গাড়ি থেকে নেমে ঝগড়া ঝগড়া-ঝাটি শুরু করে দিয়েছিলাম। সেদিনের রাগের এ বিষয়টি আমার কাছে অনেক মজার ছিল। আমি এটি ভুলতে পারছি না। সারাটি পথ কী হাসি যে হেসেছিলাম! এটা কী ছিল, কেন এমন হলো, ঐ ড্রাইভার আমার দিকে কীভাবে তাকিয়েছিল- এসব ভেবে হাসি পাচ্ছিল। উৎস: প্রিয়.কম

ad

পাঠকের মতামত