191207

অস্বস্তিতে ছাত্রীরা ছাত্রীনিবাসে সিসি ক্যামেরায়

বরিশাল ব্রজমোহন (বিএম) কলেজের বনমালী গাঙ্গুলী ছাত্রীনিবাসকে ক্লোজ সার্কিট (সিসি) ক্যামেরার আওতায় নিয়েছে কলেজ কর্তৃপক্ষ। চলতি মাস থেকে ছাত্রীনিবাসের ভেতরে ও বাইরে চারটি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়। কর্তৃপক্ষের দাবি, ছাত্রীনিবাসের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এবং অনিয়ম রোধে এ উদ্যোগ। তবে এর বিরোধিতা করে ছাত্রীরা বলেছেন, সিসি ক্যামেরার কারণে তাদের প্রাইভেসি নষ্ট হচ্ছে, তারা অস্বস্তিতে পড়েছেন।

ছাত্রীনিবাস সূত্রে জানা গেছে, সেখানকার তিনটি ভবন কোহেলি, কাকলী ও করবীতে প্রায় এক হাজার আবাসিক ছাত্রী আছেন। গত মাসের শেষ দিকে কলেজ কর্তৃপক্ষ ছাত্রীনিবাসের প্রধান গেটে দুটি, অফিস কক্ষে একটি এবং ডাইনিংয়ে একটি সিসি ক্যামেরা স্থাপন করে।

কোহেলি ভবনের আবাসিক ছাত্রী ও ছাত্রলীগের সদস্য মনিরা খানম বলেন, দেশের কোনো কলেজের ছাত্রীনিবাসে সিসি ক্যামেরা নেই। বিএম কলেজের শিক্ষকরা ছাত্রীনিবাসগুলোকে তাদের আয়ত্তে রাখতে এই ক্যামেরা স্থাপন করেছেন। তিনি প্রশ্ন তোলেন, ডাইনিংয়ে সিসি ক্যামেরা লাগানোর মধ্য দিয়ে নিরাপত্তা নিশ্চিত হয় কীভাবে?

তাছাড়া ছাত্রীনিবাসে ছাত্রীরা নিজেদের পছন্দের পোশাক পরে চলাফেরা করতেও অস্বস্তিতে পড়ছেন। কেননা, তাদের চলাফেরা, কথাবার্তা সব কিছুই ক্যামেরায় ধারণ করা হচ্ছে। সেইসঙ্গে সিসি ক্যামেরার ভিডিও কতটা নিরাপদে সংরক্ষিত থাকবে, তা নিয়েও সন্দীহান ছাত্রীরা।

বনমালী গাঙ্গুলী ছাত্রীনিবাসের সাবেক এক তত্ত্বাবধায়ক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘ছাত্রীনিবাসে সিসি ক্যামেরা বসানো কখনোই উচিত নয়। কেননা ছাত্রীদের প্রাইভেসি থাকে না। অফিস কক্ষে সিসি ক্যামেরা বসানোর কারণে ছাত্রীনিবাসের অনেকটা অংশই ক্যামেরার আওতায় থাকছে। ছাত্রীরা এর পাশে একটি মিনি ক্যান্টিনে সব সময় আসা-যাওয়া করছে। ডাইনিংয়ে কোনো ছাত্রীই স্বচ্ছন্দে চলাফেরা করতে পারবে না। তাছাড়া সিসি ক্যামেরার ভিডিও যে কোনো সময়ে বেহাত হতে পারে। কর্তৃপক্ষের উচিত বিকল্প চিন্তা করা।’

জানতে চাইলে বনমালী ছাত্রীনিবাসের তত্ত্বাবধায়ক প্রফেসর শাহ আলম বলেন, কলেজের তরফ থেকে সিসি ক্যামেরা বসানো হয়েছে। বহিরাগত যারা আসে, তাদের নজরদারি করার জন্য এবং আবাসিক ছাত্রীদের আসা-যাওয়া নিয়ন্ত্রণে এ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

এ প্রসঙ্গে বিএম কলেজের সদ্য যোগদানকারী অধ্যক্ষ প্রফেসর মো. শফিকুর রহমান শিকদার বলেন, তিনি যোগদান করার আগেই ছাত্রীনিবাসে সিসি ক্যামেরা বসানো হয়েছে। উপাধ্যক্ষ বিষয়টি দেখভাল করেছেন। ছাত্রীদের নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য সিসি ক্যামেরা বসানো হয়েছে বলে তাকে অবহিত করা হয়েছে। ডাইনিংয়ের অনিয়ম রোধে সেখানেও সিসি ক্যামেরা বসানো হয়েছে।

তিনি বলেন, এক্ষেত্রে ছাত্রীদের গোপনীয়তা নিশ্চিত করা হচ্ছে কি-না তা খতিয়ে দেখা হবে। এজন্য তিনি ছাত্রীনিবাসে গিয়ে ছাত্রীদের সঙ্গে মতবিনিময় করবেন।

ad

পাঠকের মতামত