বিয়ে করাই এখন তার ব্যবসা
লরি পরিবহন ব্যবসা ভালো চলছিল না বি পুরুষোত্তমনের। বিকল্প ব্যবসা হিসেবে তাই বড়লোক বিধবা এবং বিবাহবিচ্ছিন্নাদের বিয়ে করা শুরু করেছিলেন ভারতে তামিলনাড়ুর কোয়েম্বাটুর জেলার ভেল্লালোরের ওই বাসিন্দা। গত আট বছর ধরে এধরনের আটজন নারীকে বিয়ে করে প্রায়ে সাড়ে চার কোটি টাকার মালিক হয়ে গিয়েছিল ৫৭ বছরের পুরুষোত্তমন।
কিন্তু ফের বিধাতা পুরুষের বক্র দৃষ্টির শিকার হয়েছে পুরুষোত্তমন। তার চতুর্থ স্ত্রী, চেন্নাইয়ের অধ্যাপক ইন্দিরা গান্ধীই প্রথম স্বামীর নামে প্রতারণার অভিযোগ করেন। তারপরই পুরুষোত্তমনের আটটি কুকীর্তির কথা সামনে আসে।
ইন্দিরা গান্ধী পুলিশকে জানিয়েছেন, পুরুষোত্তমন তাকে বলেছিলেন, তিনি যেন তার চেন্নাইয়ের বিলাসবহুল বাড়িটি বিক্রি করে দেন, যাতে তারা কোয়েম্বাটুরে নতুন দাম্পত্য জীবন শুরু করতে পারেন। সেই মতো দেড় কোটি টাকায় বাড়ি বিক্রি করে পুরো টাকাটাই স্বামীর হাতে তুলে দিয়েছিলেন ইন্দিরা গান্ধী। তারপর থেকেই ফেরার পুরুষোত্তমন। এরপরই পুলিসে অভিযোগ জানাতে গিয়ে তিনি জানতে পারেন তাঁর আগে আরও তিনজনকে এবং পরে আরও চারজনকে বিয়ে করেছিল পুরুষোত্তমন। তাদের কাছ থেকেও প্রচুর অর্থ হাতিয়েছিল সে।
কোয়েম্বাটুর পুলিশ তার তিন স্ত্রীর কাছ থেকে অভিযোগ পেয়ে এফআইআর রুজু করে তদন্তে নেমেছে।
তার সপ্তম স্ত্রী কুমুদাবল্লী অভিযোগ করেছেন, পুরুষোত্তমন তাকে বলেছিল, জমি সংক্রান্ত একটি মামলায় তার ১৭ কোটি টাকা আটকে আছে। সমস্যা মেটাতে তার কিছু টাকার প্রয়োজন। স্বামীর প্রবোধবাক্যে ভুলে কুমুদাবল্লী তার কৃষিজমি বিক্রি করে ৩ কোটি টাকা দেয় পুরুষোত্তমনকে। তারপরই সেখান থেকে চম্পট দেয় পুরুষোত্তমন।
পুলিস আরও জেনেছে, কোয়েম্বাটুরের গান্ধীপুরমে লরি পরিবহন ব্যবসা ছিল পুরুষোত্তমনের। তার স্ত্রী কয়েক বছর আগে মারা গিয়েছে। বাড়িতে তার বৃদ্ধা মা এবং ১৮ বছরের মেয়ে রয়েছে। পরিবহন ব্যবসায় লোকসান হওয়ায় বিয়ে করে বড়লোক বিধবা এবং বিবাহবিচ্ছিনাদের টাকা হাতানোর ছক কষেছিল সে। এব্যাপারে তার সহায়ক ছিল কোয়েম্বাটুরের একটি পাত্রপাত্রী সংস্থার দুটি কর্মী মোহন এবং বনজা। তারাই পুরুষোত্তমনকে এধরনের নারী যারা দ্বিতীয় বিয়েতে ইচ্ছুক, সেই খবর দিত। তাদেরকেও খুঁজছে পুলিস। তারপরই রূপবান এবং বাকচতুর পুরুষোত্তমন নিজের রূপ এবং কথার জালে ভোলাত ওই নারীদের। এভাবেই সবিতা, ঊষারানি, বিমলা, ইন্দিরাগান্ধী, শান্তিনী, চিত্রা, কুমুদাবল্লী এবং সুশীলাকে বিয়ে করেছিল পুরুষোত্তমন। নিজের প্রতি বিশ্বাস বাড়াতে কয়েকটি বিয়ে নথিভুক্তও করেছিল সে।
প্রতারক পুরুষোত্তমনের খোঁজে জোরদার তল্লাশি শুরু করেছে পুলিশ। সূত্র: আজকাল
