186623

সুখবর! বাংলাদেশ থেকে শতাধিক ইমাম ও মুয়াজ্জিন নেবে কাতার

কাতারে মুয়াজ্জিন ও ইমামদের অধিকাংশই বাংলাদেশি। প্রায় দুই দশক ধরে রাজধানী দোহাসহ কাতারের বিভিন্ন শহরের মসজিদে সুনামের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করছেন বাংলাদেশি ইমাম, মুয়াজ্জিন ও খতিবেরা। ১৯৯০ সালে প্রথম সরকারিভাবে ইমাম-মুয়াজ্জিন নেওয়া শুরু করে কাতার। মাঝে দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর আবার এই দেশে বাংলাদেশি ইমাম-মুয়াজ্জিন আসার সুযোগ তৈরি হচ্ছে। শিগগিরই শতাধিক ইমাম-মুয়াজ্জিন নেবে কাতার।

১৯৯০ সালে প্রথম পরীক্ষা নিয়ে কাতারে নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল ১৮ জন ইমাম-মুয়াজ্জিন। পরের বছর আসেন আরও ছয়জন। ধীরে ধীরে এ সংখ্যা বাড়তে থাকে। বর্তমানে কাতারে কর্মরত ইমাম-মুয়াজ্জিনের সংখ্যা ৭০০ জনের বেশি। সর্বশেষ ২০০৭ এবং ২০০৮ সালে দুই দফায় বাংলাদেশ থেকে শতাধিক ইমাম-মুয়াজ্জিনকে নিয়োগ দিয়েছিল কাতার। এরপর দীর্ঘদিন ইমাম-মুয়াজ্জিন নিয়োগ দেওয়া বন্ধ ছিল।

জানা গেছে, সম্প্রতি কাতার ওয়াকফ ও ধর্ম মন্ত্রণালয় বাংলাদেশ থেকে ইমাম-মুয়াজ্জিন আনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এ লক্ষ্যে কাতার থেকে পরীক্ষক দল ঢাকায় যাওয়ার সিদ্ধান্তও চূড়ান্ত হয়েছে। প্রথম দফায় যাবেন পরীক্ষা ও যাচাই-বাছাই কমিটির সমন্বয়ক ও বাংলাদেশি ইমাম হাফেজ মাওলানা ফখরুল হুদা ও একজন বিদেশি কর্মকর্তা। রাজধানী ঢাকার মোহাম্মদপুর কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ কমপ্লেক্সে ১০ দিনব্যাপী প্রথম পর্যায়ের সাক্ষাৎকার ও পরীক্ষা চলবে। এ ধাপে উত্তীর্ণদের চূড়ান্ত পরীক্ষা নিতে আগামী ৮ ফেব্রুয়ারি কাতার ধর্ম মন্ত্রণালয়ের উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধিদল ঢাকায় যাবে।

ইমাম ও খতিব পরীক্ষক কমিটির সমন্বয়ক ফখরুল হুদা প্রথম আলোকে বলেন, এবারের যাচাই-বাছাই শেষে বাংলাদেশ থেকে শতাধিক ইমাম ও মুয়াজ্জিনকে নিয়োগ দেওয়া হবে। ২০ থেকে ৪৫ বছর বয়স পর্যন্ত যেকোনো কর্মক্ষম সুস্থ হাফেজ ঢাকায় সাক্ষাৎকারে অংশ নিতে পারবেন। প্রার্থীকে অবশ্যই পুরো কোরআন শরিফের হাফেজ হতে হবে। প্রয়োজনীয় ইসলামি জ্ঞান ও ভালো কণ্ঠের অধিকারী এবং আরবি জানা প্রার্থীদের অগ্রাধিকার দেওয়া হবে।

কাতার ধর্ম মন্ত্রণালয়ের বার্ষিক পরিসংখ্যানে দেখা যায়, বর্তমানে কাতারে ১ হাজার ৮০০ মসজিদ রয়েছে। প্রতিটি মসজিদে একজন ইমাম, একজন মুয়াজ্জিন এবং একজন খতিব রয়েছেন। কাতার ধর্ম মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদেও দায়িত্ব পালন করছেন বাংলাদেশি ইমামরা।

কাতারের দোহায় সর্ববৃহৎ বুখারি মসজিদের ইমাম মাওলানা ওবায়দুল্লাহ ১৪ বছর ধরে এ মসজিদে ইমাম হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। পাশাপাশি দীর্ঘ ২৪ বছর ধরে তিনি প্রতি শুক্রবার জুমার খতিব হিসেবেও দায়িত্ব পালন করে আসছেন। প্রথম আলোকে তিনি বলেন, ‘ইমাম হিসেবে নিয়োগের দুই মাস পর থেকেই আমি খুতবা দেওয়ার দায়িত্ব পাই। সেই থেকে ২৪ বছর ধরে এ দায়িত্ব পালন করছি। কাতারে বাংলাদেশি আলেমদের মেধা, আচরণ ও অন্যান্য সাফল্যের কারণে কাতারি নাগরিকদের কাছে বাংলাদেশি ইমামদের কদর বেশি।’

বর্তমানে দোহা জাদিদের ইবনে হাজম মসজিদে কর্মরত মাওলানা ইউসুফ নূর ১৯৯৬ সালে সরকারিভাবে কাতারে এসেছিলেন। তাঁর সঙ্গে এসেছিলেন আরও ৭৫ জন। ইউসুফ নুর প্রথম আলোকে বলেন, কাতারে কর্মরত ইমাম-মুয়াজ্জিনদের পরিবারের জন্য সরকারিভাবে ফ্রি বাসা, বিনা মূল্যে পানি ও বিদ্যুৎ সুবিধা দেওয়া হয়ে থাকে। সন্তানদের ফ্রি পড়ালেখার পাশাপাশি আরও অন্যান্য সুযোগ ভোগ করেন তাঁরা। এ ধরনের সুযোগ-সুবিধা অন্য কোনো দেশে বিরল।

ad

পাঠকের মতামত