186165

‘বিয়ে করব না, ফুটবল খেলব’

সাত সকালে উঠে কোথায় বাসন-কোসন মেজে রাখবে তা নয়, মেয়ে যাচ্ছে মাঠে ফুটবল খেলতে। মেয়েটা তো দেখছি, সমাজে নাক-কান কাটাবে। ও পায়ে কি ফুটবল হয় রে! বিয়ে করে নে। মেয়েকে উদ্দেশ্য করে কথা গুলো বলছিলেন সায়রা খাতুনের বাবা পতৌদি আনসারি।

.
সম্প্রতি বাড়িতে এই নিয়ে অশান্তি চরমে ওঠায় একাই বাসে চড়ে ১৪ কিলোমিটার দূরে ভারতের মানবাজার থানায় হাজির ১৫ বছরের সায়রা।

পুলিশকর্মীদের তিনি বলেন, ‘আমি এখন বিয়ে করব না। বাড়িও ফিরব না। আমি ফুটবল খেলব।’ খবর: আনন্দবাজার পত্রিকা।

জেলা চাইল্ড লাইনের কো-অর্ডিনেটর অশোক মাহাতো জানান, খবর পেয়ে থানায় সায়রার বাবা-মাকে ডেকে এনে দেড় ঘণ্টা ধরে চলে কাউন্সেলিং। অবশেষে মুচলেকা দিয়ে মেয়েকে নিয়ে বাড়ি ফেরেন তারা। ঘটনাচক্রে, বৃহস্পতিবার বাঁকুড়ার প্রশাসনিক সভার মঞ্চে কন্যাশ্রী মেয়েদের হাতে যখন ফুটবল তুলে দিচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী, তার ঠিক আগের দিন এমন কাণ্ড ঘটিয়ে ফেলেছে পুরুলিয়ার মেয়েটি।

সেই পুরুলিয়া, যে জেলার রেখা কালিন্দী, বীণা কালিন্দী, আফসানা খাতুনদের হাত ধরে রাজ্যে নাবালিকা বিয়ে রোখা আন্দোলনের চেহারা নিয়েছিল।

সায়রার মা নাসিমা বিবি বলেন, ‘পড়াশোনায় খারাপ ছিলাম না। কিন্তু, অল্প বয়সে বিয়ে হয়ে গিয়েছিল। আমার মেয়েটা পড়ায় ভাল, খেলাতেও ভালো। তাহলে সাত তাড়াতাড়ি বিয়ে কেন?’

সায়রার বাবা পতৌদি আনসারি বলেন, ‘বেশ কিছুদিন ধরে ভোরে উঠে দৌড়তে যাচ্ছিল। বিশ্বাস হয়নি। ভেবেছিলাম খারাপ কোনো ছেলের পাল্লায় পড়েছে হয়তো। আর সমাজেও তো পাঁচ কথা ওঠে!’

গোপালনগর হাইস্কুলের নবম শ্রেণির ছাত্রী সায়রা কন্যাশ্রী ফুটবল দলের সদস্য। তার ক্রীড়া শিক্ষক অপূর্ব মণ্ডল বলেন, ‘মেয়েটা ফরোয়ার্ডে খেলে। প্রতিভা আছে। প্র্যাক্টিস চালিয়ে যেতে বলেছিলাম।’

কোচের কথা মতো বান্ধবী রিয়া মাহাতো, অনন্যা মাহাতোদের সঙ্গে দৌড়ত সায়রা।

ad

পাঠকের মতামত