185973

এসএসসি পরীক্ষা দিতে পারবে না কুমিল্লা বোর্ডের লক্ষাধিক শিক্ষার্থী!

কুমিল্লা মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের লক্ষাধিক শিক্ষার্থী ২০১৮ সালের এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবে না। আগামী ১ ফেব্রুয়ারি থেকে এ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ডের নির্দেশনা মতে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিতে হলে স্কুলের নির্বাচনী পরীক্ষায় শিক্ষার্থীকে অবশ্যই সব বিষয়ে পাস করতে হবে। তবে দেশের অন্যকোন শিক্ষা বোর্ডে এ ধরনের নীতি চালু না থাকলেও কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ড এবারই প্রথম নির্বাচনী পরীক্ষার ফল অনুসরণনীতির পালন করছে।
.
এবছর এসএসসি ও এইচএসসির ফল বিপর্যয়ে বিতর্কিত হয়ে ওঠেন কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান, সচিব, কন্ট্রোলার, ডেপুটি কন্ট্রোলারসহ কর্মকর্তারা। তাদের যোগ্যতা নিয়েও প্রশ্ন ওঠে। খোদ প্রধানমন্ত্রীও কুমিল্লা বোর্ডের ফল নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। ফল বিপর্যয় রোধে স্কুলের নির্বাচনী পরীক্ষাকে হাতিয়ার হিসেবে নেয় শিক্ষা বোর্ড কর্তৃপক্ষ।

কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ড সূত্র জানায়, কুমিল্লার বিভিন্ন স্কুলের নির্বাচনী পরীক্ষায় এক বিষয়ে ফেল করা শিক্ষার্থীই বেশি। যারা নির্বাচনী পরীক্ষায় দুই কিংবা এক বিষয়ে ফেল করেছে, তাদেরও এবার এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেয়ার সুযোগ নেই। ফলে বোর্ডের আওতায় ৬ জেলায় নিয়মিত রেজিস্ট্রেশন করা ২ লাখ ১০ হাজার ৭’শ ৩৭ শিক্ষার্থীর মধ্যে ফরম পূরণ করে এসএসসি পরীক্ষার সুযোগ পেয়েছে ১ লাখ ৩৬ হাজার ৯৯ জন। আর নিয়মিতদের মধ্যেই বাদ পড়েছে ৭৪ হাজার ৬’শ ৩৮ জন। এবার বিগত বছরের অনিয়মিত পরীক্ষার্থী রয়েছে ৭৫ হাজারের বেশি। তাদের মধ্যে এবার ফরম পূরণ করেছে ৪৬ হাজার জন। এখানে বাদ পড়েছে প্রায় ২৯ হাজার পরীক্ষার্থী। সবমিলিয়ে কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ডে এক লাখেরও বেশি পরীক্ষার্থী এবার এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবে না।

এদিকে শিক্ষা বোর্ড কর্তৃপক্ষ নির্দেশনা জারি করে সব উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রধানকে অবগত করেছেন, স্কুলে নির্বাচনী পরীক্ষায় কোনো শিক্ষার্থী এক বিষয়েও ফেল করলে তাকে চূড়ান্ত পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার সুযোগ দেওয়া যাবে না। এর ব্যত্যয় ঘটলে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। স্কুলগুলোর নির্বাচনী পরীক্ষার ফল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার মাধ্যমে বোর্ডে পাঠানোরও নির্দেশনা জারি করা হয়েছে।

নাম প্রকাশ না কারার শর্তে একটি সরকারি স্কুলের প্রধান শিক্ষক পরিবর্তন ডটকমকে বলেন, নির্বাচনী পরীক্ষা কখনো মাপকাঠি হতে পারে না। আমার অভিজ্ঞতা থেকে বলছি, যারা নির্বাচনী পরীক্ষায় এক বা দুই বিষয়ে ফেল করেছে, এমন অনেকেই এসএসসিতে খুব ভালো ফল করেছে।

অপর একটি স্কুলের প্রধান শিক্ষক বলেন, শিক্ষা বোর্ড এবার এক অদ্ভুত নিয়ম করেছে। এতে রাজনৈতিক নেতাদের ফায়দা হাসিলের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে বলে তিনি মন্তব্য করেছেন।

সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) কুমিল্লার সভাপতি বদরুল হুদা জেনু বলেন, এক বা দুই বিষয় ফেল কোনো মাপকাঠি হতে পারে না। এ নীতি বাস্তবসম্মত নয়। প্রশাসন ও শিক্ষা বোর্ড কুমিল্লা শিক্ষা ব্যবস্থাকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে যাচ্ছে। তবে এ নীতি থেকে বের হয়ে আসা দরকার বলে তিনি মনে করেন।

কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক কায়সার আহমেদ পরিবর্তন ডটকমকে জানান, শিক্ষা মন্ত্রণালয়, দুর্নীতি দমন কমিশন এবং আমাদের মহাপরিচালকের নিদের্শ মতো কেবল যারা নির্বাচনী পরীক্ষায় সকল বিষয়ে পাস করেছে, তারাই এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবে। অন্যদের অংশগ্রহনের সুযোগ না। এ জন্য বিপুল সংখ্যায় শিক্ষার্থীর ঝরে পড়ার আশঙ্কা থকলেও শিক্ষা বোর্ড কর্তৃপক্ষের কিছুই করার নেই।

সূত্র: পরির্বতন

ad

পাঠকের মতামত