185729

‘মোবাইল বাবা’ সমাধান করেন হাজারো সমস্যা

শখের মোবাইল ফোনে বহু নম্বর সেভ করা আছে। কিন্তু কল করতে গেলে পছন্দের নম্বর পাওয়া যাচ্ছে না৷ কন্টাক্ট লিস্টে দেখাচ্ছে মাত্র ৭০টি নম্বর। আবার কখনও কখনও রাতভর মোবাইল চার্জ হয়েছে, অথচ ঘুম থেকে উঠে দেখা গেল চার্জই হয়নি৷ অনেক মোবাইল ব্যবহারকারীকে এ ধরনের সমস্যার মুখে পড়তে হয়৷ আর সেই ভুক্তভোগী মোবাইল ব্যবহারকারীদের হাজারো সমস্যা হাসি মুখে সমাধান করে দিচ্ছেন ‘মোবাইল চিকিৎসক’৷ মুখে মুখে সেই চিকিৎসকের নাম বদলে হয়ে গেছে ‘মোবাইল বাবা’৷

কলকাতার সূর্যসারথি সরকার উত্তর দিনাজপুরের ইসলামপুর পুর-শহরের রামকৃষ্ণপল্লীর বাসিন্দা৷ পেশায় প্রাথমিক স্কুলের প্রধান শিক্ষক৷ কিন্তু, এই চেনা পেশা-পরিচয়ের বাইরে এখন তার আরও একটা বিষয়ে ব্যাপক পরিচিতি দিকে দিকে ছড়িয়ে পড়েছে৷ যার পোশাকি নাম হয়েছে ‘মোবাইল বাবা’৷ শুনতে একটু অবাক লাগলেও, ইসলামপুর শহর ছাড়াও আশপাশের মানুষের কাছে তিনি এখন এই নামেই পরিচিত৷

একান্ত সাক্ষাৎকারে ইসলামপুরের ওই শিক্ষক জানান, কলকাতার বাইরে এই রাজ্যে মূলত ২০০৩ নাগাদ মোবাইলের ব্যবহার ছড়িয়ে পড়ে৷ তখন থেকেই তিনি এই ফ্রি সার্ভিস দিয়ে যাচ্ছেন৷ আসলে বাজারে নতুন মোবাইল এলেই তিনি তা কিনতেন৷ শুধু জানার আগ্রহে সব সেটিংস ঘেঁটে দেখতেন৷ ম্যানুয়ালগুলো মন দিয়ে পড়তেন৷ এভাবেই মোবাইলের সফটওয়ার সম্পর্কে প্রচুর তথ্য মগজাস্ত করেছেন৷ প্রথমদিকে বন্ধু-বান্ধবরা কোনো সমস্যায় পড়লে, তার সমাধান করেছেন৷ কিন্তু, দিনে দিনে মুখে মুখে সেই কথা আশপাশে প্রচুর ছড়িয়েছে৷ তাই দিনে তিন-চারজন তার কাছে হাজির হচ্ছেন তাদের বিগড়ে যাওয়া মোবাইল ঠিক করে দেয়ার জন্য৷

তিনি জানান, প্রায় প্রতিদিন সন্ধ্যা হলেই ইসলামপুর বাস টার্মিনাস আড্ডার আসরে যান৷ মোবাইলের নানা সমস্যা নিয়ে সেখানেই সবাই হাজির হয়ে যান৷ আবার কেউ কেউ বাড়িতেও হানা দেন৷ তবে, তাতে বিরক্তি প্রকাশ না করেই হাসিমুখে সবার সমস্যা সমাধান করে দেন তিনি৷ মজার কথা, ডাক্তারদের মতো তিনি মোবাইলের সমস্যা সমাধানের জন্য বাড়িতেও কল পান৷ তাতেও তিনি কারও কারও বাড়িতে গিয়ে হাজির হন৷ তবে এই সমস্যা হাসিমুখে সমাধান করে দেওয়ার জন্য কোন চার্জও তিনি নেন না৷ শুধু কি তাই, অনেক ক্ষেত্রে মোবাইল মেকানিকরাও ব্যর্থ হলে সূর্যের কাছেই পাঠিয়ে দেয়৷ বিষয়টা বেশ মজার ছলেই এক দশক ধরে চালিয়ে আসছেন ইসলামপুরের মোবাইল বাবা৷ উৎস: যুগান্তর।

ad

পাঠকের মতামত