185683

প্রেমের করুণ বিদাইঃ রেললাইন ধরে হাঁটছিল প্রেমিক জুটি; অতঃপর যা হল……

বাড়িতে চলছিলো তাদের সম্পর্ক নিয়ে অশান্তি। পড়াশোনা পর্যন্ত এখনও শেষ হয়নি তার উপর আবার চাকরি পেয়ে জীবনে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পালা। সেই ভাবনায় রেললাইন ধরে হাঁটতে হাঁটতে এই নিয়ে আলোচনায় ব্যস্ত হয়ে অকালে দুরন্ত গতির ট্রেনের ধাক্কায় প্রাণ গেল প্রেমিক-প্রেমিকার।

সোমবার আপ লক্ষ্মীকান্তপুর লোকালের তলায় কাটা পড়ল রিম্পা মোদক (১৫) ও তাপস হালদার (১৭) নামের দুই স্কুল পড়ুয়া।

ওইদিন সকাল আটটার দিকে ট্রেনের সকল যাত্রী দেখলো যে দুটি তাজা প্রাণ কিভাবে নিস্তেজ হয়ে গেলো। ঘটনায় শোকের ছায়া দুই পরিবারে। দু’জনের কাছ থেকে কোনও সুইসাইড নোট পাওয়া যায়নি।

দক্ষিণ বারাসত স্টেশন লাগোয়া গ্রামের প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, এদিন সকাল আটটা নাগাদ দুজনে ঘনিষ্ঠ হয়ে রেললাইন ধরে হাঁটছিল। পিছন দিক দিয়ে ট্রেন আসে। প্ল্যাটফর্ম থেকে চিৎকার করে তাদের সরে আসতে বলা হয়। কিন্তু সে চিৎকারে আমল দেয়নি যুগল। অনেকেই তাদের এই নির্বিকার ভাব দেখে বলছেন, ইচ্ছে করেই রেললাইন ধরে হাঁটছিল দু’জন। মরতেই চেয়েছিল তারা। তবে কেউ বলছেন, প্রেমে মজে ট্রেনের আওয়াজ শুনতে পায়নি প্রেমিক-প্রেমিকা।

একাদশ শ্রেণির ছাত্রী রিম্পা মোদক। ১৫ বছরের রিম্পার সঙ্গে বছর সতেরোর তাপস হালদারের সম্পর্ক দেড় বছরের। জয়নগর কলেজের বিএ প্রথম বর্ষের ছাত্র তাপস। বাড়ি থেকে আপত্তি ছিল তাদের এই সম্পর্কে। রিম্পার বাড়ি থেকে বেশ কয়েকবার শাসানিও দেওয়া হয়েছিল তাপসকে। “মেয়ের পিছু না ছাড়লে ভাল হবে না।” বয়সে দুজনেই নাবালক। যদি সত্যিই আলাদা করে দেয় বাড়ি থেকে? এদিন সকালে এই যুগলকে হাত ধরে ডাউন রেললাইনের উপর দিয়ে হাঁটতে দেখেন অনেকে। বারবার তাদের বলা সত্ত্বেও কোনও লাভ হয়নি। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, সকালে ডাউন লাইনের উপর দিয়ে হাঁটছিলেন দু’জন।

আচমকাই একটি ট্রেন চলে আসে। চিৎকার জুড়ে দেন সকলে। ট্রেন চালক বারবার হুইসেল দিলেও যুগলকে নড়ানো যায়নি। চলন্ত ট্রেনের সামনে ভ্রুক্ষেপহীন ছিল দু’জন। ট্রেন চলে যাওয়ার পর দেখা যায় লাইনে পড়ে আছে দু’জন। সঙ্গে সঙ্গে ছুটে আসেন আরপিএফ-এর কর্মীরা। দেহদু’টি উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা তাদের মৃত বলে ঘোষণা করেন। ঘটনায় ভেঙে পড়েছে দুই পরিবার। মেয়েটির মা জানিয়েছেন, “আমার মেয়ে তাপসকে ভালবাসত। সেই নিয়ে রবিবার বাড়িতে বকাঝকা করেছি। কিন্তু তার জন্য এমন কাণ্ড ঘটাবে ভাবতেও পারছি না।” খবর- সংবাদ প্রতিদিনের

ad

পাঠকের মতামত