184930

বাস্তবে কেমন খলনায়িকা রিনা খান?

ঢাকাই চলচ্চিত্রে আশির দশকের শুরুতে ঢাকাই চলচ্চিত্রে আগমন সুভাষ দত্তের ‘সোহাগ মিলান’ চলচ্চিত্রের মাধ্যমে চলচ্চিত্রে আসেন জনপ্রিয় খলনায়িকা রিনা খান।

এর পর একে একে অভিনয় করে গেছেন ৬০০ চলচ্চিত্রে। বাংলা চলচ্চিত্রের খলনায়িকা হিসেবে পরিচিত হলেও অভিনয় করেছেন নায়িকা হিসেবেও।

কেমন আছেন দিন কাল কেমন চলছে জানতে চাইলে জবাবে তিনি বলেন, সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্র থেকে ফিরলাম। ফিরেই হাতে কতগুলো কাজ ছিল। সেগুলো শেষ করলাম। কাশেম মণ্ডলের একটা ছবি ছিল, সেটার ডাবিং শেষ হলো।

মুস্তাফিজুর রহমান বাবু’র ছবিও ছিল সেটা শেষ। এখন একটু ফ্রি আছি। বাসায় ছোট ছেলের বৌ আর আমি, সারাদিন গল্প গুজব করে সময় কাটাচ্ছি।

১৯৮২ সালে সুভাষ দত্তের ‘সোহাগ মিলান’ চলচ্চিত্রের মাধ্যমে ঢাকাই ছবিতে পা রাখেন। সুভাষ দত্তের প্রতি দারুণ কৃতজ্ঞ এই অভিনেত্রী। রিনা খান বলেন, আসলে দাদা যখন আমাকে নিয়ে এলেন আমি একদম নতুন, ক্যামেরার সামনে যে আমার কাজ সেটাওতেও নার্ভাসনেস কাজ করছিল। ধীরে ধীরে সেটা কাটিয়ে উঠলাম।

এইতো আজ পর্যন্ত ৬০০ ছবিতে কাজ করে ফেললাম। ৬০০ ছবিতেই কি খল চরিত্রে অভিনয় করেছেন? রিনা খান বলেন, আসলে আমার অধিকাংশ চলচ্চিত্রের কাজ ছিল খল অভিনেত্রী হিসেবে।

এই ৬০০ এর মধ্যে অন্তত ৫০টি ছবিতে পজেটিভ চরিত্রে কাজ করেছি। এর মধ্যে নায়িকার ভূমিকাতেও অভিনয় করেছি বেশ কয়েকটি সিনেমায়। প্রেম যমুনা, মেঘ বিজলি বাদল এমনকী বুলবুল আহমেদের মহানায়ক ছবিতেও আমি সহ নায়িকার ভূমিকায় অভিনয় করেছি।

বাহ! নায়িকা থেকে ভিলেন বেশ ভাল। রিনা খান হেসে ওঠেন। বলেন, আমার বিয়েও তো হয়েছে নায়কের সাথে। তাই নাকি? বিস্ময়ের সাথে তাই নাকি উচ্চারণে অবশ্য একটু মর্মাহত হন রিনা খান। পরে অবশ্য হেসে গর্বের বলেন, আমার স্বামী নায়ক।

রিনা খানের স্বামী আলতাফ হোসেন কাজল বেশকিছু চরিত্রে নায়ক চরিত্রে অভিনয়। করেন। বর্তমান প্রজন্ম না চেনারই কথা। এমনটাই অনুমান রিনা খানের। আলতাফ হোসেন কাজলের বিপরীতে অভিনয় করেছেন ববিতা, কবিতা, রোজিনারা।

আপনি দুটি ছবির কথা বলেন, যেটা আপনার মনে থেকেছে, মনে দাগ কেটেছে। রিনা খান বলেন, সবার আগেই আমার মনে চলে আসে যে ছবিটির নাম সেটা হলো দেবাশীষ বিশ্বাসের শ্বশুরবাড়ি জিন্দাবাদ।

এটা মনে থাকার কারণ হলো আমি চলচ্চিত্র থেকে বিদায় নিয়েছিলাম। কাট পিস আর বাংলা চলচ্চিত্রে ক্রমাগত নোংরামিতে বাধ্য হয়ে চলচ্চিত্র থেকে সরে দাঁড়াই।

এর তিন বছর পরে অফার পাই দেবাশীষ বিশ্বাসের ছবির। গল্পটিও আমার বেশ ভাল লেগে যায়। আর চলচ্চিত্রে ফিরে আসা এটা একটা কারণ। তারেক শিকদার পরিচালনায় বিদ্যা সিনহা মিম ও আঁচলের একটা ছবিতে কাজ করেছি। মুক্তি পায় নি। ছবির নাম ‘দাগ।’ এখানে অন্যরকম মায়ের চরিত্রে অভিনয় করেছি। অন্যরকম বলতে ওয়েস্টার্ন কালচারের মা। বেশ ভাল লেগেছে।

আপনি পর্দার চরিত্রের রিনা খান আর বাস্তবের রিনা খানের মধ্যে পার্থক্য করেন। আমার কথার জবাবে রিনা খান বলেন, আমার চরিত্র সম্পর্কে আমি কি বলবো? আমার যারা আশেপাশে থাকে তারাই বলতে পারবেন আসলে আমি বাস্তবে কেমন। তবে এখন পর্যন্ত তো আমাকে বাস্তবে কেউ খারাপ বলে নি।

তাছাড়াও আমার ভেতরে মায়ার যে আস্তরন রয়েছে সেটাও আমি ফিল করি। রেগে যাওয়ার বিষয়ে যদি বলেন, তাহলে বলবো আমি অকারণে রাগ হই না। আর প্রয়োজন হলে তো রাগ হতেই হবে।

রিনা খানকে আমি বললাম, আমি কিন্তু আপনাকে পর্দার রিনা খানের সাথে মেলাতে পারলাম না। কেন না আপনি প্রতিটা বাক্যের শেষেই হেসে উঠছেন, পর্দার রিনা খান কিন্তু এমন নয়। এ কথার সাথে সাথে ফের হেসে ওঠেন এই অভিনেত্রী।

ad

পাঠকের মতামত