184889

কুমিল্লাকে লজ্জা দিয়ে ঢাকার টানা দ্বিতীয় ফাইনাল

যে উইকেটে রানে পাগলা ঘোড়া ছুটিয়ে দিলেন ঢাকার ব্যাটসম্যানরা, সেই উইকেটে যেন ব্যাটিং করতে ভুলে গেল তামিম ইকবালের দল! সাকিব-আফ্রিদি-মোসাদ্দেকদের ঘূর্ণি আক্রমণের সামনে একমাত্র তামিম ইকবাল লড়াই করার চেষ্টা করলেন। আশ্চর্য হলেও সত্য যে কুমিল্লার ৮ ব্যাটসম্যান দুই অংকেই পৌঁছতে পারেননি! ৩ উইকেট নিলেন শহীদ আফ্রিদি, আর দুটি করে নিলেন সাকিব-মোসাদ্দেক।

এতেই ৯৬ রানে অল-আউট হল কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানস।
যতটা প্রতিদ্বন্দ্বিতা আশা করা হয়েছিল তার কিছুই হলো না। বন্ধু তামিম ইকবালের দলকে ৯৫ রানের বড় ব্যবধানে হারিয়ে ফাইনালে পৌঁছে গেল সাকিব আল হাসানের দল। কুমিল্লারও ফাইনালে যাওয়ার সুযোগ আছে। তবে এজন্য দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারে হারাতে হবে রংপুর রাইডার্সকে। খুলনা টাইটানসের বিপক্ষে গেইল তাণ্ডবে আজ যে বিশাল জয় তুলে নিল রংপুর, তাতে কুমিল্লার সামনে আরেকটি কঠিন পরীক্ষা অপেক্ষা করছে।

মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ১৯২ রানের বিশাল টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে দলীয় ১ রানেই প্রথম উইকেট হারায় কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানস। অল-রাউন্ডার মোসাদ্দেক হোসেনের বলে কট অ্যান্ড বোল্ড হয়ে যান লিটন দাস (০)। জস বাটলার ব্যর্থতার ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখেন আজও।

সাকিব আল হাসানের বলে বোল্ড হওয়ার আগে করেন মাত্র ৫ রান।
এরপর নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারাতে থাকে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানস। মোসাদ্দেকের দ্বিতীয় শিকার হন ইমরুল কায়েস (৯)। ক্যারিবীয় হার্ডহিটার মারলন স্যামুয়েলসও দুই অংকে যেতে পারেননি। আবু হায়দার রনির বলে ক্যাচ দেওয়ার আগে করেছেন ৬ রান। একপ্রান্ত আগলে ব্যাট করছিলেন অধিনায়ক তামিম ইকবাল। ২৮ বলে ৩৩ রান করা তামিমকে জহুরুল ইসলামের গ্লাভসবন্দি করলেন শহীদ আফ্রিদি।

ম্যাচ শেষ হওয়ার আগেই তাই ঢাকা ডায়নামাইটসের ফাইনাল নিশ্চিত হয়ে যায়। শহীদ আফ্রিদির বলে কোনো রান না করেই প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন ডিজে ব্র্যাভো। অল-রাউন্ডার মোহাম্মদ সাইফ উদ্দিনও কোনো রান না করেই রান-আউট হন। দলীয় ৭১ রানে শোয়েব মালিককে ঢাকা অধিনায়ক সাকিব প্যাভিলিয়নে পাঠালে ৮ম উইকেট হারায় কুমিল্লা। শেষের দিকে প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টা করেন হাসান আলী (১৮) এবং মেহেদী হাসান (১৫)। কিন্তু এই প্রতিরোধ কোনো কাজে দেয়নি। আল-আমিনকে আউট করে শেষ পেরেকটা ঠুকে দেন শহীদ আফ্রিদি। ৯৫ রানের বিশাল জয়ে ফাইনাল নিশ্চিত করে ঢাকা।

এর আগে প্রথম কোয়ালিফায়ার ম্যাচে টসে জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৭ উইকেটে ১৯১ রান তোলে ঢাকা ডায়নামাইটস। দলীয় ১১ রানেই হাসান আলীর বলে ক্যাচ দেন মেহেদী মারুফ (৬)। তবে এরপরই ঘুরে দাঁড়ায় ঢাকা। জো ড্যানলিকে সঙ্গী করে ব্যাটিং তাণ্ডব শুরু করেন এভিন লুইস। ৩২ বলে ৬ চার ৩ ছক্কায় ৪৭ রান করে লুইস শোয়েব মালিকের বলে বোল্ড হয়ে যান। ভাঙে ৬৯ রানের দারুণ এক জুটি।

জো ড্যানলিও ২৫ বলে ৩২ রানের ঝড়ো এক ইনিংস খেলে রান-আউট হয়ে যান। কায়রন পোলার্ড বড় ইনিংসের সম্ভাবনা জাগিয়েছিলেন। কিন্তু ১৮ বলে ৩২ রানের ছোট এক ঝড় তুলে ব্র্যাভোর বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন। ব্র্যাভোর দ্বিতীয় শিকার হন অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। ৮ বলে ৯ রান করা সাকিবও ক্যাচ দেন লিটন দাসের কাছে। ৩ রান করা মোসাদ্দেক হাসান আলীর দ্বিতীয় শিকার হন।

বিপদে পড়া ঢাকা শহীদ আফ্রিদির ব্যাটে স্বপ্ন দেখছিল। ৪টি দুর্দান্ত ছক্কাও হাঁকালেন। সবাই যখন ভাবছিল দিনের প্রথম খেলায় গেইলের মত ছক্কা বৃষ্টির কথা, ঠিক তখনই ১৯ বলে ৩০ রান করা আফ্রিদিকে তৃতীয় শিকারে পরিণত করলেন হাসান আলী। শেষ পর্যন্ত নির্ধারিত ২০ ওভারে ঢাকার সংগ্রহ দাঁড়ায় ৭ উইকেটে ১৯১ রান।

ad

পাঠকের মতামত