184714

সন্তানের কথা ভেবে শাকিব খানকে সংযত হওয়ার আহ্বান সহকর্মীদের

দেশীয় চলচ্চিত্রাঙ্গণের চলমান ‘হট ইস্যু’ এখন তারকাদম্পতি শাকিব খান এবং অপু বিশ্বাসের বিচ্ছেদের খবর। যদিও শাকিব খানের তালাকনামা পাঠানোর খবর চাউর হয় গত ৪ ডিসেম্বর। কিন্তু স্তিমিত হওয়ার পরিবর্তে বিষয়টি যেন জলঘোলা এবং কাদা ছোড়া-ছুড়ির পাশাপাশি ক্রমশ যেন উত্তপ্ত হয়ে উঠছে চিত্রপুরী। ফেসবুকেও যে যার মতো যাচ্ছেতাই রসালো মন্তব্য এবং অশ্লীল এবং কু-রুচিপূর্ণ পোস্ট দিয়ে শাকিব খানের প্রতি রাগও ঝাড়ছেন চলচ্চিত্রপ্রেমী অনেক দর্শক এবং কলাকুশলীরা। অন্যদিকে সাংবাদিকদের কাছে কয়েকদিন সময় চেয়ে সবকিছু খুলে বলার আশ্বাস দিয়েও ফেসবুক এবং মিডিয়ায় একের পর এক ‘বোমা বিস্ফোরণ’ অপু বিশ্বাস। বেরিয়ে আসছে নানান রকম অবিশাস্য তথ্য-উপাত্ত। আর মিডিয়াও তারসঙ্গে আরও খানিকটা রস সংযুক্ত করে এক ধরনের বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে। সবমিলিয়ে দেশীয় সিনেমা যেন সাধারণ জনগণের কাছে আবারও ‘ছি. . .নেমা’ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হচ্ছে।

বিষয়টি নিয়ে চলচ্চিত্রের সিনিয়র নেতারা এবং বড় বড় সংগঠনগুলোরও কোনো ভূমিকা দেখা যাচ্ছে না। এমনকি খোদ শিল্পী সমিতিও এটাকে শাকিব-অপুর একান্ত ব্যক্তিগত বিষয় উল্লেখ করে নীরব ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে। যদিও ব্যক্তিগতভাবে বিব্রত এবং ব্যথিত হয়ে চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্ট অনেকেই এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছেন। শিল্পী সমিতির সাবেক সভাপতির এমন আচরণ এবং সিদ্ধান্তকে জঘন্য বলে মন্তব্য করছেন তার সহকর্মীরা। বিশেষ করে অবুঝ সন্তানের মানসিক বিকাশ এবং ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে শাকিব খানকে সংযত হয়ে অতি দ্রুত সমঝোতায় আসার আহ্বান জানাচ্ছেন তারা।

চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির বর্তমান সভাপতি মিশা সওদাগর বলেন, ‘ব্যক্তিগত বিষয়ে কোনো মন্তব্য না করে আমি শুধু এটুকুই বলবো, তাদের উচিত ছিল আমাদের ইন্ডাস্ট্রির কথা ভাবা। আমাদের ইন্ডাস্ট্রি এমনিতেই সংকটাপন্ন অবস্থা বিরাজ করছে। এই পরিবেশে শাকিব-অপুর মতো দেশের শীর্ষ তারকার এরকম পরিস্থিতিতে ইন্ডাস্ট্রির প্রতি মানুষের ভক্তি শ্রদ্ধা আরও একদফা নিচে নেমে গেলো। জানি না, তারা আসলে কি ভাবছেন। তবে এই অবস্থার অতি দ্রুত সুরাহা জরুরি।

শিল্পী সমিতির আরেক নেত্রী অভিনেত্রী মৌসুমী অপু বিশ্বাসের প্রতি একটু ক্ষোভ নিয়ে বলেন, শাকিব তার সন্তানকে স্বীকার করেছে। অপুর উচিত ছিল অন্য সবকিছু বাদ দিয়ে এই সংসারটা আগে গোছানো। আমি যতদূর শুনেছি বা দেখেছি অপুর কোনো চেষ্টা ছিল না। শাকিবও তার মতো চলেছে। যার জন্য আজকের এই অবস্থা। ডিভোর্স লেটার সবে পাঠিয়েছে, আশা করবো, এমন কিছু যেন না হয়।

চিত্রনায়িকা পপি বলেন, আমি এই সিদ্ধান্ত মানতে পারছি না। অপু ভালোবেসে শাকিবকে বিয়ে করেছে, ধর্ম ত্যাগ করেছে। তাদের ঘরে এক বছরের একটি ছেলে আছে। এ সময় ডিভোর্স হওয়া মানে ছেলেটি তার মা-বাবার সান্নিধ্য হারাবে।

চিত্রনায়ক রিয়াজ বলেন, অপু-শাকিবের বিষয়টি যেটা ঘটেছে সম্পূর্ণ ভুল বোঝাবুঝি থেকেই ঘটেছে বলে আমি মনে করি। দু-বছরের বোঝাপড়ায় তারা বিয়ে করে। তারপর ৮বছর সংসারও করে। এখন কোলজুড়ে একটা সন্তানও হয়েছে। আমরা এখন ডিজিটাল যুগে আছি, আমাদের মন-মানসিকতায় পরিবর্তন এসেছে। এই যুগে এমন করে সংসার ভেঙে যাওয়ার খবর মেনে নিতে পারবো না।

বিচ্ছেদের ঘটনায় কিছুটা বিস্ময় প্রকাশ করে অভিনেত্রী শাবনূর বলেন, সিনেমার মতো শাকিব-অপুকে বাস্তবেও হাসি-খুশি দেখবো আশা করেছিলাম। এখন তালাকনামার খবর শুনে কেমন যেন লাগছে। তাছাড়া জয়ের মতো এত কিউট একটা সন্তান হওয়ার পরেও কেন এমন ভাঙনের সুর বাজছে, হিসাব মেলাতে পারছি না। অন্তত সন্তানের কথা চিন্তা করে হলেও এ ধরণের সিদ্ধান্ত থেকে ফিরে আসা উচিৎ।’

চিত্রনায়িকা পূর্ণিমা বলেন, বিষয়টি অত্যন্ত দুঃখজনক। শাকিবের নিজের মূল্যটা বোঝা উচিত ছিল। একই কথা অপুর ক্ষেত্রেও, আমাদের নায়িকাদের মধ্যে আধিপত্য ছিল তার। তাদের ভুলের খেসারত দিতে হবে এখন পুরো চলচ্চিত্র অঙ্গনকে। বাচ্চা ছেলেটার দিকে তাকিয়েও ওদের এমন করা উচিত নয়।

চিত্রনায়িকা নিপুণ বললেন, আমি চাই বুঝতে পারছি না, শাকিব খান একের পর এক এসব কি করে বেড়াচ্ছে! আমি চাই, দুজন আরেকবার দুজনকে বোঝার চেষ্টা করুক। কারণ এখন জীবন মানে আর শাকিব-অপু নয়, তাদের বাইরে তাদের সন্তান জয় আছে। এমন একটি বাচ্চাকে শাকিব কী করে ভুলে যেতে চায়!

ad

পাঠকের মতামত